কেন বলবেন আলহামদুলিল্লাহ?



নোমান আলী খান
একজন মুসলিম কখনও হতাশ হতে পারে না

একজন মুসলিম কখনও হতাশ হতে পারে না

  • Font increase
  • Font Decrease

মুসলিম সমাজের একদল মানুষ রয়েছেন, যারা তাদের জীবনের বেশিরভাগ সময়ে সবক্ষেত্রে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ।’ নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহর রহমত যে, আমরা এমন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত যারা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলার সৌভাগ্য পেয়েছি। আমাকে যদি বলা হয় ‘আলহামদুলিল্লাহ’র অর্থ নিয়ে আলোচনা করতে, আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করতে পারব ইনশাআল্লাহ; তবে প্রকৃতপক্ষে এর মূল অর্থ দুটি। প্রথমটি হলো, আল্লাহর প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ, কৃতজ্ঞতা (শুধু) আল্লাহর জন্য। আর দ্বিতীয় অংশ হলো, প্রশংসা, প্রশংসা আল্লাহর জন্য। বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করলে দেখা যায়, কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসা দুটি আলাদা বিষয়।

একদিকে প্রশংসা করা অর্থে বোঝানো আর অন্যদিকে কৃতজ্ঞতা অর্থে, দুটি ভিন্ন দিক। এখন চলুন আমরা এই দুটি বিষয়ের পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করি।

মনে করুন, আপনি একটি সুন্দর বাড়ি দেখে প্রশংসা করলেন, এক্ষেত্রে কিন্তু আপনি বাড়িটিকে ধন্যবাদ দিতে যাবেন না। আবার আপনি হয়তো একজন খেলোয়াড় দেখলেন, যিনি ফুটবল খেলেন এবং তিনি একটি অসাধারণ গোল করলেন। আপনি ওই খেলোয়াড়ের প্রশংসা করবেন; কিন্তু আপনি ওই খেলোয়াড়কে ধন্যবাদ দেবেন না অথবা আপনি তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আবার মাঝে মাঝে উল্টোটাও ঘটে। কিছু মানুষের প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ থাকেন যদিও আপনি কখনও তাদের প্রশংসা করবেন না।

এমনটাও ঘটতে পারে, যার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হচ্ছে- আল্লাহতায়ালা একজন মুসলিমকে সব অবস্থাতেই তার বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে আদেশ করছেন, এমনকি বাবা-মা অমুসলিম হলেও! যদি তারা আপনাকে শিরক করার জন্য জোর করেন, তারা চান আপনি ঈমান ত্যাগ করেন, তারপরও আপনাকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আপনি তাদের শিরকের প্রশংসা করবেন না; কিন্তু তারপরও আপনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন।

সুতরাং, জীবনের মোড়ে মোড়ে আপনি প্রশংসা পেতে পারেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া, আবার কখনও কখনও কৃতজ্ঞতা পাবেন প্রশংসা ছাড়া। বিষয়টি আরও সহজ করে তুলে ধরার জন্য আমি আপনাদের কাছে আরও একটি উদাহরণ দেব। যেখান থেকে একজন ব্যক্তি যার মধ্যে কৃতজ্ঞতা আছে; কিন্তু প্রশংসা নেই, বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।

আপনারা ফেরাউনের কথা জানেন। ফেরাউন পছন্দ করুক কিংবা না করুক সে হজরত মুসা (আ.) কে তার প্রাসাদে বড় করেছে। পরে দীর্ঘ সময়ের পর হজরত মুসা (আ.) ফেরাউনের কাছে ফিরে আসেন। এরপর ফেরাউন হজরত মুসা (আ.) কে মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিল, তুমি কি এখানে অনেক বছর থাকনি? তুমি কি এখানে অনেক বছর পার করোনি? আমি কি তোমাকে শৈশবকাল থেকে বড় করিনি? ফেরাউন কথাগুলোর মাধ্যমে তার দয়ার কথা হজরত মুসা (আ.) কে মনে করিয়ে দিচ্ছিল। স্বাভাবিকভাবে কেউ যখন আপনার উপকার করে, আপনি তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকেন। তাই হজরত মুসা (আ.) স্বয়ং এই উপকারের কথা স্বীকার করেন এবং ফেরাউনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। হজরত মুসা (আ.) বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি আমার প্রতি দয়া করেছিলে।’

আপনি যখন কারও প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন ঠিক সঙ্গে সঙ্গেই আপনি তাকে ধন্যবাদ দেবেন। একই কাজ হজরত মুসা (আ.)ও করেন; তিনি ফেরাউনকে ধন্যবাদ দেন। কিন্তু হজরত মুসা (আ.) তার জীবনদ্দশায় কখনোই তার প্রশংসা করেননি। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, আপনি কাউকে ধন্যবাদ দিতে পারেন প্রশংসা ছাড়া আর কাউকে প্রশংসা করতে পারেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া।

যখন আমরা আলহামদুলিল্লাহ বলি, এর অর্থ আমরা বলছি যে, ‘আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি তিনি যা কিছু করেন তার জন্য।’ আল্লাহ পাক যা করেন তার চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। তার প্রশংসার পর আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি যে, তিনি যা করেছেন সেটার জন্য।

আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি তিনি যা কিছু করেন তার জন্য 

 

আজ উপস্থিত অনেকেই বাইরে বসে আছেন। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যার জন্য হয়তো এয়ারকন্ডিশন যথেষ্ট নয় এবং ভাবছেন- উফ যা গরম। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আপনার মনে প্রথমে আসা উচিত ছিল-আলহামদুলিল্লাহ আজ বেশ গরম। এর মানে কি আপনি জানেন? এর অর্থ আল্লাহকে ধন্যবাদ গরমের জন্য এবং আমি আল্লাহর প্রশংসা করি গরমের জন্য। এটি ভিন্ন ধারার চিন্তা, যা আর দশজনের মতো নয়।

কিছু মানুষ আছে যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে। সব ধর্মের মানুষের সঙ্গেই আমার দেখা হয়। কিছু মানুষ আছে যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে; কিন্তু তাদের যেটা নেই, সেটা হলো ‘আলহামদুলিল্লাহ।’

আবার কিছু মুসলিম আছে যারা আলহামদুলিল্লাহ অর্থ বোঝে না। তাই মাঝে মধ্যে তারা বলে, ‘আমি বেতন বেশি পাই না, তবে যাই হোক, আলহামদুলিল্লাহ!’ বাস্তবিক অর্থে আপনি তখন আলহামদুলিল্লাহ বলছেন না। আপনি অভিযোগ করছেন আলহামদুলিল্লাহ বলার মধ্য দিয়ে। আবার হয়তো আপনি এবং আপনার পরিবার সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয়- পরিবারের সবাই কেমন আছে? আর জবাবে যদি বলেন, এই আছে আরকি, আলহামদুলিল্লাহ। তাহলে কিন্তু বিষয়টি ভিন্ন। কেননা, এই আলহামদুলিল্লাহ বলা কিন্তু সত্যিকারের আলহামদুলিল্লাহ নয়। আলহামদুলিল্লাহ হচ্ছে আপনার অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনি কৃতজ্ঞ। যা কিছু ভুল ঘটে যাচ্ছে, তার মাঝেও আপনি ভালো কিছু খুঁজে পাবেন।

আপনি যদি গরম অনুভব করেন, অন্তত আপনি অসুস্থ তো বোধ করছেন না। আপনার আরও কিছু খারাপ হতে পারত। আপনি জানেন, যদি আপনার গাড়ির ট্রান্সমিশন সমস্যা থাকে, অন্তত গাড়ির ইঞ্জিনে তো কোনো সমস্যা নেই। আপনার অনেক কিছুই ঠিকমতো চলছে।

আমরা সে দলের মানুষ, যারা আলহামদুলিল্লাহ বলি। কিন্তু তার অর্থ জানেন কি? এর অর্থ-আমরা সবসময় কৃতজ্ঞ, আমরা সবসময় ইতিবাচক। আমরা যদি আলহামদুলিল্লাহ শব্দটা বুঝতাম, তাহলে আমরা কখনও হতাশ হতাম না। একজন মুসলিম কখনও হতাশ হতে পারে না।

বর্তমান সময়ে আপনি উম্মাহর মধ্যে দেখতে পারবেন, কিছু মানুষ মুসলিমদের অবস্থার জন্য অভিযোগ করছে। যেমন ধরুন, আমরা মুসলিমদের অজ্ঞতার জন্য অভিযোগ করি অথবা মুসলিমদের মাঝে দুর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগ করি। আমরা মূলত করতে পারি অভিযোগ, অভিযোগ আর শুধু অভিযোগ। আমি আপনাদের বলছি, তিনি আল্লাহ, যিনি আমাদের অবস্থার পরিবর্তন করেন। আমাদের যা করতে হবে তা হলো, আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে। আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে, ইতিবাচক দলের মানুষ হতে হবে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ : কারিশমা আনান

   

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;