দিল্লিতে করোনার 'ফোর্থ ওয়েভ', ভারতের পরিস্থিতি 'মারাত্মক'

  করোনা ভাইরাস



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
করোনা বিস্তারের পটভূমিতে ভারতে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

করোনা বিস্তারের পটভূমিতে ভারতে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম পিটিআই (প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া) পরিবেশিত আলোকচিত্রে দেখা যাচ্ছে, একজন স্বাস্থ্যকর্মী দিল্লি ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিসিএ) সদস্যদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ দিল্লির করোনাভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমণের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা জ্বর, শুকনো কাশি ও নানাবিধ উপসর্গগত লক্ষণ সমেত দ্রুত ছড়াচ্ছে এবং প্রধানত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের ব্যাপকহারে আক্রান্ত করছে। বিশেষজ্ঞরা দিল্লির নাজুক ও অবনতিশীল পরিস্থিতিকে 'ফোর্থ ওয়েভ অব করোনা পেন্ডামিক' নামে অভিহিত করছেন।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, 'বর্তমানে চলমান করোনা প্রকোপ অতীতের চেয়ে বহুগুণে শক্তিশালী এবং অল্প ও মাঝ-বয়সীরা অকাতরে আক্রান্ত হচ্ছেন।' দিল্লির প্রধান হাসপাতালগুলোতে রোগির সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আক্রান্ত মানুষের তুলনায় চিকিৎসা সুবিধার অপ্রতুলতায় সঙ্কট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদুপরি, এইমস, সফদর জং, গঙ্গুরাম হাসপাতালের মতো প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো পরিস্থিতি সামাল দিতে নাস্তানাবুদ হচ্ছে। এদিকে বহু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পুরো অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।

শুধু রাজধানী দিল্লিই নয়, সামগ্রিক ভাবে পুরো ভারতের করোনা পরিস্থিতিই 'চরম মারাত্মক' আকার ধারণ করেছে।  করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, যিনি দীর্ঘদিন পশ্চিমবঙ্গের চলমান নির্বাচনের প্রচারণায় বিজেপির তরফে ব্যাপকভাবে জনসংযোগের কাজ করছিলেন।।

ভারতে সংক্রমণ যেমন বাড়ছে, তেমনই সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, করোনার নতুন একটি প্রজাতি (ডাবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন) সংক্রমিত হয়েছে ১০টি রাজ্যে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলো। যদিও, করোনার নতুন ঢেউয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পিছনে শুধুমাত্র এই প্রজাতি কাজ করেছ, এমনটা বলা সম্ভব নয়।

এই প্রজাতির ভাইরাসে রয়েছে দুটি প্রজাতির করোনা ভাইরাসের মিশ্রণ। একদিকে ই৪৮৪কিউ ও এল৪২৪আর ভাইরাস এর মিশ্রণে তৈরি হয়েছে এই তৃতীয় প্রজাতিটি। দিল্লিতে ব্রিটেনের করোনা প্রজাতি ও এই জাতীয় করোনা প্রজাতি যৌথ ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। পাঞ্জাবে করোনার নতুন ঢেউয়ে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৮০ শতাংশের শরীরে পাওয়া গিয়েছে ব্রিটেনের করোনা স্ট্রেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। হিসাব অনুসারে, ৬০ শতাংশ আক্রান্তই দুই ভাইরাসের প্রজাতি থেকে তৈরি তৃতীয় ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন।এদিকে, আরেক খবরে জানা গেছে,ভারতের ১৮টি রাজ্যের ৭০ থেকে ৮০ জেলায় ব্রিটেনের করোনা প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেই তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের প্রজাতি অপেক্ষাকৃত কম দেখা যাচ্ছে।

শুধু হাসপাতাল নয়, দেশজুড়ে করোনার প্রবল ঢেউয়ের জন্য জায়গা কমছে অন্ত্যেষ্টিস্থলেও। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃতদের সৎকারের জন্য ধর্মীয় আচারের গণ্ডি পেরনোর জন্য খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর কাছে আবেদন জানিয়েছিল গুজরাতের আহমাদাবাদ প্রশাসন। শহরের ক্যাথলিক বিশপ তা সমর্থন করেছেন। কবর দেওয়ার পরিবর্তে করোনায় মৃতদের দেহ দাহ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি নিজেই।

আহমাদাবাদের ক্যাথলিক বিশপ অ্যাথানাসিয়াস রেথনা স্বামী চলতি সপ্তাহে নগর প্রশাসনকে জানিয়েছেন, করোনায় মৃতদের দেহ দাহ করা হলে তার আপত্তি নেই। কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নতুন ব্যবস্থা মেনে নেওয়ার জন্য শহরের ক্যাথলিক সমাজের কাছে বার্তাও দিয়েছেন তিনি। লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন ক্যাথলিক চার্চের পরিচালক মণ্ডলীর কাছেও। গত ১২ এপ্রিল পাঠানো চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে মৃতদের সৎকার আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ’!

করোনা সংক্রমণের প্রলয়ঙ্করী ঢেউয়ের অভিঘাতে দেশের অনেক শহরের মতোই আহমাদাবাদেও দৈনিক মৃত্যু দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ফলে শ্মশান, কবরস্থানে দীর্ঘ লাইন পড়ছে। তাই সুষ্ঠভাবে সৎকার সম্পন্ন করা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, অভিযোগ উঠেছে শহরের মর্গগুলেতে মৃতদেহ সংরক্ষণ নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। আহমাদাবাদ শহরের পার্সি সমাজও করোনা পরিস্থিতিতে দাহ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, পার্সিদের ধর্মীয় পরম্পরা অনুযায়ী, মৃতদের দেহ শকুন ও চিলের খাদ্য হিসেবে শহরের পাশে কোনও উঁচু জায়গায় পাঁচিল ঘেরা মিনারের উপর রেখে আসা হয়, যাকে 'টাওয়ার অব সাইলেন্স' বলা হয়।

এদিকে চলমান কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ হিন্দু সাধু-সন্ন্যাসী ও সাধারণ নাগরিকের অংশগ্রহণের ফলে করোনা সংক্রমণের গতি প্রবলতর হয়েছে। উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্য প্রদেশের বিভিন্ন শহরে করোনায় ক্রমবর্ধিষ্ণু মৃত্যুর ঘটনায় অব্যাহত রয়েছে প্রজ্বলিত চিতা, যেখানে একের পর এক মৃতদেহ আসছে এবং সেগুলোকে দাহ করতে হচ্ছে।

একাধিক মিডিয়া করোনা বিস্তারের পটভূমিতে ভারতে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে। বলা হচ্ছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগাভাগির সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও রাজনৈতিক হিংসার কারণে যে লোকক্ষয়, আতঙ্ক ও বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সামনে তেমনি মানবিক বিপর্যয় আসতে পারে করোনাজনিত মহামারির ক্ষয়ক্ষতির কারণে।

   

সিনেটর বব মেনেনডেজের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সিনেটর বব মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।

ওই দুজনের বিরুদ্ধে মিশরকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বৈদেশিক নীতিকে প্রভাবিত করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন প্রসিকিউটররা।

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী নাদিনের বিরুদ্ধে নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছে।

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস তাদের অভিযোগে বলেছে, ‘ওই ঘুষের মধ্যে নগদ অর্থ, স্বর্ণ, একটি বাড়ির বন্ধকের জন্য অর্থপ্রদান, একটি কাজের জন্য ক্ষতিপূরণ, একটি বিলাসবহুল যানবাহন এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস অন্তর্ভুক্ত ছিল।’

প্রসিকিউটররা বলেন, ওই সিনেটর দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি করে সোনার বার এবং লুকানো নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী তিনটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। সেগুলো হলো, ঘুষ নেওয়ার ষড়যন্ত্র, পরিষেবা জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং সরকারি অধিকারের আড়ালে চাঁদাবাজি।

অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পরে এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজ বলেছেন, তিনি মিথ্যা এবং অপপ্রচারের শিকার।

তিনি প্রসিকিউটরদেরকে তার এবং তার স্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যা দাবির জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, বিরোধীরা প্রথম প্রজন্মের ল্যাটিনো আমেরিকান, যারা মার্কিন আইনসভায় সততার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা মেনে নিতে পারে না।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভিযোগকারীরা কংগ্রেসনাল অফিসের স্বাভাবিক কাজকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। এ ছাড়াও, তারা শুধুমাত্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবি করে সন্তুষ্ট নয়, তারা আমার স্ত্রীকেও আক্রমণ করেছে।’

প্রভাবশালী ইউএস সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান ৬৯ বছর বয়সি সিনেটর মেনেনডেজের বিরুদ্ধে এর আগেও নিউ জার্সিতে সরকারি সুবিধার বিনিময়ে একজন ধনী পৃষ্ঠপোষকের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ফ্লাইট, প্রচারাভিযানে অবদান এবং অন্যান্য ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল।

২০০৬ সাল থেকে মার্কিন সিনেটে থাকা মেনেনডেজ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সিনেটর হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাকে দুটি ফৌজদারি অপরাধমূলক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মেনেনডেজ প্রথম প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন যে, তিনি গত অক্টোবরে একটি নতুন ফেডারেল তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

ঘুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রসিকিউটররা মেনেনডেজের নিউ জার্সির বাড়ি, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ, নগদ প্রায় ৫ লাখ ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার, স্বর্ণের বার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছেন৷

ব্যবসায়ী ওয়ায়েল হানা, হোসে উরিবে এবং ফ্রেড ডাইবসকেও ঘুষ প্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা বলেন, হানা, যিনি মূলত মিশর থেকে ২০১৮ সালে মেনেনডেজ এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে নৈশভোজ এবং বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই বৈঠকে মিশরের কর্মকর্তারা মার্কিন সামরিক সহায়তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে সিনেটরকে চাপ দিয়েছিলেন।

মিশর ওই সময় মার্কিন সামরিক সাহায্যের বৃহত্তম প্রাপকদের মধ্যে একটি ছিল। কিন্তু, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০১৭ সালে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্রের উন্নতি না করা পর্যন্ত ওই সাহায্য বাতিল করে।

প্রসিকিউটররা বলেন, ২০১৮ সালে একটি সভায় মেনেনডেজ হানাকে সাহায্যের অবস্থা সম্পর্কে অপ্রকাশ্য তথ্য জানান। তারপরে হানা একজন মিশরীয় কর্মকর্তাকে টেক্সট করেছিলেন যে, মিশরে ছোট অস্ত্র ও গোলাবারুদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

নৈতিকতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিক্সের প্রেসিডেন্ট শুক্রবার এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।

  করোনা ভাইরাস

;

মুসলিম সাংসদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে তোপের মুখে বিজেপির সাংসদ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি। ছবি : সংগৃহীত

বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের রাজনৈতিক দল বিজেপির সাংসদ রমেশ বিধুরি কর্তৃক সংসদে দাঁড়িয়ে মুসলিম এক সাংসদের প্রতি করা সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

রমেশ বিধুরি তার বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছ থেকে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) কঠোর পদক্ষেপের একটি সতর্ক বার্তা পেয়েছেন৷

বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়ে রমেশকে ১৫ দিনের মধ্যে তার অসংসদীয় ভাষার ব্যবহারের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বিজেপিও।

লোকসভার কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, স্পিকার চন্দ্রযানের সাফল্য নিয়ে আলোচনার সময় মুসলিম সাংসদ দানিশ আলীর (বিএসপি) প্রতি রমেশ বিধুরির দ্বারা ব্যবহৃত আপত্তিকর শব্দগুলোর গুরুতর নোট নেওয়া হয়েছে এবং এই ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এনডিটিভি জানিয়েছে লোকসভার একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রমেশ বারবার দানিশ আলীকে ইসলামোফোবিক এবং সন্ত্রাসী বলে গালিগালাজ করছেন।

ওই ঘটনায় দানিশ আলী স্পিকারকে এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আপনার নেতৃত্বে একটি নতুন সংসদ ভবনে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা এই মহান জাতির একজন সংখ্যালঘু সদস্য এবং একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসাবে আমার জন্য হৃদয়বিদারক।’

ওই চিঠিতে তিনি ঘটনাটি বিশেষাধিকার কমিটির কাছে উল্লেখ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় দানিশ আলী জানান, তিনি অপমানে সারা রাত ঘুমাতে পারেননি।

বিরোধী নেতারা বিজেপি সাংসদকে নিন্দা জানিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানোর পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘সদস্যের মন্তব্যে বিরোধীরা আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’

কিন্তু বিরোধীদের দাবি হলো, রমেশকে বরখাস্ত বা গ্রেপ্তার করা উচিত।

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘এটি একটি চরম লজ্জা। রাজনাথ সিংয়ের ক্ষমা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সংসদের অপমান, প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য অপমান।’

কংগ্রেস বলেছে, আগের অধিবেশনে তাদের লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে মন্ত্রীদের অপমান করার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, একজন বিজেপি সাংসদের জন্য আরও খারাপ কথা বললেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আম আদমি পার্টি (এএপি) ভিডিওটি শেয়ার করে একটি পোস্টে প্রশ্ন করে বলেছে ‘বিজেপির দিল্লির সাংসদ সংসদে স্পিকারের সামনে এই শব্দগুলো দিয়ে অন্য একজন মুসলিম এমপিকে ফোন করছেন এটি কি বিজেপির সংস্কৃতি?’

ওই ঘটনাকে সংসদের ইতিহাসে কালো দিন বলে অভিহিত করেছে আপ।

আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা বলেছেন, তিনি সংসদে বিজেপি সাংসদ দ্বারা ব্যবহৃত সাম্প্রদায়িক অপবাদে দুঃখিত।

তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখ পেয়েছিলাম, কিন্তু অবাক হইনি। এটাই প্রধানমন্ত্রীর বসুধৈব কুটুম্বকমের সত্য। আমাদের ভাবতে হবে যে সংসদে একজন সাংসদের জন্য যদি এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, তাহলে মুসলিম, দলিতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ভাষাকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে? এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রমেশ বিধুরির বিষয়ে একটি কথাও বলেননি।’

ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহ রমেশের ব্যবহৃত অপমানজনক শব্দগুলো তুলে ধরে একটি পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এই ঘৃণ্য মাননীয় সাংসদের জিহ্বা কত সহজে গুটিয়ে যায়! বিজেপি কি এই ঘৃণ্য বিদ্বেষের সঙ্গেই সহাবস্থান করে?’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবদুল্লাহ বলেন, ‘তিনি যদি আমাদের সন্ত্রাসী বলে থাকেন, আমরা তাতে অভ্যস্ত। কিন্তু, তিনি সব মুসলমানদের বিরুদ্ধেই এই কথা বলেছেন। এটা আমাদের খুবই ক্ষুব্ধ করে। এটা শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের মানসিকতা প্রকাশ করে। নতুন সংসদ, কিন্তু পুরনো মানসিকতা।’

  করোনা ভাইরাস

;

ক্রিমিয়ার নৌবাহিনীর সদরদপ্তরে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী সেতু। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী সেতু। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর সদরদপ্তরে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ওই হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

ইউক্রেন তার প্রতি আক্রমণের ক্ষেত্রে ক্রিমিয়াকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। সম্প্রতি উপদ্বীপটি পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতির কারণে সেখানকার সামরিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ তীব্র করেছে কিয়েভ, যা ২০১৪ সালে সংযুক্ত করেছিল মস্কো।

ক্রিমিয়ার বৃহত্তম শহর সেবাস্তোপলের গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র নৌবাহিনীর সদরদপ্তরে আঘাত হেনেছে।’

রাজভোজায়েভ বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরোগুলো একটি থিয়েটারের কাছে পড়েছে। তাই বাসিন্দাদের সাইটটি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

দ্বিতীয় পোস্টে তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, আরেকটি হামলা আসন্ন হতে পারে। তাই শহরের বাসিন্দাদের তাদের বাড়ির ভেতরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অনুরোধ বার্তায় তিনি বলেন, ‘সবাই মনোযোগ দিন! আরেকটি হামলা হতে পারে। দয়া করে শহরের কেন্দ্রে যাবেন না। ভবন ছেড়ে বের হবেন না।’

রাজভোজায়েভ আরও বলেন, ‘যারা নৌবাহিনীর সদরদফপ্তরে কাছে ছিলেন, তারা সাইরেনের শব্দ পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এগিয়ে যান।’

তিনি বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আগুন নেভানোর জন্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।’

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ওই হামলায় এক সেনা নিহত হয়েছে। পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা গুলি করা হয়েছে।’

তিনটি ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে বেসামরিক পণ্যবাহী জাহাজে নিরাপদ যাতায়াতের অনুমতি দেয়, এমন একটি চুক্তি থেকে মস্কো বেরিয়ে যাওয়ার পর কৃষ্ণসাগর এবং এর আশেপাশে ইউক্রেন ও রাশিয়ার হামলা বেড়েছে।

ইউক্রেন তার মিত্রদেরকে তার সশস্ত্র বাহিনীকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের খুব ভেতরের অবস্থানগুলো লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।

কিন্তু, পশ্চিমা নেতারা দ্বিধায় ছিলেন যে, ইউক্রেন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেলে রাশিয়ার ভূখণ্ডকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এবং এর ফলে সংঘাত বাড়তে পারে।

যদিও, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য-উভয়ই কিয়েভ বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।

ক্রিমিয়ার উপর ক্রমবর্ধমান হামলার অংশ হিসাবে ইউক্রেন চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিল যে, এটি সাকি শহরের কাছে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে।

এদিকে, ইউক্রেনের এসবিইউ সিকিউরিটি সার্ভিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় বিমানঘাঁটিতে অন্তত এক ডজন যুদ্ধবিমান এবং প্যান্টসির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল।

সেখানে এয়ারফিল্ডে ড্রোন অপারেটরদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও রয়েছে, যা ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করে রাশিয়া।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের বাহিনী একটি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং দুটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

  করোনা ভাইরাস

;

পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে, এক্স-রে রিপোর্টে মিলল ছুরি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তলপেটে হালকা ব্যথা নিয়ে গিয়েছিল হাসপাতালে। ডাক্তাররা তাকে এক্স-রে করার নির্দেশ দেন। তাদের পরামর্শে এক্স-রে করার পর সেই রিপোর্টে আবিষ্কার হলো অদ্ভুত এক চিত্র! যা দেখে রীতিমতো চমকে গেলেন সবাই। রিপোর্টে উঠে আসলো পেটের ভিতর ৬ ইঞ্চি ধারালো এক ছুরির চিত্র।

গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) এমন ঘটনা ঘটেছে নেপালের ২২ বছর বয়সী এক তরুণের সাথে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউজ উইকের এক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের এক তরুণ পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ডাক্তারদের পরামর্শে এক্স-রে রিপোর্টে উঠে আসলো ৬ ইঞ্চি ধারালো এক ছুরির চিত্র। 

গণমাধ্যমটি আরও জানায়, ওই তরুণ হাসপাতালে আসার আগের দিন কয়েকজন তরুণ দ্বারা মারধরের শিকার হন। মারধরের একপর্যায়ে তার পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে গেলে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ক্ষত স্থানটি সেলাই করে দেন। কিন্তু, তার পেটের ভেতরে যে ধারালো ছুরি আছে, সেই বিষয়ে কারও কোনও ধারণাই ছিল না। কারণ ওই তরুণের শরীরের ভেতরে ছুরি ঢুকে যাওয়ার মতো বড় কোনও জখম দেখতে পাওয়া যায়নি। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

কিউরিয়াস জার্নালের এক কেস রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকটি বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ ছাড়াই বাম তলপেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল। এক্স-রে নেওয়ার পরে ডাক্তাররা দেখতে পান যে বিশাল ধারালো ছুরিটি তার পেটের ডান দিক থেকে বাম দিক জুড়ে ছিল। তবে এতে তার অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গের ক্ষতি হয় নি।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, ছুরিকাঘাতের ফলে শরীরের অভ্যন্তরে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং পেটের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। ছুরিকাঘাতের ফলে পেরিটোনাইটিস (পেটের আস্তরণের প্রদাহ) সংক্রমণও হতে পারে।

নিউজ উইককে চিকিৎসকরা জানান, এক্স-রে রিপোর্টে আমরা ওই তরুণের তলপেটের ভেতরে ছুরিটি ভাসমান অবস্থায় দেখতে পাই। পরবর্তীতে তলপেট থেকে ছুরি অপসারণের জন্য ওই তরুণের ল্যাপারোটোমি করা হয়। এ সময় তার তলপেটের টিস্যুতে মোড়ানো অবস্থায় ছুরিটি দেখা যায়। তবে পেটের ভিতরে ছুরির উপস্থিতিতে তার অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গের ক্ষতি হয়নি।

চিকিৎসকরা আরও জানান, তরুণের শরীর থেকে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে ছুরিটি সরানো হয়েছে। পাঁচ দিন পর তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ পর তার ফলো-আপের জন্য আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।

  করোনা ভাইরাস

;