গৌরীপুর রেল জংশন যেন গোচারণ ভূমি!
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন। এলাকাবাসী রেললাইন ও এর আশপাশ এলাকায় গরু বেঁধে রাখেন। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জংশনের বেশ কয়েকটি জায়গায় রেল লাইনের পাশে গরু বাঁধা। কোথাও কোথাও স্লিপারেই গরু বেঁধে রেখেছেন অনেকে। কোথাও দুই রেললাইনে মাঝে গরু চড়ছে। ফলে ট্রেনের হুইসেল শুনেই ছোটাছুটি শুরু করে গরুগুলো। আর দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেন আসার সাথে সাথে গরুর মালিক দৌঁড়ে এসে রশি টেনে গরুকে রেললাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নেন।
রেলওয়ে সূত্র জানা গেছে, আইন অনুযায়ী রেললাইনের দু’পাশে ১০ ফুট করে এলাকার মধ্যে রেলের কর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষ বা গবাদিপশু প্রবেশ নিষিদ্ধ। ওই এলাকায় সব সময়ই ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ওই সীমানার ভেতর কাউকে পাওয়া গেলে আইনের ১০১ ধারায় তাকে গ্রেফতার করা যায়। কিন্তু এই আইন মানা হচ্ছে না গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে।
আরও জানা গেছে, গৌরীপুর জংশন হয়ে প্রতিদিন তিনটি রুটে আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ও লোকাল ট্রেনসহ ৩২টি ট্রেন আসা যাওয়া করে। ফলে ট্রেন লাইনে গরু বাঁধা রাখায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বুধবার (০২ অক্টোবর) বিকালে রেলওয়ে জংশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের উত্তর-দক্ষিণ পাশে আউটার সিগন্যাল এলাকায় প্রায় ২০টি গরু বাঁধা। বিকাল ৫টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জারিয়াগামী ট্রেনটি স্টেশনের দুই নং লাইনে প্রবেশ করতেই রেললাইনের পাশে বাঁধা গরুগুলো ছোটাছুটি শুরু করে। দূর থেকে ট্রেন দেখে দৌঁড়ে এসে নিজের একটি গাভীর রশি টেনে ধরেন গরুর মালিক নূর কাশেম।
নূর কাশেম জানান, রেললাইনের পাশে ঘাস থাকে বলে গরু বেঁধে রাখা হয়। কিন্তু কখনও কেউ তাদের নিষেধ করেনি। তবে ট্রেন আসলেই তারা গরু সরিয়ে নেন।
স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, প্ল্যাটফর্মের মসজিদের সামনে ৩ নং লাইনের পাশে রশি দিয়ে বাঁধা লাল রঙের একটি গরু। বিকাল ৫টার নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি হুইসেল বাজিয়ে গৌরীপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে গরুটি আতঙ্কে ছুটাছুটি শুরু করে। এসময় ট্রেনে উঠতে গিয়ে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। তবে তখন গরুর মালিককে পাওয়া যায়নি।
গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, রেল আইনের প্রয়োগ না থাকায় স্টেশন এলাকায় অবাধে গরু চড়ানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় আইন অমান্য করে পথচারীরাও রেললাইনের ওপর বসে থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘স্টেশনের এলাকার উত্তরে রেললাইনের পাশে স্থানীয়রা অনেক সময় গরু বেঁধে রাখেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’