বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাসে সুরক্ষা সামগ্রী পায় না শ্রমিকেরা
‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের বেনাপোল বন্দরে শ্রমিকদের বড় ভূমিকা থাকলেও তাদের ভাগ্য উন্নয়নে কথা রাখেনি কেউ। এমনকি নিরাপদে পণ্য খালাসের সুরক্ষা সামগ্রীও জুটে না তাদের। ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত, দূষিত পরিবেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সারাবছর কাজ করতে হয় তাদের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছেন তারা।
জানা যায়, স্থলপথে ভারতের সাথে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যে হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। আমদানির পরিমাণ বছরে ৪০ হাজার কোটি, আর রফতানি ৮ হাজার কোটি টাকা। বন্দরে এসব পণ্য খালাসের সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের কেন্দ্র বন্দরটি। আর এ রাজস্ব আহরণে বড় ভূমিকা রাখছে বন্দরশ্রমিকরা। সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা পণ্য খালাসের কাজ করতে হয় তাদের। শ্রমিকদের সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে ভারী মালামাল থেকে শুরু করে এসিডের মত পণ্য উঠানো-নামানোর কাজ করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। পরিবেশ দূষণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তো আছেই। বন্দরে আগুন লাগলে নেভাতেও বড় ভূমিকা থাকে এই শ্রমিকদের। ভারী পণ্যের চাপায়, এসিডে পুড়ে জীবনও হারিয়েছে কয়েকজন। কাজের নিরাপত্তায় হেলমেট আর গ্লাভসের দাবি থাকলেও এ পর্যন্ত সরবরাহ করেনি সংশ্লিষ্টরা। পায়নি চিকিৎসা সেবায় প্রত্যাশিত হাসপাতাল। নেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা।
বন্দর পরিদর্শনে এসে অনেকেই শ্রমিকদের ভাগ্য উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এ পর্যন্ত কথা রাখেনি কেউ, এমন ক্ষোভ রয়েছে শ্রমিকদের।
কয়েকজন বন্দর শ্রমিক জানান, ভারী পণ্য খালাসে নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম মেলে না। খালি হাতে এসিড ও হেলমেট ছাড়া পাথর খালাস করতে হয়। ন্যায্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত।
বেনাপোল হ্যান্ডলিংক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অহিদুজ্জামান ওহিদ বলেন, বেনাপোল বন্দরে আমদানি, রফতানি পণ্য উঠানো-নামানোর কাজে ৯২৫ ও ৮৯১ দুটি শ্রমিক ইউনিয়নের অধীনে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক রয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বন্দরশ্রমিকদের ভূমিকা বেশি। তাদের অধিকার বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিদাওয়া পূরণে সংশ্লিষ্টদের আরও আন্তরিক হতে হবে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ইতিমধ্যে শ্রমিকদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিশ্রামে ব্যবস্থা করা গেছে। বন্দরে শ্রমিকসহ সর্বসাধারণের জন্য একটি হাসপাতাল ও স্কুল তৈরির জন্য জায়গা অধিগ্রহণে কাজ চলমান আছে।