চোখের জলে আহমেদ রুবেলকে শেষ বিদায়



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আহমেদ রুবেলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন চিত্রনায়ক ও এমপি ফেরদৌস আহমেদ

আহমেদ রুবেলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন চিত্রনায়ক ও এমপি ফেরদৌস আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়াশা ভেজা শীত যাই যাই করছে। এমন রুক্ষ দিনে দেশের শিল্পাঙ্গনে আরও হাহাকার তৈরি করে চলে গেলেন গুণী অভিনেতা আহমেদ রুবেল। গতকাল ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিজের অভিনীত সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’র বিশেষ প্রদর্শনী দেখতে এসে মারা গেছেন তিনি। তার আকস্মিক মৃত্যুতে হতবাক, স্তব্ধ গোটা শোবিজ অঙ্গন।

আহমেদ রুবেলের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা প্লাজায় আনা হয় তার মরদেহ। ঢাকা থিয়েটারের উদ্যোগে আয়োজিত এই শ্রদ্ধা নিবেদন সকালে হাজির হন দেশের নাট্য ও সিনেমা অঙ্গনের অনেক শিল্পী-তারকা। তারা অভিনেতার প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, আবার শেয়ার করেছেন টুকরো টুকরো স্মৃতিও। অশ্রুজড়ানো কণ্ঠে সেসব বলে রুবেলের আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করেছেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “অত্যন্ত অকালে চলে গেলো রুবেল। অভিনয় শিল্পে তার আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। ঢাকা থিয়েটারের অনেকে অকালে চলে গেছেন, তার মধ্যে হুমায়ুন ফরীদি, সেলিম আল দীনও আছেন। আমরা সবাইকে স্মরণ করি। আমার নির্মিত ‘গেরিলা’ ছবিতে শহীদ আলতাফ মাহমুদের চরিত্রে অভিনয় করেছিল রুবেল। সেই স্মৃতিগুলো আজও মনে ভাসে। এত দারুণ অভিনয় করেছিলো যে, আলতাফ মাহমুদ যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিলেন।”

মামুনুর রশীদ ও নাসিরউদ্দিন ইউসুফ

কিংবদন্তি অভিনেতা ও নাট্যজন মামুনুর রশীদ স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে, ‘এটা এত বড় আকস্মিকতা। যে প্রসঙ্গে কথা বলতে একেবারেই ইচ্ছে করে না। আমাদের চেয়ে বয়সে কত ছোট, সুস্থ, এত পথ গাড়ি ড্রাইভ করে এলো। তারপর কী হলো! আমাদের ছেড়েই চলে গেলো। আমাদেরকে একটু সুযোগও দিলো না, সেবা করার। তার সঙ্গে বহু কাজ করেছি। অভিনয় করেছি একসঙ্গে, আমার লেখা দীর্ঘ ধারাবাহিকে কাজ করেছে। তার অভিনয় জীবন আরও দীর্ঘ হতে পারতো। আরও অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে পারতো। কিন্তু কিভাবে কী হয়ে গেলো। আমাদের কাছে রয়ে গেলো জীবন্ত রুবেলের বিনিময়ে শুধু তার স্মৃতি।’

নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম বলেছেন, “স্মৃতিচারণের ভাষা নেই আসলে। এত আকস্মিকভাবে চলে গেলো। রুবেল আমাদের সবার প্রিয় অভিনেতা। গতকাল (৭ ফেব্রুয়ারি) ‘পেয়ারার সুবাস’ দেখলাম, চমৎকার অভিনয় করেছে। কী এমন বয়স হয়েছে, আমার চেয়ে ১০ বছরের ছোট। অথচ সে চলে গেলো। এটা ভাবতেও পারছি না আমি। যাই হোক রুবেল যেখানেই থাকুক, শান্তিতে থাকুক। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।”

নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, অমিতাভ রেজা ও রেদোয়ান রনি

ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদও এসেছেন শ্রদ্ধা জানাতে। এরপর মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “এমন একটা মুহূর্ত, কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই। অসাধারণ একজন অভিনেতা, একজন ভালো মানুষ। আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে, কিন্তু অসময়ে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কঠিন। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তার সঙ্গে একটি কাজ করার, হুমায়ূন আহমেদের ‘চন্দ্রকথা’। তার সরলতা, অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। অন্তর থেকে চাইবো, আহমেদ রুবেলের মতো অসময়ে কেউ যেন চলে না যায়।”
অভিনেতা ফারুক আহমেদের স্মৃতিচারণা ছিল এরকম, “১৯৮৬ সালে রুবেলের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমার যোগ দেওয়ার তিন বছর ও ঢাকা থিয়েটারে আসে। তার উচ্চতা, কণ্ঠস্বর প্রথম দিনই আমাকে মুগ্ধ করেছিল। রুবেলের কণ্ঠস্বর শুনে আমার রীতিমতো আফসোস হতো, এত সুন্দর কণ্ঠ কীভাবে হয়! একটা স্মৃতি শেয়ার করি, সিলেটে গিয়েছিলাম শুটিং করতে। আমি বাসে করে, সে তার গাড়িতে। শুটিং শেষে রুবেল বলে, ফারুক ভাই আপনি আমার সঙ্গে যাবেন। আমি যেতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু সে জোর করে আমাকে গাড়িতে নিয়ে বসালো। আমাকে পেছনের সিটে বসিয়ে একটি বালিশ দিয়ে বলল, ‘আপনি ঘুমান। আমি ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলতে থাকি, যাতে সে না ঘুমায়।’ ভোরে যখন আজান দেয়, তখন দেখি আমি আমার বাসার সামনে। সেখানে নামিয়ে দিয়ে তবেই রুবেল তার বাসায় ফিরেছিল।”

নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও মোরশেদুল ইসলাম

‘আয়নাবাজি’ খ্যাত নির্মতা অমিতাভ রেজা অবশ্য একটু ভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। আহমেদ রুবেলের প্রয়াণের প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন ধুমপান ও নেশা ছাড়ার জন্য। এছাড়া তার নিঃসঙ্গ জীবনের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। অমিতাভ রেজা বলেন, ‘রুবেল ভাই অসাধারণ অভিনেতা, অসাধারণ ভয়েস আর্টিস্ট। কিন্তু রুবেল ভাই একজন নিঃসঙ্গ মানুষ ছিলেন। এক সপ্তাহ আগেও আমরা কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, সহযাত্রীদের পাশে থাকেন। এবং ধুমপান বন্ধ করুন, সব ধরনের নেশাদ্রব্য থেকে দূরে থাকুন। সাম্প্রতিক সময়ে যারাই মারা গেছেন, সকলেরই এটা প্রধানতম কারণ ছিল। এটা এখানে বলা হয়ত উচিত না। কিন্তু আমি চাই না, এরকম দুঃখ আমাদের আরও বাড়ুক।’

অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতা-সদস্যদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সংগঠনটির সভাপতি ও অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম। তিনি বললেন, ‘এটা সত্যি যে, আমরা একজন অসামান্য শিল্পীকে হারালাম। যার আরও অসাধারণ সব চরিত্রে কাজ করার কথা ছিল। যিনি সবসময় অভিনয় নিয়েই ছিলেন। এমন একজন মানুষ সবাইকে হঠাৎ স্তব্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি।’

টাপুর ও টুপুর

অভিনেত্রী তানভীন সুইটি বলেছেন, “রুবেল ভাই আমার সহশিল্পী ছিলেন। প্রচুর কাজ করেছি তার সঙ্গে। তিনি শুধু একজন গুণী অভিনেতাই নন, একজন ভাল মানুষ। শুটিং এলে বাড়তি কথা বলতেন না, শুধু নিজের চরিত্রে থাকতেন। তাকে বলতাম, নিজের যত্ন নিন। তিনি শুধু বলতেন, ‘হবে হবে’! কী হলো! সবাইকে বলবো, তার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমিও তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।”

‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, “সবসময় দেখা হলেই জিজ্ঞেস করতেন, ‘পেয়ারার সুবাস’ কবে আসছে? অথচ কাল (৯ ফেব্রুয়ারি) ছবিটা আসছে, তিনি নেই। সম্প্রতি তিনি আমাদের অফিসে এসেও একটি প্রেসমিটে সবাইকে ছবিটা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তার প্রয়াণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি একজন গুণী মানুষকে হারালো।”

ছবিটির আরেক প্রযোজক রেদওয়ান রনি বলেছেন, “রুবেল ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অনেক আগের। সহকারী পরিচালক হিসেবে পথচলার শুরুর দিকেই তাকে সেটে পেয়েছি। আমার নির্মিত ধারাবাহিক ‘এফএনএফ’-এ তাকে পেয়েছি। তিনি এরকম একজন অভিনেতা, যাকে অদ্ভুত সব চরিত্রে মানিয়ে যায়। তার চেহারা, কণ্ঠস্বর; এটা সচরাচর হয় না। আমি কাল (৭ ফেব্রুয়ারি) একটা বিষয় ভাবছিলাম, আর দুইটা ঘণ্টা পরে কি হতে পারতো না! তার ছবিটা সবাই দেখছে, দর্শকের উচ্ছ্বাসটা তিনি দেখে যেতেন। আমাদের ছবিটা রুবেল ভাইকে উৎসর্গ করা হয়েছে।”

নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও মোরশেদুল ইসলাম

জানা গেছে, শিল্পকলা একাডেমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর ১টার দিকে আহমেদ রুবেলের মরদেহ নেওয়া হবে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানেও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে এবং অনুষ্ঠিত হবে প্রথম জানাজা। এরপর অভিনেতার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গাজীপুরে, স্থায়ী ঠিকানায়। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে আসর নামাজের পর দাফন করা হবে।

 

হাসপাতালে শেষ দেখায় সামিনাকে যা বলেছিলেন শাফিন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার যে অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে আর ফিরলেন না শাফিন আহমেদ, সেই মঞ্চে সেদিন গেয়েছিলেন দেশের আরেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের চার দিনের মাথায় জানতে পারেন শাফিন আহমেদ চিরতরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। শাফিন আহমেদের মৃত্যুর খবর অবিশ্বাস্য ছিল সামিনা চৌধুরীর কাছে। এই খবর সহ্য করাটাও ছিল ভীষণ কষ্টদায়ক।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সামিনা চৌধুরী জানালেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী ইজাজ খান স্বপনসহ গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদকে দেখতে। হাসপাতালে তাদের থাকার অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানালেন সামিনা চৌধুরী।

সামিনা বলেন, ‘‘তিন দিন আগে দেখে এলাম শাফিন ভাইকে। বারবার আমাকে আর স্বপনকে থাকতে বলছিলেন। স্বপনকে বললেন, ‘আমাকে ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ! আমার সঙ্গে গল্প করো। আমার অনেক ব্যথা হচ্ছে কোমরে। স্বপন, তোমাকে কিছু বলব, বসো।’'

সামিনা আরও বলেন, ‘শাফিন ভাইকে পানি খাওয়াল স্বপন। তারপর তাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হলো। শাফিন ভাইয়ের অবস্থা দেখে আমাদের চলে আসতে বললেন আয়োজকেরা। কী বলতে চেয়েছিলেন শাফিন ভাই, কে জানে। কোনো চাপা কষ্ট কি ছিল তার ভেতর? দেশের আরেকটি সম্পদ, আরেকটি মেধার বিয়োগ হলো। চোখে শুধু ভাসছে। তোমরা যেয়ো না প্লিজ...আমাকে আর পাবা না।’

;

ম্যানেজারের সঙ্গে প্রেম, ভাঙছে যীশুর ২০ বছরের সংসার?



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

টলিউড তারকা যীশু সেনগুপ্ত আর সাবেক অভিনেত্রী নীলাঞ্জনা শর্মার দুই দশকের দাম্পত্য জীবন। এত দিন তাদের সম্পর্ককে সবাই আদর্শ মেনে এসেছে। কিন্তু জীবনে কোনকিছুই যে স্থায়ী নয়, কিংবা আমরা বাইরে থেকে যা দেখি তার সবটাই যে সত্য নয় সে কথা আরও একবার হয়তো ঘটতে চলেছে! কয়েক দিন ধরে হঠাৎই টলিপাড়ায় আলোচনায় তাদের বিচ্ছেদের খবর।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। নীলাঞ্জনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে।

দুই কন্যাকে নিয়ে ‍সুখের সংসার ছিলো যিশুর

শিনাল সূর্তি নামের নারীর সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছেন যীশু। এটাই তাদের দাম্পত্য কলহের মূল কারণ। ইতিমধ্যেই নিজের নামের পাশ থেকে সেনগুপ্ত পদবি সরিয়ে ফেলেছেন নীলাঞ্জনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবাকে আনফলো করে দিয়েছেন বড় মেয়ে সারাও।

এখন প্রশ্ন, সত্যিই কি তাহলে যীশু-নীলাঞ্জনার ২০ বছরের দাম্পত্য ভাঙনের পথেই এগোচ্ছে? যদিও এ বিষয়ে স্পিকটি নট যীশু সেনগুপ্ত। এই পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পক্ষে কথা বলেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মহুয়া চট্টোপাধ্যায়। নীলাঞ্জনার সঙ্গে মহুয়ার বন্ধুত্ব বহুদিনের। প্রায় দিনই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। এদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পাশেই দাঁড়ালেন মহুয়া চট্টোপাধ্যায়।

যীশু সেনগুপ্ত

মহুয়া নীলাঞ্জনার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তোমাকে দুর্দান্ত ও শক্তিশালী মানুষ বলেই জানি। খুব গর্ব হয় তোমার জন্য। সব সময়ই তোমার সঙ্গে রয়েছি নীলাঞ্জনা।’ পাল্টা মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন নীলাঞ্জনাও।

তবে শুধু মহুয়া চট্টোপাধ্যায় নন, নীলাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তার অভিনেত্রী বন্ধু রাগেশ্বরীও। তিনিও নিজের ইনস্টাস্টোরিতে লিখেছেন, ‘একসময় জীবনে কঠিন সময়ে তুমি আমাকে হাত ধরে বাঁচিয়েছিলে, এবার আমার পালা। আজ আমার পালা।’

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

ইতিমধ্যেই যীশু-নীলাঞ্জনা নাকি বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছেন বলে খবর। টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি বিচ্ছেদের বিষয়ে আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, গুজরাটিকন্যা শিনাল সূর্তির সঙ্গেই নাকি বেশ কয়েক মাস ধরে তারা লিভ ইন সম্পর্কেও রয়েছেন। এমনকি ‘খাদান’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় এসেও নাকি যীশু নিজের বাড়িতেও ওঠেননি।

প্রসঙ্গত, যীশু এ মুহূর্তে বলিউড, টলিউড ও দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা। কাজের সূত্রে মুম্বাইয়ে বেশির ভাগ সময় থাকতে হয় তাকে।

২০০৪ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন যীশু-নীলাঞ্জনা। খ্যাতির শিখরে পৌঁছানোর বহু আগেই থেকেই যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে আলাপ নীলাঞ্জনার। যখন তারা বিয়ে করেন, তখন যীশু টেলিভিশনের একজন উঠতি অভিনেতা। নীলাঞ্জনা শর্মাও অভিনয় করতেন। তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের মেয়ে। তবে বিয়ের পর সংসারেই মন দেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ে সারা ও জারাকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

যীশু সেনগুপ্ত

তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

;

বায়োপিকের টিজারে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

  • Font increase
  • Font Decrease

টিমোথি শ্যালামেকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। অভিনয়গুণে অল্প দিনের মধ্যেই দর্শকের মনে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন কম বয়সী এই হলিউড অভিনেতা। তার অভিনীত ‘ডুন’ ও ‘ওঙ্কা’ সিনেমা দুটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর মূখ্য চরিত্রেও দেখা যাবে টিমোথি শ্যালামেকে। প্রকাশ পেয়েছে ছবিটির টিজার। ‘আ কমপ্লিট আননোন’-ও যে বিশ্বজয় করতে চলেছে, তা টিজার দেখেই নিশ্চিত সিনেপ্রেমীরা।

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

টিজারে ‘আ হার্ড রেইন’স আ-গনা ফল’ গানের কিছু অংশ গাইতে শোনা গেছে টিমোথিকে। মেকআপ, পোশাক আর চুলের স্টাইলে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান! ছবিটি পরিচালনা করেছেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’, ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’, ‘লোগান’ খ্যাত পরিচালক জেমস ম্যানগোল্ড।

টিজারের শুরুতে টিমোথিকে ম্যানহাটনের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। এ সময়ে অ্যামেরিকান গায়ন পিট সিগার বব ডিলানের গান প্রথম শোনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। পিট সিগারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডওয়ার্ড নরটন। টিজারে ম্যানহাটনে ডিলানের কিছু প্রিয় স্থান দেখানো হয়েছে। তার মাঝে আছে ক্যাফে হোয়া এবং হোটেল চেলসা। টিজারে ডিলান, হোয়ান বাইজ এবং সিলভি রুশোর ত্রিভুজ প্রেমের ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।

বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর দুটি দৃশ্যের কোলাজ

১৯৫৯ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর গানের দুনিয়ায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বব ডিলান। ৮১ বছরের জীবনে অনেক কীর্তি গড়েছেন তিনি। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন এই গীতিকবি। নন্দিত এই গায়ক, গীতিকারের জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাবলি তুলে ধরা হবে সিনেমাটিতে।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

;

শাফিন আহমেদের কিছু বিরল ছবি আর অজানা কথা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্টারা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী শাফিন আহমেদ।

তার মৃত্যুর শোকের আঁচ এখনো পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

শাফিনকে পেলে এভাবেই মধ্যমণি করে রাখতেন শিল্পীসমাজ। ছবিতে শাফিনের পাশে আসিফ আকবর, শওকত আলী ইমন, শহিদুল্লাহ ফরায়েজী, ফুয়াদ নাসের বাবু, লাবুসহ গানের মানুষরা
 

অনেকেই জানেন না শাফিন আহমেদের জন্ম কলকাতায়। আর তারা তিন ভাই- তাহসিন, হামিন ও শাফিন। বাবা কমল দাশগুপ্ত, মা ফিরোজা বেগম। দুজনেই সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি। তবে অনেকেই জানেন না, ছেলেবেলায় শাফিন আহমেদের নাম ছিল মনোজিৎ দাশগুপ্ত!

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ১৯৬৭ সালের দিকে গোটা পরিবারসহ পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন তারা। এরপর ভর্তি হন স্কুলে। সেসময়ই পরিবর্তন করা হয় তার নাম। মনোজিৎ দাশগুপ্ত থেকে তিনি হয়ে যান শাফিন আহমেদ।

কিশোর বেলায় মাকে ঘিরে তিন ভাই তাহসিন, হামিন ও শাফিনের হাসিমুখ

নাম পরিবর্তন নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে শাফিন জানিয়েছিলেন, ‘ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হলো, তখন হিন্দু-মুসলিমের মাঝে যে দূরত্ব বা বিবাদ, সেই সময়ে তা প্রবল ছিল। সেখান থেকেই কিন্তু দুটো দেশের জন্ম- ভারত ও পাকিস্তানের। সেজন্য ভারতে থাকাকালীন একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে হিন্দু পরিচিতিটা যে রকম প্রয়োজন ছিল, একই রকমভাবে যখন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসলাম তখন দেখা গেল মুসলিম পরিচয়টা খুব জরুরি ছিল। কারণ আমরা স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাসার ব্যাপারটা ছিল কি, বাবা খুবই প্রগ্রেসিভ একজন মানুষ ছিলেন। ধর্ম নিয়ে তার মধ্যে সে রকম কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিল না। উনি গানের জগতের মানুষ, গান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি আসলে ইসলাম ধর্মকে ঘিরেই। মায়ের কাছ থেকেই এই প্রভাব এসেছে। ইসলাম ধর্মের চর্চাটা বাসায় ছিল। এ ব্যাপারে আব্বার কোনো মন্তব্য ছিল না। উনার কোনো দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই তিনি চাপিয়ে দিতে চাননি।’

ছবিটি ২০১২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফিরোজা বেগমের স্বামী ও শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত’র ১০০ তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে তোলা। ফ্রেমবন্দী হয়েছিলেন দেশের চার প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী, ফিরোজা বেগম ও শাফিন আহমেদ। একে একে সবাই চলে গেছেন, রয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন (তিনিও বেশ অসুস্থ)। 

শাফিন আহমেদের ডাক নাম ছিল মুনা। পরিবারের অনেকে এ নামেই ডাকে। এ ছাড়া সংগীতাঙ্গনের অনেকে যারা আমাকে ছোটবেলা থেকে চেনে, তখনও এমন তারকাখ্যাতি পাইনি, বয়স ১৭-১৮ হবে; সেই সময়ে যারা চিনতেন তারাও মুনা নামটিই আগে বলেন।

কিংবদন্তি সুরকার কমল দাশগুপ্ত ও প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন। যেন সুরের চামচ মুখে জন্মেছিলেন তিনি। বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত আর তবলা, মায়ের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন। ৯ বছর বয়সে নজরুলের শিশুতোষ গান ‘প্রজাপতি প্রজাপতি’ রেকর্ড করেছেন শাফিন।

কৈশোরে বিটলসসহ বহু ওয়েস্টার্ন অ্যালবাম হাতের নাগালে পেয়েছেন। ইংরেজি গানে মুগ্ধতা জমে; বাড়িতে ড্রামস ও গিটার বাজাতেন। মা-বাবা নাখোশ হননি; বরং আশকারাই দিয়েছেন।

মায়ের সঙ্গে হামিন ও শাফিন

শাফিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ বলেছেন, ‘ওনার কণ্ঠটা একদমই আলাদা। অত্যন্ত সুরে গান করেন। একই সঙ্গে বেজ বাজিয়ে গান করা ভীষণ কঠিন কাজ। এটিই তাকে আলাদা করেছে।’

প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘কী করে সব ভুলে যাই’সহ ১০ টির মতো গান গেয়েছেন শাফিন। মাইলসের বাইরে শাফিনের বেশির ভাগ জনপ্রিয় একক গানের কথা ও সুর করেছেন তিনি।

১৯৭৯ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলস। চার দশকের ক্যারিয়ারে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা অন্তরে’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’সহ বহু হিট গান উপহার দিয়েছেন শাফিন।

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন। গান আর গিটারের তালে শ্রোতাদের হৃদয়ে উন্মাদনা ছড়িয়েছেন। প্রাণশক্তিই তাকে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করেছে বলে মনে করেন আরেক ব্যান্ড তারকা মাকসুদ হক।

নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় মাইলসের কনসার্টে শ্রোতাদের ঢল নামত। কলকাতার শিল্পীরাও শাফিন আহমেদকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কলকাতায় গায়ক অনুপম রায় বলেছেন, মাইলসে শাফিনের গান শুনেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। ব্যান্ডটির ভক্ত তিনি। কলকাতার ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধুসহ আরও অনেকেই শাফিনের গানের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন।

ব্যান্ড মাইলস-এর সদস্যরা

;