রাজবাড়ীর সেই বেদে পল্লীতে খাবার নিয়ে গেলেন ইউএনও

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বেদে পল্লীতে খাবার নিয়ে গেলেন ইউএনও/ছবি: বার্তা২৪.কম

বেদে পল্লীতে খাবার নিয়ে গেলেন ইউএনও/ছবি: বার্তা২৪.কম

খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে থাকা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুরের বেদে পল্লীতে নিজেই খাবার নিয়ে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম। এ সময় বেদে পল্লীর বাসিন্দা নয় মাসের গর্ভবতী নারী মেঘনী এবং নবজাতক শিশু রবি (৬ দিন) ও তার মা সুফিরুনের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন।

শনিবার (২৮মার্চ) সকালে “করোনা: রাজবাড়ীতে বেদে পল্লীর খোঁজ নিচ্ছেন না কেউ” শিরোনামে একটি সংবাদ তৈরি করার জন্য বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মন্তব্য নেওয়ার সময়ই তিনি ঘোষণা দেন- এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং খুব দ্রুতই বেদে পল্লীতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

তারপরই উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজ উদ্যোগে বালিয়াকান্দি উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের অর্থায়নে বেদে পল্লীর ৯টি পরিবারের প্রায় ৭০-৮০ জন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা, জামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস আলী সরদার ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন: করোনা: রাজবাড়ীতে বেদে পল্লীর খোঁজ নিচ্ছেন না কেউ

বিজ্ঞাপন

বেদে পল্লীতে ইউএনও ১০০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, ৩৫ কেজি আলু ও প্রত্যেককে ডেটল সাবান প্রদান করেন। তাছাড়া নবজাতক শিশুকে চারটি সাবান ও একটি তোয়ালে উপহার তুলে দেন তার মায়ের হাতে। এছাড়া গর্ভবতী নারী ও নবজাতক শিশু ও তার মায়ের নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য অত্র ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মীকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

বেদেদের দলনেতা মো. শারু মিয়া (৭০) বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে কাজ করে যা আয় করি তাই দিয়েই বেঁচে থাকি। যেদিন গ্রামে যেতে পারি না সেদিন আমাদের চুলার আগুন জ্বলে না। কিন্তু বর্তমানে সরকার নির্দেশ দিয়েছেন ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। তাই আমরা সরকারের নির্দেশের প্রতি সম্মান রেখে কেউ পল্লীর বাইরে যাচ্ছি না।

ফলে আমরা কয়েকদিন ধরেই কষ্টে ছিলাম। কিন্তু একজন সাংবাদিকের জন্য ইউএনও স্যার নিজে আমাদের মাঝে এসে খাবার দিয়ে গেছেন। আমরা এতে বেশ খুশি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমরা বেশ কয়েকদিন ভালোই থাকতে পারব।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বেদেদের কষ্টের কথা শোনার পরই আমি আমার উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানালে তারা স্বেচ্ছায় উৎসাহিত হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। যার ফলে আমি খুব দ্রুতই বেদে পল্লীতে খাবার পৌঁছে দিতে পেরেছি।

আর নবজাতক শিশু ও তার মা এবং গর্ভবতী ঐ নারীর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে বলে এসেছি। তিনি নিয়মিত তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর রাখবেন। বর্তমান সরকারের আমলে কারো খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে থাকার কোনো সুযোগ নেই।