সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশজাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেখানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর জন্য আলাদা আলাদা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্পগুলো হচ্ছে-
চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অধীনে ১৬০০টির বেশি প্রকল্পের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১,০৫৬ কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ৩৮২,৯১৫ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ে ২০১৮ সাল থেকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বরাদ্দের মধ্যেদ্বিতীয় সর্বোচ্চ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১০,৫০৩ কোটি টাকা পাবে এবং মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৬০৫ কোটি টাকা পাবে। প্রস্তাবে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের ওপর উল্লেখযোগ্য জোর দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যা উন্নয়ন বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত হবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এরপর শিক্ষা খাত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, পরিবহন ও যোগাযোগ খাত এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের চারটি প্রকল্প বরাদ্দের শীর্ষ ১০ প্রাপকদের মধ্যে রয়েছে।
বরাদ্দের শীর্ষে থাকা অন্য দুটি প্রকল্প হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। অন্যান্য মেগা প্রকল্পের মধ্যে আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পাবে ৩৭৯৭ কোটি টাকা, যা এডিপিতে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃক তত্ত্বাবধানে ৩৫৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১) পঞ্চম স্থান অর্জন করবে।
উপরন্তু, পিজিসিবি এর অধীনে পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ এবং পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মতো প্রকল্পগুলি বরাদ্দের ক্ষেত্রে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে যথাক্রমে ৩৫.৯৪ বিলিয়ন এবং ৩৫৪৪ কোটি টাকা পাবে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের সম্প্রসারণ, তৃতীয় টার্মিনালের উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৩৫.৩৬ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দের দিক থেকে অষ্টম স্থানে থাকবে।
এছাড়াও, ডিপিডিসি এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের জন্য নবম স্থানে রয়েছে ৩৩.৮৪ বিলিয়ন টাকা।
সবশেষে, শীর্ষ ১০ অগ্রাধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের একমাত্র প্রকল্পটি বরাদ্দ পাবে ৩ হাজার কোটি টাকা।
‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ ব্যয় বাবদ ৭৭ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার ঘাটতিই থাকবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণও রয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির টার্গেট থাকছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।