করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু নেই, শনাক্ত ২৯

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কেউ মারা যায়নি। তবে আজ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯ জন। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ১৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়।

এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১২৮ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৭৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯ জন। শনাক্তের হার দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিন ৬ হাজার ৩১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৬ জন। গতকাল শনাক্তের হার ছিল দশমিক ৪১ শতাংশ।

দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৩৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ২২ জন। শনাক্তের হার দশমিক ৮৩ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল দশমিক ৩৫ শতাংশ।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল ও বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২১৭ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৯৬৪ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সেনবাগে মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১০ জুন) দুপুরে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর আগে, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতার নজরুল ইসলাম খোকন (৫০) উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিকে মাদক মামলায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। পরে খোকন গ্রেফতার এড়াতে অজ্ঞাত স্থানে গা ঢাকা দেয়। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করেন।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

কাজে আসছে না ৩৬ লাখ টাকার পুকুর!



সোহেল মিয়া, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পানি সংরক্ষণ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের উদ্দেশ্যে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে চারটি পুকুর পুনঃখননের প্রকল্প গ্রহণ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। আর এ জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয় ৩৬ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৪ টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্টরা। পুকুরগুলো জেলা পরিষদের তদারকি করার কথা থাকলেও একেবারেই নজরদারি নেই তাদের। বরং উল্টো দুটি পুকুর লীজ প্রদান করে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।

পুকুরগুলো এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। মাছ চাষ, অযত্ন অবহেলা ও তদারকির অভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে পানি। কচুরিপানা আর আবর্জনায় ভরা। এ অবস্থায় প্রকল্পের উদ্দেশ্যে ও কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে। পুকুর পুনঃখননের ৩৬ লাখ টাকাই যেন জলে। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্তারা বলছেন, বর্তমানে এমন মনে হলেও আগামীতে এটি কাজে লাগবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যে ছিল যেসব এলাকার পানিতে লবণাক্ত রয়েছে, সেসব এলাকার মানুষের সুপেয় পানি সরবরাহ করা। পুকুরের গভীরে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বিশেষ করে চৈত্র-বৈশাখের সময় পানির স্তর ঠিক রাখা এবং ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে উপরিভাগের পানি ব্যবহারে এলাকার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা।

জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায় চারটি পুকুর পুনঃখননের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের পুকুরগুলো হলো- জঙ্গল ও জামালপুর ইউনিয়নে একটি করে এবং নবাবপুর ইউনিয়নে দুটি। এরমধ্যে প্যাকেজ-রাজ-৫৪ এর আওতায় জঙ্গল ও জামালপুর ইউনিয়নে দুটি পুকুর পুনঃখনন করা হয়। ২০২০ সালের আগস্টের ৬ তারিখে পুকুর খনন সমাপ্ত হয়। প্রতিটি পুকুর খনন বাবদ খরচ ধরা হয় ১২ লাখ ২৮ হাজার ৭৭৫ টাকা।

আর প্যাকেজ- রাজ-১০৩-১ এর আওতায় নবাবপুর ইউনিয়নে দুটি পুকুর পুনঃখনন করা হয়। এই দুটি পুকরের খনন বাবদ খরচ ধরা হয় ৫ লাখ ৫০ হাজার ৯৭৭ টাকা। পুকুর দুটির খনন কাজ সম্পন্ন হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ১৫ তারিখে। চারটি পুকুর খনন বাবদ খরচ হয় ৩৬ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৪ টাকা।

খননের পর জেলা পরিষদের পরিদর্শনকারী দল পুকুর বুঝে নেন। জেলা পরিষদের গঠিত কমিটি পুকুরগুলোর দেখভাল করার কথা থাকলেও কোন নজরদারী নেই তাদের। ফলে যে উদ্দেশ্যে পুকুরগুলো পুনঃখনন করা হয়েছিল তা সফল হয়নি একটওু। প্রকল্পের এসব পুকুরে পানি সুপেয় রাখতে মাছ চাষ সর্ম্পূণ নিষিদ্ধ বলা থাকলেও জেলা পরিষদ উল্টো পুকুরগুলো লীজ প্রদান করেছে প্রভাবশালীদের কাছে। আর লীজ নিয়ে অবাধে চলছে মাছ চাষ।

সরেজমিন নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামের দোপপাড়ার পুকুরে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটি শুকিয়ে গেছে। মাঝখানে কোন রকম হাটু পানি রয়েছে। তদারকির অভাবে পুকুরের চারপাশের কাটাতারের বেড়া ও পিলার ভেঙে পড়ে আছে। পুকুরটি স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম মন্ডল লীজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন। তিনি জানান, পুকুরটি খননের পর প্রথম দুই বছর এভাবে পড়ে ছিল। কেউ ব্যবহার করতো না। পরে আমি ২০২৩ এ জেলা পরিষদ থেকে লীজ নিয়ে মাছ চাষ করছি।

জামালপুরের তুলসী বরাট গ্রামের পুকুরটি কচুরিপানা ও আবর্জনায় ভরা। পুকুরের পাশের বাসিন্দা শংকরী বিশ্বাস বলেন, পুকুরটি শুধু শুধু খনন করা হয়েছে। এটি আমাদের কোন কাজেই আসছে না। বারো মাস কচুরিপানায় ভরে থাকে। পাটের সময় পুকুরের মধ্যে পাট জাগ দেওয়া হয়। যেখানে পাট জাগ দেওয়ার হয় সেখানে কতটুকু সুপেয় থাকতে পারে পানি?

জঙ্গল ইউনিয়নের পুকুরটির অবস্থা আরো শোচনীয়। পুকুরটি এখন আর কেউ ব্যবহারই করছেন না বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কল্লোল বসু। তিনি বলেন, তদারকির অভাবে পুকুরটি এখন পরিত্যক্ত। যে উদ্দেশ্য নিয়ে খনন করা হয়েছিল তা একটওু সফল হয়নি। এখানে লাখ লাখ টাকাই জলে গিয়েছে।

জেলা পরিষদের বালিয়াকান্দিতে দায়িত্বরত সদস্য মো: আব্দুল বারিক বিশ্বাস বলেন, পুকুরগুলো ২০২০ সালের শেষের দিকে খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালে আমি ও পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। বিষয়টি দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুটি পুকুর লীজ দেওয়া হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী মো: রেজাউল করিম বলেন, প্রথমত পুকুরগুলো সরকারের দখলে ছিল না। পুনঃখননের মাধ্যমে দখলে চলে আসে। যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে এটি একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। অদূর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় রেখে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ হয়ত এটির উপকারিতা চোখে পড়ছেনা। কিন্তু ৫০ বছর পর যখন পানির স্তর নিচে নেমে যাবে তখন এই পুকুরগুলো মানুষের ভীষণ কাজে লাগবে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

উত্তরপূর্বের সহিংস-অস্থিরতা আঞ্চলিক শান্তুি, স্থিতি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ



আবুল খায়ের মোহাম্মদ, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরপূর্বের সহিংস-অস্থিরতা আঞ্চলিক শান্তুি, স্থিতি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ

উত্তরপূর্বের সহিংস-অস্থিরতা আঞ্চলিক শান্তুি, স্থিতি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ এশিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চল দৃশ্যত শান্ত থাকলেও সেখানে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মণিপুর রাজ্যে। এখনও সেখানে সহিংসতা এবং রক্তপাত বিরাজমান। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, উত্তরপূর্বাঞ্চলের সহিংস-অস্থিরতার প্রতিক্রিয়া আঞ্চলিক শান্তুি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

উত্তরপূর্ব ভারতে সাম্প্রতিক সহিংসতার মূলে রয়েছে উপজাতিগত দ্বন্দ্ব। যখন ভারতের মণিপুর রাজ্যের হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল, তখনই অন্যান্য উপজাতি সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সশস্ত্র সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।

মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। নামানো হয় সেনা এবং আসাম রাইফেলস বাহিনিকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেওয়া হয় সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহকে সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ১ মাস কেটে গেলেও এবং খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পরেও সেখানে হিংসা থামেনি এবং থেমে থেমে সহিংসতা ও সশস্ত্র তৎপরতা চলছে।

কুকি উপজাতির অধিকাংশই খ্রিস্টান হওয়ায় এবং তাদের অনেক সদস্য মিয়ানমার ও বাংলাদেশে বসবাস করায় ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত কারণে নিবিড়ভাবে আবদ্ধ। ফলে মনিপুরের ঘটনার প্রভাব ত্রিদেশীয় কুকি উপজাতি সদস্যদের প্রভাবিত করার সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনিভাবে কুকি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের উত্থানেরও আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী বান্দরবানে কুকিদের সশস্ত্র তৎপরতার ঘটনায়। পরবর্তীতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ও রিক্রুটমেন্ট সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যায়, যা নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

শান্তিচুক্তির দুই যুগের বেশি সময়কালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারায় পাহাড়ি-উপজাতি এবং পাহাড়ি-বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর জীবনমানের অভূতপূর্ব অগ্রগতির পটভূমিতে নতুন করে সশস্ত্র তৎপরতার ঘটনা কিসের আলামত, তা খতিয়ে দেখা দরকার। বিশেষ করে, দুই যুগ আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাহানির অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান হয়ে এসেছিল শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের নতুন ভোর। তারপর আলোকোজ্জ্বল হয়েছে পশ্চাৎপদ পার্বত্যাঞ্চল। নবজীবনের স্বাদ পেয়েছে পাহাড়ে বসবাসকারী উপজাতি ও বাঙালি জনগোষ্ঠী। এখন যদি আবার সেখানে রক্তপাতের উত্থান ঘটে, তাহলে পার্বত্যাঞ্চলের যাবতীয় অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফলে অকস্মাৎ বান্দরবানের গহীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাদের স্বার্থে, কাদের মদদে শুরু হলো সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নাশকতা, তা অনুসন্ধান করে মূলোৎপাটন করা জরুরি। অভিজ্ঞরা বলেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম হলো লাভজনক সন্ত্রাসবাদের ‘দোকান’। সেখানে সন্ত্রাসের নতুন সংজ্ঞার নাম 'পাহাড় দখল'। তারপর আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক মাফিয়া গোষ্ঠীর মদতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আফিম ও গাঁজার চাষ। বিশ্বের অন্যতম প্রধান হেরোইন রাজধানী, অস্ত্রের বাজার ও মানব পাচারের ঘাঁটি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারের সীমান্তরেখা।

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিক তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশের অপর পার্শ্বের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো মাদক তৈরির ও অস্ত্রের কারখানা গড়ে উঠছে। মানুষ ফসলের চাষবাস বন্ধ করে আফিম চাষ করছেন। ভারত-মায়ানমার-বাংলাদেশ (পার্বত্য চট্টগ্রাম) সীমান্ত জুড়ে মাদক তৈরি সংগঠিত ‘শিল্প’, যা কুকিদের ব্যবহার করে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মায়ানমার ও ভারতের মণিপুর-মিজ়োরাম থেকে কুকিরা নাগাড়ে ঢুকছেন মাদক আর অস্ত্র নিয়ে। আফিম চাষের পাশাপাশি উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েও মদত দিচ্ছে, সীমান্তের ও-পারের এজেন্টরা। যার ফলে নিরাপত্তার ক্ষতি হচ্ছে শান্ত পাহাড়ের এবং বিশেষভাবে বান্দরবানের।

বান্দরবানের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী রাঙামাটিতেও। রাঙামাটিতে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে টোকেন না নিয়ে গাড়ি চালানোয় যাত্রীবাহী অটোরিকশায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার (৯ জুন) রাত সাড়ে আটটার সময় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্পোছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার সময় দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনার শিকার অটোরিকশা চালক বানেশ্বর ও যাত্রী হারুন। এসব অপতৎপরতার শিকড় উচ্ছেদ না করা হলে তা সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষে পরিণত হতে পারে।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উত্তরপূর্বের সহিংস-অস্থিরতার ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার। এসব ঘটনার জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আঞ্চলিক শান্তুি, স্থিতি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ সশস্ত্র সন্ত্রাসী, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও মাদক মাফিয়ারা যাতে জাতীয় নিরাপত্তা, সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় সামরিক পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলাও অপরিহার্য। তাহলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও মাদক মাফিয়া চক্রের অবৈধ ও অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশ বন্ধ হতে পারে। প্রয়োজনে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিসরে সন্ত্রাসবাদ, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে যে ঐকমত্য রয়েছে, তা আরও জোরদার করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

শান্তিচুক্তির ফলে বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলে যে স্থিতিশীলতা, সম্প্রীতি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে, তা সামরিক-বেসামরিক-নাগরিক উদ্যোগের মাধ্যমে সুনিশ্চিত করতে হবে। সন্ত্রাসীদের ভীতি থেকে মানুষ ও জনপদের সকল ইতিবাচক কর্মকাণ্ডকে সুরক্ষা দিতে হবে। এবং উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ নামে ২৩ (ক) নতুন অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত করা ছাড়াও রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থ নেওয়ার যে কথা বলা হয়েছে, সন্ত্রাস ও রক্তপাতের মাধ্যমে তা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। তা করতে হবে চলমান শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার চলমান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, এমনটিই মনে করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সামাজিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা নিয়ে মোংলায় চীনা জাহাজ



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মোংলা (বাগেরহাট)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে চীনা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জে হ্যায়।

শনিবার (১০ জুন) সকালে জাহাজটি মোংলা বন্দরের হাড়বাড়ীয়ায় ভিড়েছে।

এমভি জে হ্যায় জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেড-এর খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন আমদানি করা ২৬ হাজার ৬শ ২০ মেট্টিক টন জ্বালানি কয়লা নিয়ে চায়না পতাকাবাহী এ জাহাজটি গত ২১ মে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসে। ইন্দোনেশিয়া থেকে যাত্রা শুরুর ১৯ দিনের মাথায় জাহাজটি শুক্রবার রাতে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় এসে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে জাহাজটি শনিবার ভোর ৫টার দিকে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার-১১ নম্বর অ্যাংকোরেজে ভিড়েছে।

তিনি আরও জানান, জাহাজটি ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে কয়লা খালাস ও পরিবহনের কাজ। খালাস করা কয়লা লাইটারেজে করে নেয়া হচ্ছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে। জেটির নিজস্ব গ্রাস্পের (কামড়ীকল) মাধ্যমে পরিবহণের (নৌযান/লাইটারেজ থেকে) কয়লা উত্তোলন করে স্বয়ংক্রিয় বেল্টের মাধ্যমে তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রটির কয়লার শেডে বা গোডাউনে।

এজেন্ট কর্মকর্তা রিয়াজুল হক বলেন, এর আগে গত ১৬ মে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম. ভি বসুন্ধরা ইমপ্রেসে ৩০ হাজার মেট্টিক টন ও ২৯ মে এম ভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি জাহাজে ৩০ হাজার ৫ শ মেট্টিক টন কয়লা এসেছিল মোংলা বন্দর হয়ে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

 

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;