মার্কিন নির্বাচন: কে পাবেন এশিয়ান-আমেরিকানদের সমর্থন?

  মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
  • ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ট্রাম্প ও বাইডেন,  ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্প ও বাইডেন, ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন ভোট এলেই নানা রকম হিসাব শুরু হয়। তাতে মার্কিন নাগরিকদের জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে তাদের সমর্থনকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এশিয়ান বংশজাত মার্কিন ভোটারা থাকেন সবার নজরে। তেমনি অন্য গোষ্ঠীর ভোটারদের গতি-প্রকৃতিও থাকে সবার আগ্রহের বিষয়।

মার্কিন নির্বাচনে এবার ২০ লক্ষ অনাবাসী ভারতীয় ভোটের বড় অংশই যে ডেমোক্র্যাটরা পেতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। বাইডেন তার ‘রানিং মেট’ হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে বেছে এ বিষয়ে টেক্কা দিয়েছেন রিপাবলিকান ট্রাম্পকে।

বিজ্ঞাপন

অভিবাসন নীতির প্রশ্নেও ডোনাল্ড ট্রাম্প পিছিয়ে আছেন মাইগ্রেন্ট ভোটারদের পছন্দের তালিকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত একটি অভিবাসীদের দেশ, যেখানে বিশ্বের নানা দেশ থেকে মানুষ এসে নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করছেন।

অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিস্পানিক, যারা এসেছেন পাশের মেক্সিকো ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে। তারপরেই আইরিশ-আমেরিকান, আফ্রিকান-আমেরিকান, ইহুদি ও এশিয়ান-আমেরিকানরা। একমাত্র ইহুদি জনগোষ্ঠী বাদে অন্যরা ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন বলে মনে করেন না বিশেষজ্ঞরা। 

বিজ্ঞাপন

ধর্মীয় বিবেচনায় মুসলিম ভোটও যাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। কারণ, এই মার্কিন নেতাকে মনে করা হয় বর্ণবাদী ও শ্বেতাঙ্গপ্রীতিতে আক্রান্ত। তার কথাবার্তায় ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও সৌজন্যের অভাবও পরিলক্ষিত।

মার্কিন মুসলিমদের সিংহভাগই এশিয়া ও আফ্রিকান বংশধারার মানুষ। তারা যে ট্রাম্পের নেতৃত্বে খুশি নন, সেটা বার বার প্রকাশ পেয়েছে। চীনা-আমেরিকানরাও সংখ্যার দিক থেকে বেশ ভারি। বিশেষ করে, প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলোতে তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী। এদের পক্ষেও ট্রাম্পকে সমর্থনের কারণ দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে ডোনাল্ড ট্রাম্প

মোটের উপর নতুন প্রজন্ম, অভিবাসী প্রজন্ম, নারী ও পরিবেশবাদীগণ, লিবারেল ও মুক্তমনারা রিপাবলিকানদের বদলে ডেমোক্রেটদের বেশি পছন্দ করেন। ট্রাম্পের কারণে এ পছন্দের পাল্লা ডেমোক্রেটদের দিকে আরো ভারি হয়েছে বলে অনেকগুলো জরিপ ও সার্ভে থেকে প্রতীয়মান হয়েছে।

তাহলে ক্ষমতাসীন ডোনাল্ড ট্রাম্প কার ভরসায় নির্বাচনে জেতার আশা করছেন? অতীতের মতোই কট্টরপন্থী শ্বেতাঙ্গ ভোটের প্রতিই ট্রাম্পের নজর। সঙ্গে তিনি পাবেন ইহুদি সমর্থনও। অন্যদিকে, বাইডেন পাবেন অভিবাসী ও উদারপন্থীদের ভোট। এমন মেরুকরণ কিন্তু মার্কিন নির্বাচনে নতুন নন। সব সময়ই সাধারণভাবে গোড়া ও লিবারেলদের মধ্যেই লড়াইটি হয়।

ট্রাম্পের সুবিধা হলো, তার সমর্থক কট্টরপন্থীরা মার্কিন অর্থনীতির মূল নিয়ন্ত্রক। আর্থিক চালিকা শক্তি ছাড়াও কৌশলগত নানা প্রতিষ্ঠান তাদের অধীনে। পুঁজিবাদের প্রতিভূ মার্কিন দেশের মূল কাণ্ডারী এরাই, যাদের প্রতিনিধি ও প্রতিচ্ছবি ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বাইডেন পপুলার সমর্থন বেশি পেলেও তার পক্ষের ভোটাররা মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ। শুধু ভোট নয়, অন্যান্য নির্বাচনী মেকানিজম কতটুকু তাদের নিয়ন্ত্রণে, সেটাও বিজয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। ফলে নির্বাচনের লড়াইয়ে শেষ চালে বাজিমাৎ করে কে জিতবেন, তা নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল।