করোনা আক্রান্ত শিশুর মায়ের করুণ বর্ণনা

  করোনা ভাইরাস
  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হাসপাতালে বিছানায় আলফি

হাসপাতালে বিছানায় আলফি

পাঁচ বছর বয়সী পুরোপুরি সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান একটি ছেলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কিভাবে ধুকছে সেই করুণ বর্ণনা দিয়েছেন এক মা।

ইংল্যান্ডের ওরচেস্টারশায়ারের বাসিন্দা লরেন ফুলব্রুক তার ছেলে আলফির শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ সম্পর্কে বলেন, আলফির শরীরে তীব্র জ্বর আসে, তার হ্যালুসিনেশন হয় এবং বমি করতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

অন্যান্য অভিভাবকদের সতর্ক ও সচেতন করার জন্য লরেন ফেসবুকে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। করোনাভাইরাসে শিশুদের ঝুঁকি নেই—এমন ধারণা ভুল দাবি করে লরেন ফুলব্রুক বলেন, ছোট বাচ্চারা কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হতে পারে এবং তাদের শরীরে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে, এমনকি সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান বাচ্চাও আক্রান্ত হতে পারে।

আলফিকে হাসপাতালের বিছানায় অসহায় কাতরাতে দেখেন তার মা লরেন। মাকে ছোট্ট আলফি জিজ্ঞেস করে—মা, আমি কি মারা যাচ্ছি?

বিজ্ঞাপন

‘করোনাভাইরাস ঠাট্টার বিষয় নয়’— ফেসবুক পোস্টে বলেন লরেন ফুলব্রুক। তার পোস্টটি ৫১ হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন।

ফেসবুক পোস্টে লরেন বলেন, “আপনি পাবে যেতে চান, রেস্তোঁরায় যেতে চান— দয়া করে নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা বন্ধ করুন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত পরিবার হিসেবে আমি এটা কী তা হারে হারে টের পাচ্ছি।”

“আমাকে দেখতে হচ্ছে আমার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে নড়াচড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে, কিছু খেতে পারছে না, সামান্য একটু পান করে। তার শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) নিচে নামছে না, জ্বরের ঘোরে সে বমি করে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি দেখেছি তার হ্যালুসিনেশন হচ্ছে, মাথাব্যথায় কাঁদছে সে। অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সে করোনায় আক্রান্ত নিশ্চিত হয়েছি।”

করোনা আক্রান্ত আলফি ও তার মা লরেন ফুলব্রুক

গত ১৬ মার্চ যখন আলফির শরীরে করোনার প্রথম লক্ষণগুলি দেখা যেতে শুরু করে তখনকার সেই অভিজ্ঞতাকে নিজের জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন ললেন ফুলব্রুক।

যারা বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের সময়ে বাড়িতে থাকার নির্দেশনাকে অমান্য করছেন তাদের উদ্দেশে লরেন তার পোস্টে মিনতি করে বলেন, “দয়া করে, কিছুদিন ঘরে থাকুন। আপনি যত তাড়াতাড়ি সামাজিক দূরত্ব তৈরি করবেন, তত তাড়াতাড়ি এটি (করোনাভাইরাস) শেষ হবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি মনোযোগ বা সহানুভূতির জন্য এই পোস্ট করছি না। আমি শুধু চাই মানুষ নিরাপদ থাকুক। দয়া করে আপনার ও অন্যদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি ভাবুন।”

সাধারণত শিশুদের শরীরে করোনাভাইরাসের গুরুতর প্রভাব পড়ে না। যদিও ভাইরাসটির অনেক কিছুই এখনও অজানা রয়ে গেছে। গত সপ্তাহে সাঁতার কাটতে গিয়ে আলফির কিভাবে পরিণতি হয়েছিল সে কথা জানিয়েছেন তার মা।

লরেন ফুলব্রুক বলেন, “গত সোমবার সাঁতারের ক্লাসে আলফি গোঙানোর মতো শব্দ করতে শুরু করে, আমি তাকে সাঁতারের ক্লাস থেকে নিয়ে আসি এবং স্কুলেও পাঠাইনি। এরপর তার কাশি শুরু হয়, কফ বের হয়। পরদিন অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং রাতে হঠাৎ তার শরীরের তাপমাত্রা ভীষণ বেড়ে যায়।

যদিও আলফি বলতে থাকে সে ঠিক আছে। তবে একদিন পর তার শরীরের তাপমাত্রা ৪২.৩ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। সে কিছুই খাচ্ছিল না, সামান্য পানি ছাড়া। আর বলছিল যে, সে নড়াচড়া করতে পারছে না।”