কুমিরের আক্রমণে নিখোঁজ শিশু, আতঙ্কে এলাকাবাসী
অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল বিশ্বের অন্য যে কোনো জায়গার তুলনায় বেশি কুমিরের আবাসস্থল। এবার সেখান থেকেই কুমিরের আক্রমণে ১২ বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়েছেন। এঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ডারউন শহরে থেকে ৭ ঘণ্টা পথের দূরত্বে এনগানমাররিয়াঙ্গার নামাক স্থানে। সেখানকার একটি খালে সর্বশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। খালটির সঙ্গে সমুদ্রের সংযোগ ছিল। ফলে শিশুটিকে কুমির ধরে নিয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার ( ৩ জুলাই) যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসিতে খবরটি প্রকাশিত হয়।
বিবিসিকে পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে শিশুটিকে কুমির আক্রমণ করেছে। তবে এবিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। দলটি একইসঙ্গে স্থলভাগ ও পানিতে অভিযান চালাতে পারদর্শী।
বিশ্বের অন্য যে কোনও জায়গার তুলনায় বেশি কুমির থাকে সেখানে। ওখানে প্রায় ১ লাখ কুমিরের আবাসস্থল। কিন্তু কুমিরের এই ধরনের আক্রমণের ঘটনা খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। এনগানমাররিয়াঙ্গারে বসবাসকারীরা পালুম্পা নামে পরিচিত। পুরো এলাকাজুড়ে মাত্র ৩৬৪ লোকের বসবাস।
বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে উত্তরাঞ্চলের পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশের বিশেষজ্ঞ দল উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ছোট শিশুকে হারানো যে কোনো পিতামাতা বা পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা। কুমিরের নিয়ে যাওয়ার ঘটনা আরও বেশি মর্মান্তিক।
উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় মানুষ কুমির পেলে সাধারণত শিকার করে মেরে ফেলে। তাই মি. পটার বলেন, বন্যপ্রাণী কর্মকর্তাদের কুমিরটিকে এলাকা থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে তাদের।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি জায়গায় থাকি যেখানকার জঙ্গলে কুমিরের বসবাস। ফলে আমাদের পানি থেকে দূরে নিরাপদ স্থানে থাকতে হবে।
একসময় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার লবনাক্ত পানিতে কুমির। কিন্তু ১৯৭০ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ব্রুম থেকে কুইন্সল্যান্ডের গ্ল্যাডস্টোন পর্যন্ত কুমির শিকার নিষিদ্ধ করায় সংখ্যাটি আবার বাড়তে শুরু করে।
গত বছরে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে অন্তত আরও দুটি কুমিরের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। জানুয়ারিতে কাকাডু ন্যাশনাল পার্কে সাঁতার কাটতে গিয়ে একটি নয় বছরে শিশু আক্রান্ত হয়। এছাড়াও অক্টোবরে এক কৃষককে আক্রমণ করলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।