ঠাণ্ডার সমস্যায় যা খাওয়া প্রয়োজন
সচেতন থাকার পরেও হুটহাট ঠাণ্ডার উপসর্গ ও ঠাণ্ডা জ্বর দেখা দিচ্ছে অনেকের।
আবহাওয়ার তারতম্য ও তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে সময় নেয়। ফলে কাশি, হাঁচি, গলাব্যথা কিংবা সর্দির মতো বিরক্তকর সমস্যাগুলো দেখা দেয়। এমন ঠাণ্ডার সমস্যা সহ্য করা কষ্টকর হলেও ঘরে বসে থাকাও সম্ভব হয় না। স্বল্প সময়ের মাঝে ঠাণ্ডার উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে চাইলে খাদ্যাভাসে রাখতে হবে কয়েকটি বাড়তি খাবার।
ব্রকলি
ক্রুসিফেরাস গোত্রের সবজি, যেমন: ব্রকলি, ফুলকপি, বকচয়, কেইল প্রভৃতি থেকে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়। তবে সকল সবজির ভেতর ব্রকলির উপকারিতা আলাদাভাবে উল্লেখ করার মতো বলে জানান নিউট্রশন স্পেশালিষ্ট স্কট শেরিনবার। এতে থাকা ভিটামিন-ই, ফাইটোকেমিক্যাল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ঠাণ্ডার সমস্যা ও ভাইরাল জ্বরের বিরুদ্ধে খুব চমৎকার কাজ করে। তিনি পরামর্শ দেন পুরো শীতকাল জুড়ে যখনই সম্ভব হবে এই সবজিটি খাওয়ার জন্য।
বিভিন্ন ধরণের বাদাম
স্বাস্থ্যকর ডায়েটারি প্রোটিন ও এসেনশিয়াল ফ্যাট সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরণের বাদাম খাদ্য তালিকায় রাখলে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে চিন্তায় পড়তে হবে না। ডায়েটেশিয়ান ও নিউট্রিশনিস্ট রজার ই. অ্যাডামস জানান, বাদামের এসেনশিয়াল ফ্যাট ত্বক ও মিউকাস মেম্ব্রেনসকে সুস্থ রাখে, যা রোগজীবাণু আক্রমণ হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়া বাদামে থাকা উচ্চমাত্রার সেলেনিয়াম, ভিটামিন-ডি, জিংক ও কপার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
দই
ঠাণ্ডার সমস্যায় দই অন্যতম উপকারি একটি খাবার। অ্যাডামস জানান, এতে থাকা প্রোটিন শরীরের ডিফেনস মেকানিজমকে দৃঢ় করা। অন্যদিকে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাদ্য দইয়ে থাকা ‘ভালো ব্যাকটেরিয়া’ পাকস্থলী সুস্থ রাখার পাশাপাশি ঠাণ্ডার সমস্যা কমাতে কার্যকর। অ্যাডামস আরো জানান, ঠাণ্ডার সমস্যার সঙ্গে ভিটামিন-ডি এর সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু দই থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়, ঠাণ্ডার সমস্যা কমাতে দই উপকারী।
পাকা কলা
খাদ্য আঁশ, ভিটামিন-বি৬ ও পটাশিয়ামে ভরপুর মিষ্টি ঘরানার এই ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। গবেষণার ফল থেকে দেখা যায়, কলাতে থাকা ইলেক্ট্রলাইট শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর। ঠাণ্ডার সমস্যাজনিত কারণে দুর্বলতা দেখা দিলে এই ফলটি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
আদা
ঠাণ্ডার সমস্যায় আদার উপকারিতা ও ব্যবহার নিয়ে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। স্কট শেরিনবার জানান, আদাতে থাকা অ্যাকটিভ উপাদান জিনজেরল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান হিসেবে পরিচিত। যা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় আরাম প্রদান করে ও সমস্যা দ্রুত কমায়।
তৈলাক্ত মাছ
জার্নাল অফ লিউকোসাইট বায়োলজিতে প্রকাশিত একটি পরীক্ষার ফলাফল থেকে জানা যায়, তৈলাক্ত মাছে থাকা ডিএইচএ সমৃদ্ধ ফিশ অয়েল রক্তের শ্বেতরক্ত কণিকা বৃদ্ধি করে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃঢ় করে। তৈলাক্ত মাছের তেলে আরো থাকে হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী মনো এন্ড পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা ঠাণ্ডার সমস্যাকে দমিয়ে ফেলে।
এছাড়াও ঠাণ্ডার সমস্যা প্রতিরোধ করতে ও কমাতে চাইলে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, একটি ডিম ও ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
আরো পড়ুন: যে খাবারগুলো গরম করতে মানা
আরো পড়ুন: এই শীতে ডায়বেটিস থাকুক নিয়ন্ত্রণে