অক্সিজেন সাপোর্ট দিলেন না চিকিৎসক, মারা গেল নবজাতক!

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম,সিলেট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ছবি: বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

অক্সিজেন সাপোর্ট না দেওয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথে ভূমিষ্টে হওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যেই এক নবজাতকের মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৩ জুন) রাতে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া নবজাতক বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের আলিম উদ্দিন সন্তান।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, নবজাতক ভূমিষ্টের পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে (নবজাতক) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন জরুরী বিভাগের ডাক্তার মামুন মিয়া।

এদিকে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স বিকল থাকায়, নবজাতককে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখার অনুরোধ জানিয়ে, বিকল্প অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থার চেষ্টা করছিলেন নবজাতকের পিতা। কিন্তু ডাক্তার তাদেরকে সেই সময়টুকু না দিয়ে অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই নবজাতকের পরিবারকে ওসমানী মেডিকেল যেতে বললে, আর তাতে পথিমধ্যেই অটোরিকশাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নবজাতকটি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই স্ট্যাটাস দেয়ায় ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় বইছে।

এব্যাপারে নবজাতকের বাবা আলিম উদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের দায়ী করে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার সন্তান সম্ভাবা স্ত্রীকে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। তখন তাকে একজন মিড ওয়াইফ রিসিভ করেন, এসময় সেখানে দুইজন পুরুষ ডাক্তারও ছিলেন। কিছুক্ষন পরে বাহির থেকে কিছু ওষুধ কিনে আনতে বললে এনে দেই। এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে আমার এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। এর পাঁচ মিনিট পর তারা ছেলেকে নীচ তলায় নিয়ে যেতে দেখি। কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞাস করলে তারা আমাকে জানান নবজাতকের শ্বাস কষ্ট হচ্ছে, আর তাই কিছুক্ষণ জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়। তখনও নড়াচড়া করছিল ছেলেটি। পরে রেফার করা হয় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে। আমরা অ্যাম্বুলেন্স চাইলে তারা জানান সেটি বিকল। নিজ ব্যবস্থায় যেতে বলেন। তখন আমরা তাকে জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিকল্প অ্যাম্বুলেন্স আনার সময় চাই। কিন্তু ডাক্তার আমাদের সে সময়টুকু দেননি। রাখতেও দেয়া হয়নি জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টেও। তখন উপায় না দেখে অক্সিজেন সার্পোট ছাড়াই অটোরিকশায় (সিএনজি) আমরা ওসমানী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। কিন্তু বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে পৌঁছার পূর্বে আমার বাচ্চাটি মারা যায়। এর দায় সম্পূর্ণ ডাক্তারের। তারা আমাকে একটু সহযোগিতা করলে হয়তো অক্সিজেন সাপোর্টসহ বাচ্চাটিকে নিয়ে বের হতে পারতাম।

এব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার মামুন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অবস্থাদৃষ্টে নবজাতকের তখন এনআইসিইউতে চিকিৎসা জরুরী ছিলো। যেটি আমাদের ওখানে নেই। তাই রেফার করা হয়। তখন তারা কেউ আমাদের কোন কিছু বলেননি। তাছাড়া বাচ্চাটিকে এখানে রাখা হতো তাহলে সে মারা যেতো।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.দেলোয়ার হোসেন সুমন মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।