পোশাক শ্রমিকদের সবেতন ছুটি দেওয়ার দাবি
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসপোশাক শ্রমিকদের সবেতন ছুটি এবং উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতিতে জরুরি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সংগঠনটি সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শামা এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
শ্রমিক নেতারা বলেন, ইতোমধ্যে শ্রমিক সংগঠনগুলো বারবার কারখানায় সবেতন ছুটি ও জরুরি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা তহবিল গঠনের দাবি জানালেও মালিকপক্ষ ও সরকার কর্ণপাত করেনি। উল্টো স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা কিংবা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার দোহাইয়ে দফায় দফায় বেশ কিছু কারখানা খোলা রেখেছে। ফলে এই সংক্রমণ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার জায়গা তৈরি হয়েছে।
মহামারি করোনার ভয়াবহতায় চট্টগ্রামের সাগরিকা অঞ্চলের গার্টেক্স কারখানার নারী শ্রমিকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা।
তারা বলেন, সরকার এক দেশে দুই নীতি চালু করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেও কারখানা বন্ধে গড়িমসি ও খোলা রেখে এই বিপদ ডেকে এনেছে।
নেতারা বলেন, গার্টেক্সের ওই শ্রমিকসহ কারখানার অন্যান্যদের মধ্যে এবং শ্রমিক পল্লীতে এখন এই রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার জন্য সরকার এবং মালিকের চরম দায়িত্বহীনতা, যথাযথ সিদ্ধান্তের অভাব এবং অবহেলাকে চিহ্নিত করেন নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, কারখানা সময়মতো বন্ধ করে দিলে শ্রমিকরা লোকসমাগমে কাজ বা চলা ফেরা করা, বাড়িতে যাওয়া আসা করতো না। তাতে এরকম ঘটনা এড়িয়ে যাবার সুযোগ থাকতো। চরম ভোগান্তি এখন কেবল পোশাক শ্রমিক না সারা দেশবাসী ভোগ করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ও মালিকের দুরদর্শীতার অভাবের ভবিষ্যতে শুধু আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় অর্থনীতির মন্দা প্রভাবই নয় বরং ইউরোপ-আমেরিকার বাজার আমাদের দেশে অর্ডার দেয়াও অনুৎসাহিত হতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবিলম্বে জরুরি তহবিল গঠন এবং ৩ মাসের সবেতন ছুটিতে কারখানা বন্ধের আহ্বান জানান শ্রমিক নেতারা।
তারা বলেন, বিজিএমইএর সভাপতি ভিডিও বার্তায় সময় মতো শ্রমিকরা বেতন পাবেন এই আশ্বাস দিলেও আজ ৮ তারিখ পর্যন্ত বেশির ভাগ কারখানার শ্রমিকরা বেতন পাননি। সাধারণত শ্রমিকরা ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পায়। বাণিজ্যমন্ত্রী আবারও ১৬ তারিখের মধ্যে বেতন পাবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা, বহু কারখানা লে অফ, চাকরি স্থায়ীকরণ না করা বা ছাঁটাইয়ের কারণে কাজের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন শ্রমিকরা।
একদিকে করোনা আতঙ্ক অন্যদিকে জীবিকার অনিশ্চয়তায় শ্রমিকরা বিরাট বিপাকে আছেন। এই দুর্যোগকালে লে-অফের মতো অমানবিক জায়গায় না গিয়ে শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন দেওয়ার দায়িত্ব নেবার জন্য সরকারকে আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।