ম্যাটের করোনা জয়ের গল্প!

  করোনা ভাইরাস
  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ম্যাট ডকরে, করোনাকে জয়করে সুস্থ হয়ে এখন ঘরে। তিনি বলছিলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাকালীন তার অভিজ্ঞতার কথা।

কোভিড -১৯'এ আক্রান্ত হওয়া এই ব্যক্তি জানান, শুরুতে খুব খারাপভাবে কাশি হচ্ছিল। ফুসফুসে চাপ পড়তে থাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে কাশির জন্য বিছানা থেকে নামতে পারছিলো না। এমন অবস্থা দেখে তার স্ত্রী সাহায্যের জন্য ৯৯৯ এ কল করেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ডাক্তার দেখলেন ম্যাট ডকরের একটি ফুসফুস বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অন্যটিও ভালোভাবে কাজ করছে না।

বিজ্ঞাপন

৩৯ বছর বয়সী ম্যাট হাসপাতালে একাই ছিলেন। তার পরিবারের কাউকেই হাসপাতালে তার রুমে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তখন ম্যাট শুধুমাত্র চিকিৎসকরা কী বলছেন তা বুঝতে লড়াই করছেন। কারণ তারা হ্যাজমাট স্যুট পরেছিল এবং মুখোশ পড়ে কথা বলছিলেন। এ সময় তার বারবার দীর্ঘশ্বাস পড়ছিল।

তিনি বলেন, আইটিইউতে তার আশেপাশে যারা ছিল তারা সবাই ছোট বাচ্চা ও তার সমবয়সী।

বিজ্ঞাপন

বাকিংহামশায়ারের মার্লো থেকে আসা ম্যাট, প্রথমে ভেবেছিলেন তিনি কোভিড -১৯-এর পরিবর্তে ঠান্ডা বা ফ্লুতে ভুগছেন। মার্চ মাসে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে লিগ কাপ ফাইনালের জন্য ওয়েম্বলির দিকে যাওয়ার সময় তার লক্ষণগুলো ধরা পরে। তার প্রচন্ড শুকনো কাশি এবং মাথা ব্যথা ছিল। এসময় তার বাবা-মা তাকে একটি ডিভাইস পাঠিয়েছিলেন যা তার হার্টের হার এবং অক্সিজেনের পরিপূর্ণতা পরিমাপ করতে পারবে। যেখানে তার দেহে অক্সিজেন কমপক্ষে ৯৬% হওয়া উচিত ছিল সেখানে তা ৮৮% নেমে আসলে ম্যাট এর ভয়াবহতা আঁচ করত পারেন। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ম্যাট বলেন, 'এ সময় আমি সব স্বাদ, গন্ধ হারিয়ে ফেলি। এবং এটি সত্যিই খারাপ তাপমাত্রা ছিলো। আমি অবশ্যই যেকোনো কিছু দিয়ে এখনও অনুভব করেছি এটি সবচেয়ে খারাপ'।

ম্যাট আরো বলেন, 'হাসপাতালে পৌঁছানোর সাথে সাথেই পেছনে ভেন্টিলেটর প্যাকসহ হ্যামাট স্যাউট পরা দুইজন লোক আমাকে সরাসরি আইসোলেশনে নিয়ে গেলো'। তারা আমাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছিলো। পুরো সময়টাআমার কাছে সিনেমার মতো মন হচ্ছিলো। আমার পাশে আমার পরিবারের কেউই ছিলো না। তারা মাস্কের ভেতর থেকে কি কি বলছিলো আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এটা খুব, খুব ভীতিজনক ছিল'।

তিনি বলেন, 'ইন্টেন্সিভ কেয়ারে নেওয়ার পর আমার শরীরে সবগুলো মেশিন লাগানো হয়। আমি শুধু অ্যালার্ম শুনতে পাচ্ছিলাম। আমার একটি ফুসফুস অকেজো হয়ে গিয়েছিলো, আরেকটিও ভালোভাবে কাজ করছিলো না। অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছিলো আমার শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখার জন্য শরীরে ভেন্টিলেটর লাগানো হবে। কিন্তু শেষমেশ তার দরকার হয়নি।

তিনদিন এই অবস্থায় থাকার পর ম্যাট সুস্থ হতে লাগলেন। এ সময় তার মনে হচ্ছিল সব কিছু তার ফিরে আসছে। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ম্যাট।

হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও ডাক্তারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন করোনা জয়ী ম্যাট।

তিনি বলেন, নার্সরা খুবই দুর্দান্ত ছিলেন এবং তারা আমাকে শিখালেন কীভাবে আবার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয়। মনোবলকেও চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করেছেন তারা।