মস্তিষ্কের সুস্থতায় প্রয়োজন যে খাবারগুলো!
ত্বক কিংবা চুলের জন্য উপকারী খাদ্যের বিষয়ে জানা যতটা না জরুরি, তার চাইতে বহুগুণ বেশি জরুরি ব্রেইনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক খাদ্যের বিষয়ে জানা। হরহামেশাই আমরা যে সকল সহজলভ্য খাদ্য উপাদান গ্রহণ করছি, তার মাঝেই রয়েছে ব্রেইনের জন্য উপকারী নানান খাদ্য।
শিশুদের বুদ্ধির বিকাশে, প্রাপ্তবয়স্কদের ব্রেইনের কর্মক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে ও স্নায়ুর ক্ষয় ধীর করতে সাহায্যকারী এই খাদ্য উপাদানগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিৎ সকলের।
জেনে নিন চমৎকার গুণাগুণ বিশিষ্ট এমন ছয়টি খাবারের তালিকা।
গাজর
আমাদের রক্তপ্রবাহে ভেসে বেড়ায় ফ্রি-রেডিক্যাল নামক এক ধরণের পদার্থ। যা ব্রেইনের কোষে প্রবেশ করে কোষকে ভেঙ্গে ফেলে। যার ফলাফল স্বরূপ অল্প বয়সেই স্মৃতিশক্তি জনিত সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই সকল ফ্রি-রেডিক্যালের সাথে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মিশে গেলে তার ক্ষতিকর প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়। গাজরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে গাজর মস্তিষ্কের ক্ষতি প্রতিরোধে সাহায্য করে বলে জানা যায় ২০০০ সালের একটি গবেষণা থেকে।
ডার্ক চকলেট
বিশুদ্ধ কোকোয়া সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেটে থাকে উচ্চ মাত্রার ফ্ল্যাভনয়েড। বেশ কয়েকটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে ব্রেইনের কার্যকারিতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই উপাদান দারুন ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এছাড়াও স্মরণশক্তি বাড়াতে, হতাশাভাব ও মানসিক কমাতে কাজ করে ফ্ল্যাভনয়েড।
আরো পড়ুন: ডার্ক চকলেট খেতে পারবেন নিশ্চিন্তে!
ডিম
অন্যতম সুপার ফুডকে এই তালিকার মাঝে দেখাটাই যেন স্বাভাবিক। প্রায় ২২ বছরের একটি দীর্ঘ গবেষণার ফল থেকে দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন একটি করে ডিম খেয়েছেন তাদের ডিমেনশিয়া অথবা আলঝেইমার দেখা দেওয়ার সম্ভবনা অবিশ্বাস্য রকম কম। অন্যদিকে যারা ডিম নিয়মিত গ্রহণ করেননি, তাদের ফলাফলও এসেছে অনুরূপ। এছাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল দেখিয়েছে যারা নিয়মিত ডিম খেয়েছেন তারাই।
ব্রকলি
ক্যাবেজ প্রজাতির সবজি ব্রকলিতে আছে সালফরাফেন (Sulforaphane). এই উপাদানটি মস্তিষ্কের নার্ভের টিস্যুকে পুনর্গঠিত করে। এই সবজিতে আরো আছে ভিটামিন-কে। যা বৃদ্ধিবৃত্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
আরো পড়ুন: সুস্বাস্থ্যের জন্য আঁশযুক্ত এই খাবারগুলো খেতে হবে প্রতিদিন
হলুদ
কিছু বিজ্ঞানী উপকারি এই প্রাকৃতিক উপাদানের নাম দিয়েছে ‘বিস্ময়কর মশলা’। কারণ এই মশলাতে আছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। অন্যান্য সকল স্বাস্থ্য উপকারিতার ভেতর ব্রেইনের উপকারিতা লক্ষণীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালের একটি গবেষণা সুপারিশ করেছে, ‘ক্ষতিগ্রস্থ মস্তিষ্ক’কে পুনর্গঠনে ও নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারের প্রভাব কমাতে হলুদ চমৎকার কাজ করে। একই সালের অন্য আরেকটি গবেষণা জানিয়েছে, বিষাক্ত ফ্লোরাইডের ক্ষতিকর ও নেতিবাচক প্রভাব কমাতে ও কোন কোন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নির্মূল করতেও কাজ করে হলুদ।
চা
এই তালিকার ভেতর এই পানীয়ের নাম অবাক করে দেওয়ার মতোই। তবে বিজ্ঞানীরা ভাবেন ভিন্ন কিছু। উষ্ণ এই পানীয়টি মস্তিষ্কের জন্য উপরোক্ত খাদ্য উপাদানগুলোর মতোই উপকারী। চায়ে থাকে ক্যাফেইন, যা মগজের কর্মদক্ষতা বাড়ায়। এছাড়া ২০০৮ সালের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে চা থেকে অ্যামিনো এসিড ও এল-থ্যানাইন পাওয়া যায়। যা স্নায়ুকে রিল্যাক্স করে ও ক্লান্তিভাব দূর করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।