ঝড়-তুফানের সময় রাসূলুল্লাহ সা. যেসব আমল করতেন

  • ইসলাম ডেস্ক
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঝড়-তুফানের সময় রাসূলুল্লাহ সা. যেসব আমল করতেন, ছবি: সংগৃহীত

ঝড়-তুফানের সময় রাসূলুল্লাহ সা. যেসব আমল করতেন, ছবি: সংগৃহীত

ঝড়-তুফানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিচলিত হয়ে পড়তেন। আল্লাহতায়ালার শাস্তির ভয় করতেন। বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে তা করার নির্দেশ দিতেন। ঝড়-তুফান শুরু হলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে চলে যেতেন। নফল নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে উপকূলে। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি আমাদেরও এ আমলগুলোর প্রতি যত্মবান হতে হবে। বিশেষত অতীতের সব গোনাহ ও ভুলের জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার, নফল নামাজ ও সেজদায় পড়ে ক্রন্দন করে ক্ষমা প্রার্থনা, নফল রোজা, সূরা ফাতেহা পাঠ, দরূদ শরিফ পাঠ, কোরআনে কারিম তেলাওয়াত, দোয়ায়ে ইউনূছ প্রভৃতি পাঠ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সেই সঙ্গে এই দোয়াগুলো পাঠ করা যেতে পারে-
দোয়া: ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফ লি খাইরাম মিনহা।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, যখন প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া শুরু হতো তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এ দোয়া পড়তেন-

বিজ্ঞাপন

দোয়া: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি; ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়াশাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কয়েকটি দোয়া শিখিয়েছেন। সেগুলোও পাঠ করা যেতে পারে।

জোরে বাতাস প্রবাহিত হলে পড়তে হবে-
দোয়া: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণটাই কামনা করি এবং আপনার নিকট এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই। -আবু দাউদ: ৪/৩২৬

মেঘের গর্জন হলে যে দোয়া পড়তে হবে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং পবিত্র কোরআনের এই আয়াত তিলাওয়াত করতেন-
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি।

অর্থ: পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা, তার প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে সঙ্গে সঙ্গে এই দোয়া করতেন-

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা তাক্বতুলনা, বিগাজাবিকা ওয়া লা তুহলিকনা বিআজাবিকা, ওয়া আফিনা ক্বাবলা জালিকা।

অর্থ: হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে তোমার ক্রোধের কারণে মেরে ফেলো না আর তোমার আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না। বরং এর আগেই আমাদেরকে ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নাও। -সুনানে তিরমিজি

ঝড় বা বাতাস থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়তে হবে-
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির-রিহি ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এর কল্যাণ, এর মধ্যকার কল্যাণ এবং যা এর সঙ্গে প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই এর অনিষ্ট থেকে, এর ভেতরে নিহিত অনিষ্ট থেকে এবং যা এর সঙ্গে প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে। -সহিহ বোখারি: ৪/৭৬

আল্লাহতায়ালা আমাদের সব গোনাহ ক্ষমা করে ঘূর্ণিঝড় ফণীসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ রাখুন। আমিন।