২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট

কোথায় যাচ্ছে আপনার টাকা!

  সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ
  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নে মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫শ কোটি টাকাই চলে যাবে দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে।

এ হিসাবে সরকারের তহবিল থেকে ১০০ টাকা ব্যয় হলে ১৪.২৪ টাকাই চলে যাবে অতীতে নেওয়া সরকারের ঋণগুলোর সুদ পরিশোধে।

বিজ্ঞাপন

আসুন, এবার দেখে নিই, আপনার আয় থেকে কর নিয়ে ভবিষ্যতে আপনাকেই পরিশোধ করতে হবে, এমন ঋণ নিয়ে ১০০ টাকা ব্যয়ের কত টাকা কোন কোন খাতে যাবে!

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ চৌধুরীর প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগামী বাজেটে ১০০ টাকা ব্যয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ টাকা যাবে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে।

বিজ্ঞাপন

১০০ টাকা ব্যয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ টাকা ব্যয় হবে ভর্তুকি ও প্রণোদনায়। পরিবহন ও যোগাযোগখাতে ব্যয় হবে ১০.২ টাকা। এর বাইরে জন প্রশাসনখাতে ৭.৩ টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে যাবে ৬ টাকা আর স্বাস্থ্যখাতে যাবে ৫.২ টাকা।

১০০ টাকা সরকারি ব্যয়ের মধ্যে প্রতিরক্ষায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৪.৩ টাকা। এছাড়া কোনো খাত উল্লেখ না করে বিবিধ ব্যয় দেখানো হয়েছে, একই পরিমাণ।

এবাদে সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণখাতে ব্যয় হবে ৪.৮ টাকা। পেনশন খাতে ৪.৬ টাকা আর জন নিরাপত্তায় যাবে ৪ টাকা।

১০০ টাকা বাজেট ব্যয়ে সমান ৩.৮ টাকা করে পাবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাত এবং কৃষিখাত।

১০০ টাকা সরকারি ব্যয়ে ৯০ পয়সা যাবে গৃহায়ণখাতে। রিক্রিয়েশন, সংস্কৃতি ও ধর্মসংক্রান্ত কাজে ব্যয় হবে ৮০ পয়সা। শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক সেবায় ব্যয় হবে সর্বনিম্ন ৭০ পয়সা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে।

২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম করা হয়েছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার ঘাটতিই থাকবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিংখাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে প্রস্তাবিত বাজেই উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণও রয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে, ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরো ১৫ হাজার কোটি টাকা আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির টার্গেট থাকছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।