এ কেমন প্রামাণ্যচিত্র উৎসব!



আশরাফুল ইসলাম পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘১২তম লিবারেশন ডক্ ফেস্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসবের শেষ দিন ছিল সোমবার। ঘোষিত অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী এ দিন নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরুর কথা ছিল বেলা ১১টায়। 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী দেখতে এই প্রতিবেদক সকাল পৌনে ১১টায় জাদুঘর প্রাঙ্গনে পৌছে দেখতে পান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া সেখানে কেউ নেই। তবে জাদুঘর ভবনের দেওয়ালে বেমানানভাবে পেচিয়ে থাকা এ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত কয়েকটি হ্যাংগিং ব্যানার উৎসবের দৈন্যতাকেই যেন জানান দিচ্ছিল।   

নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে উৎসব সম্পর্কিত কোন আপডেট না পেয়ে জাদুঘর সচিবালয়ে গিয়ে ফারহাত নামে দায়িত্বরত একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি উৎসব সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ফারহাত জানান, বেলা ১১টায় উৎসবের পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে।  

মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, ফাঁকা মিলনায়তনটিতে শুধুমাত্র একজন কর্মী প্রজেক্টরে প্রদর্শনের জন্য তথ্যচিত্র চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষার পর মৃন্ময় ব্যানার্জী নামে কলকাতা থেকে আসা একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা উপস্থিত হন সেখানে। তিনি জানালেন, তাঁর তথ্যচিত্র এই উৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে এবং ইমেইল ও ফোন করে তাকে উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বেলা ১১টার কিছু পরে কোন দর্শনার্থীর উপস্থিতি এবং ঘোষণা ছাড়াই মৃন্ময় ব্যানার্জীর ‘বিপ্লবের ধ্বজা হাতে যাঁরা এনে দিল স্বাধীনতা’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন শুরু করেন ওই জাদুঘর কর্মী।

৪০ মিনিট দীর্ঘের এই তথ্যচিত্র প্রদর্শন শেষ হলে ফাঁকা মিলনায়তনে এক শুভানুধ্যায়ী নিয়ে নিজের নির্মাণ করা তথ্যচিত্র দেখতে আসা মৃন্ময় হতাশা ব্যক্ত করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কোন দর্শনার্থী যদি এই এটি না-ই দেখলো তবে তা আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নাম দিয়ে এখানে প্রদর্শনের কি গুরুত্ব থাকতে পারে! এমন উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোরইবা কি প্রয়োজন ছিল?’

তরুণ এই নির্মাতা বলেন, ‘উৎসবে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ইমেইল করা হয়, তাতে আমার টিমের জন্য ২টি পাশ ইস্যু করার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞেস করলে কেউই এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি। আগ্রহীরা যদি দেখতেই না পারলো তবে এ এধরণের আয়োজনে অংশগ্রহণ অর্থহীন।’

তিনি বলেন, ‘হয়তোবা আয়োজকরা এই উৎসব সম্পর্কে আগ্রহীদের কাছে তথ্য পৌছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত অনুরাগীরা এই ধরণের আয়োজনে সব বাধা উপেক্ষা করেও ছুটে আসেন-অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তা দেখে এসেছি আমরা।’  

নির্মাতা মৃন্ময় ব্যানার্জীর তথ্যচিত্র দেখতে আসা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জাদুঘর মিলনায়তনটি প্রদর্শনীর জন্য উপযোগি ছিল না বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘মিলনায়তনে আধঘন্টার মতো বসে থেকে বুঝতে পারছি প্রদর্শনের আগে এটিতে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার কাজটিও করেননি জাদুঘর কর্মীরা। রীতিমতো দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করে একটি প্রেক্ষাগৃহকে যেভাবে প্রস্তুত করা হয়, এখানে তা করা হয়নি।’

এ রকম মিলনায়তনে এসে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এই বক্ষব্যাধি চিকিৎসক।  


মিলনায়তন থেকে বেরিয়েই জাদুঘর অভ্যন্তরে বিশ-পচিশজন স্বেচ্ছাসেবককে খোশগল্প করতে দেখা যায়। তাদের কেউই মিলনায়তনে কেন গেলেন না জানতে চাইলে-তারা কথা বলতে রাজি হননি। উৎসব সমন্বয়ে থাকা ফারহাতের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দাবদাহের কারণে দর্শনার্থী না থাকার দায় এড়ান। তবে উৎসব সংশ্লিষ্ট জাদুঘর কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কেন প্রদর্শনীতে থাকলেন না-এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি তিনিও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাদুঘরের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘১২তম লিবারেশন ডক ফেস্ট বাংলাদেশ’ এর উদ্বোধন ও সমাপনী আয়োজনে কিছু অতিথি ও দর্শনার্থী ছাড়া এবারের আয়োজনে উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। গত ১৮ এপ্রিল জাদুঘর মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।

২০০৬ সাল থেকে প্রামাণ্য চিত্র উৎসব শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এই উৎসবে বিশ্বের খ্যাতিমান নির্মাতাগণ তাদের তথ্যচিত্র নিয়ে অংশ নিয়ে এই উৎসবের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেরা তথ্যচিত্র নির্মাতাদের পুরষ্কৃতও করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এবার এই উৎসব আয়োজনে সেই ঐতিহ্যিক পরম্পরা বজায় রাখতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর- এমন অভিযোগ তথ্যচিত্র নির্মাতাদের।  

হাসপাতালে শেষ দেখায় সামিনাকে যা বলেছিলেন শাফিন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার যে অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে আর ফিরলেন না শাফিন আহমেদ, সেই মঞ্চে সেদিন গেয়েছিলেন দেশের আরেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের চার দিনের মাথায় জানতে পারেন শাফিন আহমেদ চিরতরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। শাফিন আহমেদের মৃত্যুর খবর অবিশ্বাস্য ছিল সামিনা চৌধুরীর কাছে। এই খবর সহ্য করাটাও ছিল ভীষণ কষ্টদায়ক।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সামিনা চৌধুরী জানালেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী ইজাজ খান স্বপনসহ গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদকে দেখতে। হাসপাতালে তাদের থাকার অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানালেন সামিনা চৌধুরী।

সামিনা বলেন, ‘‘তিন দিন আগে দেখে এলাম শাফিন ভাইকে। বারবার আমাকে আর স্বপনকে থাকতে বলছিলেন। স্বপনকে বললেন, ‘আমাকে ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ! আমার সঙ্গে গল্প করো। আমার অনেক ব্যথা হচ্ছে কোমরে। স্বপন, তোমাকে কিছু বলব, বসো।’'

সামিনা আরও বলেন, ‘শাফিন ভাইকে পানি খাওয়াল স্বপন। তারপর তাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হলো। শাফিন ভাইয়ের অবস্থা দেখে আমাদের চলে আসতে বললেন আয়োজকেরা। কী বলতে চেয়েছিলেন শাফিন ভাই, কে জানে। কোনো চাপা কষ্ট কি ছিল তার ভেতর? দেশের আরেকটি সম্পদ, আরেকটি মেধার বিয়োগ হলো। চোখে শুধু ভাসছে। তোমরা যেয়ো না প্লিজ...আমাকে আর পাবা না।’

;

ম্যানেজারের সঙ্গে প্রেম, ভাঙছে যীশুর ২০ বছরের সংসার?



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

টলিউড তারকা যীশু সেনগুপ্ত আর সাবেক অভিনেত্রী নীলাঞ্জনা শর্মার দুই দশকের দাম্পত্য জীবন। এত দিন তাদের সম্পর্ককে সবাই আদর্শ মেনে এসেছে। কিন্তু জীবনে কোনকিছুই যে স্থায়ী নয়, কিংবা আমরা বাইরে থেকে যা দেখি তার সবটাই যে সত্য নয় সে কথা আরও একবার হয়তো ঘটতে চলেছে! কয়েক দিন ধরে হঠাৎই টলিপাড়ায় আলোচনায় তাদের বিচ্ছেদের খবর।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। নীলাঞ্জনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে।

দুই কন্যাকে নিয়ে ‍সুখের সংসার ছিলো যিশুর

শিনাল সূর্তি নামের নারীর সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছেন যীশু। এটাই তাদের দাম্পত্য কলহের মূল কারণ। ইতিমধ্যেই নিজের নামের পাশ থেকে সেনগুপ্ত পদবি সরিয়ে ফেলেছেন নীলাঞ্জনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবাকে আনফলো করে দিয়েছেন বড় মেয়ে সারাও।

এখন প্রশ্ন, সত্যিই কি তাহলে যীশু-নীলাঞ্জনার ২০ বছরের দাম্পত্য ভাঙনের পথেই এগোচ্ছে? যদিও এ বিষয়ে স্পিকটি নট যীশু সেনগুপ্ত। এই পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পক্ষে কথা বলেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মহুয়া চট্টোপাধ্যায়। নীলাঞ্জনার সঙ্গে মহুয়ার বন্ধুত্ব বহুদিনের। প্রায় দিনই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। এদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পাশেই দাঁড়ালেন মহুয়া চট্টোপাধ্যায়।

যীশু সেনগুপ্ত

মহুয়া নীলাঞ্জনার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তোমাকে দুর্দান্ত ও শক্তিশালী মানুষ বলেই জানি। খুব গর্ব হয় তোমার জন্য। সব সময়ই তোমার সঙ্গে রয়েছি নীলাঞ্জনা।’ পাল্টা মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন নীলাঞ্জনাও।

তবে শুধু মহুয়া চট্টোপাধ্যায় নন, নীলাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তার অভিনেত্রী বন্ধু রাগেশ্বরীও। তিনিও নিজের ইনস্টাস্টোরিতে লিখেছেন, ‘একসময় জীবনে কঠিন সময়ে তুমি আমাকে হাত ধরে বাঁচিয়েছিলে, এবার আমার পালা। আজ আমার পালা।’

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

ইতিমধ্যেই যীশু-নীলাঞ্জনা নাকি বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছেন বলে খবর। টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি বিচ্ছেদের বিষয়ে আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, গুজরাটিকন্যা শিনাল সূর্তির সঙ্গেই নাকি বেশ কয়েক মাস ধরে তারা লিভ ইন সম্পর্কেও রয়েছেন। এমনকি ‘খাদান’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় এসেও নাকি যীশু নিজের বাড়িতেও ওঠেননি।

প্রসঙ্গত, যীশু এ মুহূর্তে বলিউড, টলিউড ও দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা। কাজের সূত্রে মুম্বাইয়ে বেশির ভাগ সময় থাকতে হয় তাকে।

২০০৪ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন যীশু-নীলাঞ্জনা। খ্যাতির শিখরে পৌঁছানোর বহু আগেই থেকেই যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে আলাপ নীলাঞ্জনার। যখন তারা বিয়ে করেন, তখন যীশু টেলিভিশনের একজন উঠতি অভিনেতা। নীলাঞ্জনা শর্মাও অভিনয় করতেন। তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের মেয়ে। তবে বিয়ের পর সংসারেই মন দেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ে সারা ও জারাকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

যীশু সেনগুপ্ত

তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

;

বায়োপিকের টিজারে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

  • Font increase
  • Font Decrease

টিমোথি শ্যালামেকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। অভিনয়গুণে অল্প দিনের মধ্যেই দর্শকের মনে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন কম বয়সী এই হলিউড অভিনেতা। তার অভিনীত ‘ডুন’ ও ‘ওঙ্কা’ সিনেমা দুটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর মূখ্য চরিত্রেও দেখা যাবে টিমোথি শ্যালামেকে। প্রকাশ পেয়েছে ছবিটির টিজার। ‘আ কমপ্লিট আননোন’-ও যে বিশ্বজয় করতে চলেছে, তা টিজার দেখেই নিশ্চিত সিনেপ্রেমীরা।

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

টিজারে ‘আ হার্ড রেইন’স আ-গনা ফল’ গানের কিছু অংশ গাইতে শোনা গেছে টিমোথিকে। মেকআপ, পোশাক আর চুলের স্টাইলে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান! ছবিটি পরিচালনা করেছেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’, ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’, ‘লোগান’ খ্যাত পরিচালক জেমস ম্যানগোল্ড।

টিজারের শুরুতে টিমোথিকে ম্যানহাটনের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। এ সময়ে অ্যামেরিকান গায়ন পিট সিগার বব ডিলানের গান প্রথম শোনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। পিট সিগারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডওয়ার্ড নরটন। টিজারে ম্যানহাটনে ডিলানের কিছু প্রিয় স্থান দেখানো হয়েছে। তার মাঝে আছে ক্যাফে হোয়া এবং হোটেল চেলসা। টিজারে ডিলান, হোয়ান বাইজ এবং সিলভি রুশোর ত্রিভুজ প্রেমের ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।

বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর দুটি দৃশ্যের কোলাজ

১৯৫৯ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর গানের দুনিয়ায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বব ডিলান। ৮১ বছরের জীবনে অনেক কীর্তি গড়েছেন তিনি। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন এই গীতিকবি। নন্দিত এই গায়ক, গীতিকারের জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাবলি তুলে ধরা হবে সিনেমাটিতে।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

;

শাফিন আহমেদের কিছু বিরল ছবি আর অজানা কথা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্টারা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী শাফিন আহমেদ।

তার মৃত্যুর শোকের আঁচ এখনো পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

শাফিনকে পেলে এভাবেই মধ্যমণি করে রাখতেন শিল্পীসমাজ। ছবিতে শাফিনের পাশে আসিফ আকবর, শওকত আলী ইমন, শহিদুল্লাহ ফরায়েজী, ফুয়াদ নাসের বাবু, লাবুসহ গানের মানুষরা
 

অনেকেই জানেন না শাফিন আহমেদের জন্ম কলকাতায়। আর তারা তিন ভাই- তাহসিন, হামিন ও শাফিন। বাবা কমল দাশগুপ্ত, মা ফিরোজা বেগম। দুজনেই সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি। তবে অনেকেই জানেন না, ছেলেবেলায় শাফিন আহমেদের নাম ছিল মনোজিৎ দাশগুপ্ত!

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ১৯৬৭ সালের দিকে গোটা পরিবারসহ পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন তারা। এরপর ভর্তি হন স্কুলে। সেসময়ই পরিবর্তন করা হয় তার নাম। মনোজিৎ দাশগুপ্ত থেকে তিনি হয়ে যান শাফিন আহমেদ।

কিশোর বেলায় মাকে ঘিরে তিন ভাই তাহসিন, হামিন ও শাফিনের হাসিমুখ

নাম পরিবর্তন নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে শাফিন জানিয়েছিলেন, ‘ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হলো, তখন হিন্দু-মুসলিমের মাঝে যে দূরত্ব বা বিবাদ, সেই সময়ে তা প্রবল ছিল। সেখান থেকেই কিন্তু দুটো দেশের জন্ম- ভারত ও পাকিস্তানের। সেজন্য ভারতে থাকাকালীন একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে হিন্দু পরিচিতিটা যে রকম প্রয়োজন ছিল, একই রকমভাবে যখন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসলাম তখন দেখা গেল মুসলিম পরিচয়টা খুব জরুরি ছিল। কারণ আমরা স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাসার ব্যাপারটা ছিল কি, বাবা খুবই প্রগ্রেসিভ একজন মানুষ ছিলেন। ধর্ম নিয়ে তার মধ্যে সে রকম কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিল না। উনি গানের জগতের মানুষ, গান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি আসলে ইসলাম ধর্মকে ঘিরেই। মায়ের কাছ থেকেই এই প্রভাব এসেছে। ইসলাম ধর্মের চর্চাটা বাসায় ছিল। এ ব্যাপারে আব্বার কোনো মন্তব্য ছিল না। উনার কোনো দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই তিনি চাপিয়ে দিতে চাননি।’

ছবিটি ২০১২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফিরোজা বেগমের স্বামী ও শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত’র ১০০ তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে তোলা। ফ্রেমবন্দী হয়েছিলেন দেশের চার প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী, ফিরোজা বেগম ও শাফিন আহমেদ। একে একে সবাই চলে গেছেন, রয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন (তিনিও বেশ অসুস্থ)। 

শাফিন আহমেদের ডাক নাম ছিল মুনা। পরিবারের অনেকে এ নামেই ডাকে। এ ছাড়া সংগীতাঙ্গনের অনেকে যারা আমাকে ছোটবেলা থেকে চেনে, তখনও এমন তারকাখ্যাতি পাইনি, বয়স ১৭-১৮ হবে; সেই সময়ে যারা চিনতেন তারাও মুনা নামটিই আগে বলেন।

কিংবদন্তি সুরকার কমল দাশগুপ্ত ও প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন। যেন সুরের চামচ মুখে জন্মেছিলেন তিনি। বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত আর তবলা, মায়ের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন। ৯ বছর বয়সে নজরুলের শিশুতোষ গান ‘প্রজাপতি প্রজাপতি’ রেকর্ড করেছেন শাফিন।

কৈশোরে বিটলসসহ বহু ওয়েস্টার্ন অ্যালবাম হাতের নাগালে পেয়েছেন। ইংরেজি গানে মুগ্ধতা জমে; বাড়িতে ড্রামস ও গিটার বাজাতেন। মা-বাবা নাখোশ হননি; বরং আশকারাই দিয়েছেন।

মায়ের সঙ্গে হামিন ও শাফিন

শাফিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ বলেছেন, ‘ওনার কণ্ঠটা একদমই আলাদা। অত্যন্ত সুরে গান করেন। একই সঙ্গে বেজ বাজিয়ে গান করা ভীষণ কঠিন কাজ। এটিই তাকে আলাদা করেছে।’

প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘কী করে সব ভুলে যাই’সহ ১০ টির মতো গান গেয়েছেন শাফিন। মাইলসের বাইরে শাফিনের বেশির ভাগ জনপ্রিয় একক গানের কথা ও সুর করেছেন তিনি।

১৯৭৯ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলস। চার দশকের ক্যারিয়ারে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা অন্তরে’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’সহ বহু হিট গান উপহার দিয়েছেন শাফিন।

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন। গান আর গিটারের তালে শ্রোতাদের হৃদয়ে উন্মাদনা ছড়িয়েছেন। প্রাণশক্তিই তাকে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করেছে বলে মনে করেন আরেক ব্যান্ড তারকা মাকসুদ হক।

নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় মাইলসের কনসার্টে শ্রোতাদের ঢল নামত। কলকাতার শিল্পীরাও শাফিন আহমেদকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কলকাতায় গায়ক অনুপম রায় বলেছেন, মাইলসে শাফিনের গান শুনেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। ব্যান্ডটির ভক্ত তিনি। কলকাতার ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধুসহ আরও অনেকেই শাফিনের গানের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন।

ব্যান্ড মাইলস-এর সদস্যরা

;