শিশুরা দেরিতে ঘুমালে বাড়বে ওবেসিটির সম্ভাবনা
শিশুদের ঘুমানো নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়তে হয় বাবা-মায়েদের। কিন্তু শিশুরা যতই ঘুমানো নিয়ে সমস্যা তৈরি করুক না কেন, রাত গাড় হওয়ার আগেই তাদের ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
কারণ জার্নাল পেডিয়াট্রিকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক সময়ের এক গবেষণার ফল জানাচ্ছে, দেরিতে ঘুমানোর সাথে শিশুদের ওবেসিটিজনিত জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ও সম্পর্ক রয়েছে। এই গবেষণাটির জন্য সুইডেনের ১০৭ জন শিশুর উপর করা হয়, যেখানে ৬৪ জন শিশুর বাবা-মা ছিলেন ওভারওয়েট অথবা ওবিস।
গবেষণার শুরুতে গবেষকেরা প্রতিটি শিশুর ওজন, উচ্চতা ও কোমরের মাপ নিয়ে রেখেছিলেন। এই গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের বয়স ছিল ১ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত। গবেষণার শুরুর দিকে প্রতিটি শিশুর সকল মাপ একই ছিল। এরপর গবেষণা চলাকালীন সময়ে প্রতি বছরে টানা সাতদিনের জন্য তাদের ঘুম পরিমাপ করা হয় ট্র্যাকারের মাধ্যমে। যেটা তাদের কোমরের সাথে সংযুক্ত করে রাখা ছিল।
গবেষণার কাজ শেষে গবেষকেরা দেখতে পান, স্বভাবগত কারণে যে সকল শিশুদের রাতে দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস (দেরী বলতে রাত ৯টার পর) রয়েছে তাদের কোমরের মাপ ও বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) অন্য শিশুদের চাইতে বেশি হয়ে থাকে।
এই গবেষণার প্রধান ও সুইডেনের ক্যারোলিক্সা ইন্সটিটিউটের পেডিয়াট্রিক ড. ক্লড মার্কাস বলেন, ‘দেরিতে ঘুমানোর ব্যাপারটি অন্যতম একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যা বাড়তি ওজন তৈরির সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে শিশুদের যদি রাতে দ্রুত ঘুম পাড়ানো হয় সেটা কি কোন পরিবর্তন আনবে কিনা সেটা সম্পর্ক এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
মার্কাস যেটা বোঝাতে চেয়েছেন, রাত ৯টার পরেও জেগে থাকার ফলে শিশুদের সার্বিক জীবন ব্যবস্থার উপরেই বড়সড় একটি পরিবর্তন চলে আসে। যার ফলে সহজেই ওজন বাড়ার মত বিড়ম্বনা দেখা দেয় এবং এর সূত্রতা থেকেই দেরীতে ঘুমানো ও ওজন বাড়ার সংযোগ দেখা দিয়েছে।
ইতোপূর্বে একটি গবেষণার ফল প্রকাশ করেছিল, ঘুমের সময়ের সাথে শিশুকালে ওবেসিটির সমস্যা দেখা দেওয়ার মাঝে সম্পর্ক রয়েছে। এদিকে মার্কাসের সাম্প্রতিক সময়ের এই গবেষণা থেকে জানাচ্ছে, রাত নয়টার পর শিশুরা যত লম্বা সময়ের জন্যই ঘুমিয়ে থাকুক না কেন, তাদের ওজন বাড়ার ও ওবেসিটি দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বেশি থেকেই যায়।
রাতে ঘুমানোর এই নিয়মটি কি শুধুমাত্র দেশভিত্তিকভাবেই শিশুদের জন্য প্রযোজ্য কিনা এমন প্রশ্নের মুখে মার্কাস জানান, যেকোন আর্থসামাজিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্যই এর ঝুঁকি থেকে যাবে। শিশুদের জীবনযাপনের ধরনের সাথে ওবেসিটি দেখা দেওয়ার সম্ভবনা সবসময়ই থাকবে।