আট ঘণ্টার বেশি ঘুমানো কতটা ক্ষতিকর?

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আট ঘণ্টার কম ঘুমালে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়- এই কথাটি সবসময় বলা হলেও, আট ঘণ্টার বেশি ঘুমালে কি হয় সেটা নিয়ে তেমন একটা আলোচনা করাই হয় না।

আট ঘণ্টার কম ঘুমানোর মতোই, আট ঘন্টার বেশি ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে।

সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণার তথ্য প্রকাশ করে, অতিরিক্ত সময় ঘুমালে স্বাস্থ্যজনিত বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘন্টার ঘুম প্রয়োজন। তার খুব বেশি কিংবা কম হলেই সমস্যা দানা বাঁধতে শুরু করে। কম ঘুমালে ক্ষুধামন্দা, ওজন হ্রাস পাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়াসহ নানান উপসর্গ দেখা দেয়। আজকের ফিচার থেকে জেনে রাখুন অতিরিক্ত ঘুমানোর ফলে কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়।

বিজ্ঞাপন

ডায়বেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়

২০১৩ সালের একটি গবেষণার তথ্য পরিষ্কারভাবেই প্রকাশ করেছে, যে ব্যক্তি দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি ঘুমান, তার টাইপ-২ ডায়বেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায় ও গ্লুকোজ টলারেন্সের ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়া ৭-৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম ডায়বেটিস সংক্রান্ত জটিলতা বৃদ্ধি করে দেয় অনেকটা।

গর্ভধারণে জটিলতা দেখা দেয়

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/08/1549604691924.jpg

বিজ্ঞাপন

কোরিয়ান রিসার্চ দল তাদের গবেষণা থেকে ২০১৩ সালে ৬৫০ জন নারীর উপর পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে- যারা দৈনিক নিয়ম মেনে ৭-৮ ঘন্টার জন্য ঘুমান তাদের গর্ভধারণের কোন ধরণের জটিলতা দেখা দেয় না এবং তাদের মাসিক সঠিক সময়ে নিয়মিত হয়। অন্যদিকে যাদের ঘুমের সময় প্রয়োজনের চাইতে বেশি, তাদের ইনফার্টিলিটির সমস্যা তথা গর্ভধারণে জটিলতা দেখা দেয়।

মানসিক সমস্যা ও বিষণ্ণতা

অনেকেই হয়তো জানেন না যে অতিরিক্ত ঘুমের ফলে মানসিক বিষণ্ণতা দেখা দেয়। যদিও বিষণ্ণতায় ভোগা মানুষের মাঝে ইনসমনিয়ার প্রভাব দেখা দেয় বেশি, ১৫ শতাংশ মানুষের মাঝে বেশি ঘুমানোর ফলে বিষণ্ণতার সমস্যাটি দেখা দেয়।

নির্দিষ্ট সময় মতো যারা ঘুমান, তাদের তুলনায় যারা বেশি সময় ঘুমান তাদের মাঝে মানসিক অশান্তি তথা অ্যাংজাইটির সমস্যাটি বেশি থাকে। ঘুমের উপর পরীক্ষা ও গবেষণা করে জানা গিয়েছে, ১০ ঘন্টার ঘুমের ফলে মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়া জন হপকিন্স মেডিকেল স্কুলের ভিন্ন একটি গবেষণার তথ্য জানায়, অতিরিক্ত সময় ঘুমানোর ফলে শরীরের ঘুমের সুনির্দিষ্ট সাইকেল নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলেই মূলত বিষণ্ণতা দেখা দেয়।

বৃদ্ধি করে প্রদাহ

অতিরিক্ত ঘুমানোর ফলে হৃদরোগ। আলঝেইমারের মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বর শারীরিক সমস্যা তৈরি হবার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়। গবেষকেরা জানান, যে নারী আট ঘণ্টার বেশি ঘুমান তার সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন এর মাত্রা ৪৪ শতাংশ বেড়ে যায়। এই সকল সমস্যার শুরু হয় শরীরের ভেতরের প্রদাহ তৈরি হওয়া থেকেই।

ব্যথার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়

ব্যথাভাবকে প্রশমিত করতে ও শরীরে আরাম প্রদান করতে পরিমিত ঘুম খুবই প্রয়োজন। কিন্তু এই ঘুমের মাত্রা যখন বেড়ে যাবে, তখন সেটা ব্যাক ফায়ার করবে। অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত সময় ঘুমানোর ফলে বেশ কিছু শারীরিক ব্যথা বেড়ে যায় অনেকটা। পিঠে/কাঁধে ব্যথা, ঘনঘন মাথাব্যথা দেখা দেওয়া তার মধ্যে অন্যতম। কারণ শরীর অতিরিক্ত ঘুমের প্রভাবে অভ্যস্ত হতে পারে না।

আরও পড়ুন: দুপুরে খাওয়ার পর কেন ঘুম পায়?

আরও পড়ুন: কেন দেখা দিচ্ছে ক্লান্তিভাব?