ডাকসু কর্তৃক ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) কর্তৃক ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকে ক্ষমতা বহির্ভূত, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে এ প্রস্তাবের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় মুক্তমনা শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এসময় ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ডাকসু নির্বাচনকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে বলেন, 'প্রগতিশীলের দাবি করে ডাকসু নেতারা প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ করছেন । একটি আদর্শকে নিষিদ্ধ করে ঢাবি ক্যাম্পাস কখনো গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ক্যাম্পাস, মুক্তমনার অভয়ারণ্য হতে পারে না।'
ধর্মভিত্তিক সংগঠনকে আদর্শ দিয়ে মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জ করে মাহমুদুল হাসান ডাকসু নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি সত্যি প্রগতিশীল দাবি করেন, তবে চ্যালেঞ্জ থাকলো আদর্শিক লড়াই এ ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোকে প্রতিহত করার । তিনি ডাকসু নেতৃবৃন্দকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য ।
এসময় মাহমুদুল চার দফা দাবি পেশ করেন- ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে; প্রকাশিত সকল দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত পরবর্তী সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে; রাজনৈতিক বিবেচনায় সিট প্রদান বন্ধ করে সম্পূর্ণ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের ব্যবস্থা করতে হবে; বিতর্কিত ডাকসু ভেঙে দিয়ে অনতিবিলম্বে পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথাও বলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ বলেন, 'ডাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনার পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে । ছাত্ররা যখন ছাত্রলীগের অব্যাহত নিপীড়ন, নির্যাতন এবং হল দখলের প্রতিবাদে দাবি আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত তখন ছাত্রদের দৃষ্টি অন্যদিকে প্রবাহিত করতে ডাকসুর একটা বিশেষ অংশ এ চক্রান্তে লিপ্ত হন । ৯০% মুসলমানের দেশে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত কখনো মেনে নেওয়া হবে না ।'
জাসদ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নাইম ইসলাম এই অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, 'ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পূর্বে উগ্রবাদী এবং জঙ্গিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত । মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে উগ্রবাদী রাজনীতিতে সব সময় জড়িত দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন গুলোকে । ঢাবি কোন ছিটমহল নয় । মুক্তচিন্তার অভয়ারণ্য হিসেবে ঢাবির যে পরিচিতি সেটা সংরক্ষণ করতে হবে ।
মানববন্ধন শেষে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা । বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয় এ মিছিলে । বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ।