অনবদ্য খাদ্য উপাদান ওটস

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাস্থ্যকর খাবার ওটস। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যকর খাবার ওটস। ছবি: সংগৃহীত

ওটসকে বলা হয়ে থাকে অন্যতম স্বাস্থ্যকর ও উপকারি প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান।

ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর ওটস নানান ভাবে ও কারণে স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত।

গ্লুটেন ফ্রি ও আঁশযুক্ত এই খাবারে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ছাড়া আরও রয়েছে ম্যাংগানিজ, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়রন, জিংক, ফলেট ও ভিটামিন-বি১, বি৫।

বিজ্ঞাপন

চলুন জেনে নেওয়া যাক বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ওটসের বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা।

হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে

ওটসে রয়েছে বেশ শক্তিশালী আঁশ যা ‘বেটা-গ্লুকেন’ নামে পরিচিত। এই আঁশ রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ওটসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিন-সি এর সাথে মিশ্রিত হয়ে এলডিএল অক্সিডেশনকে প্রতিরোধ করে। ক্ষতিকর এই অক্সিডেশন হৃদরোগের অন্যতম একটি কারণ।

বিজ্ঞাপন

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের তথ্য মতে, হোল গ্রেইন ওটস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকর।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/16/1537081484445.jpg

ডায়বেটিস কমাতে উপকারি

উচ্চমাত্রার আঁশযুক্ত ওটসে রয়েছে লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স, যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আঁশযুক্ত এই খাদ্য উপাদানটি পরিপাক হতে অনেক লম্বা সময় নেয়। ফলে রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে বেড়ে যাবার কোন সম্ভবনা থাকে না। এছাড়া ইনসুলিনের মাত্রাও কমায় ওটস।

গবেষণালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, ওটস খাওয়ার ফলে টাইপ-২ ডায়বেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ ও লিপিড প্রোফাইলের উপরে উপকারি প্রভাব ফেলে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

বেশিরভাগ মানুষ ওটসের সাথে পরিচিত, খাদ্য উপাদানটির এই গুণের জন্য। অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও, এই উপকারিতার জন্যেই নিয়মিত ওটস খান অনেকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/16/1537081384550.jpg

তাইওয়ানিজ এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, ফ্লেভার ও চিনি বিহীন ওটস নিয়মিত খাওয়ার ফলে বাড়তি ওজন কমার সঙ্গে পেটের মেদও কমে যায়। ওটসের আঁশ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে বলে সহজে ক্ষুধাভাব দেখা দেয় না। যে কারণে উপকারি ফল যেমন: কলা, আপেল, নাশপাতি ও বিচিন্ন ধরণের বাদামের সাথে সকালের নাস্তায় ওটস খুবই জনপ্রিয় নাস্তা।

কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে

যেহেতু ওটসে রয়েছে উচ্চমাত্রার অদ্রবণীয় (Insoluble) আঁশ, এই খাদ্য উপাদানটি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে দারুন কার্যকরী। শুধু কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা নয়, পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্যেও ওটসের অবদান দারুণ।

আরও পড়ুন: সুস্বাস্থ্যের জন্য আঁশযুক্ত এই খাবারগুলো খেতে হবে প্রতিদিন

ক্যান্সারের বিপক্ষে লড়ায় করে

প্রায় ১২টি ভিন্ন গবেষণায় ৮০০,০০০ জন মানুষের উপর পরীক্ষা চালানো হয়। তাদের প্রত্যেককেই প্রতিদিন বড় এক বাটি ওটস খেতে দেওয়া হয়। দেখা গেছে, নিয়মিত ওটস খাওয়ার ফলে ক্যান্সারে মৃত্যুর সম্ভবনা প্রায় ২০ শতাংস পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রাকৃতিক এই খাদ্য উপাদানে থাকা প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে মূলত। বিশেষত রেকটাল ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে ওটস বিশেষ উপকারি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

ওটসের বেটা-গ্লুকেন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কারণ আমাদের শরীরের বেশিরভাগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাধারী কোষ বিশেষ এক ধরণের রিসেপ্টর দ্বারা গঠিত। যা খুব সহজেই বেটা-গ্লুকেনকে শোষণ করে নেয়। যার ফলে শ্বেত রক্ত কণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

নরোয়েজিয়ান এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, অন্যনা যেকোন খাদ্য উপাদানের বেটা-গ্লুকেনের চাইতে ওটসে উপস্থিত বেটা-গ্লুকেন অধিকতর উপকারি ও কার্যকরি।