রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহারের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলাকালে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিকে ঢাকায় অবস্থান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ফোনকলের মাধ্যমে তাদের সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) অনশনের এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে দুই নারী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।
অনশন কারী শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য স্যার নিজে এসে আমাদের বরাদ্দকৃত কক্ষে যখন উঠিয়ে দিবেন তখন আমরা এই অনশন থেকে সরে আসবো। তিনি আমাদেরকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের রুমের দখলদারত্ব উৎখাত করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ওয়াহিদুল হাসান বলেন, আমাদের এখানে দুইজন ছাত্রী এসেছে। আসার পরপরই আমি দেখেছি। বিষয়টি বেশী গুরুতর নয়। আমাদের এখানেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, উপাচার্য স্যার কথা বলার পর আমাদের আর কিছু বলার থাকে না। আমি নিজেও তাদের অনুরোধ করছি অবস্থান ছেড়ে দিতে। তারপরও যদি না যায় ওরা তাহলে আমরা নিরাপত্তার দায়িত্বে আছি এবং থাকবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ফোনকলে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সকালে ফার্স্ট প্রায়োরিটি দিয়ে আমি এ বিষয়টি দেখবো। কলা অনুষদের ডিন আসবেন, আমিও থাকবো, সবার সাথে কথা বলে তোমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথমেই উদ্যোগ গ্রহণ করবো। আমি তোমাদের অনুরোধ জানাচ্ছি- আজকে এখন অবস্থান না করে যার যার হলে চলে যেতে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মাদক সেবন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মচারী ও এক দোকানিকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন পুরাতন শামসুন নাহার হলের পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে তাদের আটক করে।
আটককৃতদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার অনুষদের ডিন অফিস ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দুই কর্মচারী ও লেডিস ঝুপড়ির এক দোকানি রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছ থেকে প্রায় এক লিটার মদ, দুই প্যাকেট সিগারেট উদ্ধার করা হয়েছে। পরিত্যক্ত ওই কক্ষে মশার কয়েল জ্বেলে মদ, সিগারেট, বাদাম, চানাচুর ও ছোলাভাজা নিয়ে গোল হয়ে বসেছিলেন আটক তিন ব্যক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন বলেন, চবি প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। শিক্ষার্থী বা কর্মকর্তা-কর্মচারী যেই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাদক গ্রহণ করবে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্ষদ আজকের বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। আগামীকাল আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিবেন।
কাগজে চিত্র শিল্পকে কীভাবে যুগের পর যুগ একই অবস্থায় স্থায়িত্ব দেওয়া যায় এবং বাংলাদেশে সেই সংরক্ষণ ব্যবস্থা কতটুকু জোড়দার করা প্রয়োজন সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন শিল্প সংরক্ষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাচ্য কলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মোঃ জহিরুল ইসলাম।
সোমবার (৪ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে ❝শিল্পকর্ম সংরক্ষণ বিষয়ক সচিত্র উপস্থাপন❞ শীর্ষক সেমিনারে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।
সেমিনারে উপস্থাপক জহিরুল ইসলাম বলেন, শিল্পকর্ম সংরক্ষণ একটি জটিল এবং সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। শিল্পকর্মের নান্দনিক এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য সংরক্ষণ এবং এর অবস্থা স্থিতিশীল করার মধ্যে একটি সতর্ক ভারসাম্য প্রযোজন। প্রতিরোধমূলক সংরক্ষণ, পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং বিশেষ পুনরুদ্ধার কৌশলগুলির মাধ্যমে সংরক্ষণকারীরা কাগজ-ভিত্তিক শিল্পের দীর্ঘায়ুকে হুমকির মুখে ফেলে এমন অনেক ঝুঁকি প্রশমিত করতে পারে। এই পদ্ধতিগুলি প্রযোগ করে, সংরক্ষণকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকর্মগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রশংসা ও অধ্যয়নের জন্য অক্ষত রাখাকে নিশ্চিত করতে পারে।
কাগজের পুরুত্বের উপর সংরক্ষণের স্থায়িত্ব নির্ভর করে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাগজের পুরুত্বের সাথে চিত্রকর্মের স্থায়িত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। অনেক মোটা কাগজও অল্পদিনে নষ্ট হয়ে যায়। আবার জাপানিজ টিস্যুর মত অনেক চিকন কাগজও অনেকদিন টিকে থাকে। মূলত সংরক্ষণের স্থান, তাপমাত্রা, কাগজ এসিড প্রুফ করাসহ সংরক্ষণ দক্ষতার উপর চিত্রকর্মের স্থায়িত্ব নির্ভর করে।
এই প্রেজেন্টেশনে গাজী মোঃ জহিরুল ইসলাম বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম তৈরির জন্য প্রাথমিক সহায়তা হিসাবে ব্যবহৃত উপকরণগুলির ধরন সম্পর্কে আলোচনা করেন। বিশেষভাবে কাগজ উৎপাদন প্রক্রিয়া ও কাগজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের রচনা যেমন জলরঙ, কাঠকয়লা, গ্রাফাইট, প্যাস্টেল, কালি, এচিং ও লিথোগ্রাফি ইত্যাদি মাধ্যমের উপকরণগত বৈশিষ্ট্য, প্রযোগ কৌশল ও সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেন। প্রিজারভেশন, কনজারভেশন ও রেস্টোরেশনর সংজ্ঞা এবং শিল্প সংরক্ষণের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন তিনি।
অনারারি প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তার গাজী মোঃ জহিরুল ইসলামের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, চিত্রকর্মের সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে আমাদের উপমহাদেশ চিত্রকর্ম সংরক্ষণ করার জন্য যথাযথ তাপমাত্রা বা আবহাওয়া নেই। সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সেজন্য আমি জহিরুল ইসলামের কাছে অনুরোধ জানাবো তিনি যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন।"
তিনি আরো বলেন, শিল্পকর্ম সংরক্ষণের বিষয়ে আমি একটি বই লিখছি। সেখানে আমি গাজী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের লেখা প্রকাশ করতে আগ্রহী।
উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রাচ্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শুশান্ত কুমার অধিকারী। তিনি সেমিনার শেষে শিল্পকর্ম সংরক্ষণ করতে নিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামকে নিয়ে 'হাতে-কলমে'একটি কর্মশালা আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এ সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. আজাহারুল ইসলাম শেখ, অনারারি প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তার ও চারুকলা অনুষদের অনান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উৎসবমুখরভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) পালিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
সোমবার (৪ নভেম্বর) টিএসসির থিয়েটার রুমে এ আয়োজন করা হয়।
এদিন ক্লাবের সভাপতি ইনজামাম কবির সাকলাইন বলেন, সংবিধান সংস্কার করে ৬ বছর পর হতে যাচ্ছে ক্লাবের নির্বাচন। যেই নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করবে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্যান্য কমিটির সদস্যরা।
বিদায়বেলায় সকল ব্যর্থতার দায় নিজের কাধে নিয়ে তিনি বলেন,বিদায়বেলায় সকল ব্যর্থতার দায় একান্তই আমি নিলাম আর যা কিছু অর্জন সবকিছুই তোমাদের রইলো। আগামী দিনে ক্লাবের সফলতা কামনা করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্লাবটির মডারেটর প্রভাষক সেহেরিন আমিন ভূঁইয়া, প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্যসহ অনেকে। বিগত সময়ে ক্লাবের নানা কর্মকান্ড ও শীঘ্রই ক্লাবে হতে যাওয়া নির্বাচন সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরা, আড্ডা-গানসহ নানা আয়োজনে উদযাপিত হয় দিনটি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যান্ড সংগীতের চর্চা, প্রসার এবং সাংস্কৃতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সেই বছরের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যান্ড মিউজিকাল সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি (DUBS) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরণের ব্যক্তিগত ও সামাজিক সংকটে মানবতার বার্তা নিয়ে চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজন করাই ছিলো DUBS এর কর্মকাণ্ডের বৃহৎ অংশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কনসার্ট ফর লাকি আখন্দ, কনসার্ট ফর অহন, কনসার্টটার ফর সানি, বন্যার্তদের জন্য কনসার্টসহ আরও অনেক আয়োজন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও মানসিকভাবে আরো সমৃদ্ধ করতে DUBS এখন কনসার্ট ছাড়াও বিভিন্ন সংগীত যন্ত্রের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন বিষয়ে সেমিনার, সামাজিক সচেতনতা সহ বহুমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।