গঙ্গাচড়ায় মিষ্টির দোকানে অভিযান, ৩ জনের কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা মিষ্টি।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা মিষ্টি।

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মিষ্টির দোকানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় দোকানের মালিকসহ তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রোববার (৩০ জুন) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্নার নেতৃত্বে উপজেলা সদরের অনামিকা সুইটসের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদরে অনামিকা সুইটসের কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী নীলফামারীর জলঢাকার নেক বকতো গ্রামের জাকিয়ার রহমানের ছেলে আইনুল মিয়াকে (৩৭) ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং কারখানার কর্মচারী নীলফামারীর জলঢাকার দিলিপ চন্দ্রের ছেলে দিবাস চন্দ্র রায় (২০) ও গঙ্গাচড়া উপজেলার পানাপুকুর ঠাকুরাদহ গ্রামের বিপিনের ছেলে নয়ন চন্দ্রকে (২২) ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। সেই সাথে তৈরি করা মিষ্টি ধ্বংস করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, নিরাপদ খাদ্য বিক্রি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আসছি। এরই অংশ হিসেবে আজ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হলো। আইনুল মিয়াকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং দোকান কর্মচারী দিবাস চন্দ্র রায় ও নয়ন চন্দ্রকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

হাড্ডিগুড্ডি ভাঙি ফেলাইয়্যম, গুঁড়ি গরি ফেলাইয়্যম: আ. লীগ নেতাকে সাবেক এমপি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর

বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর

  • Font increase
  • Font Decrease

হাড্ডিগুড্ডি ভাঙি ফেলাইয়্যম, গুঁড়ি গরি ফেলাইয়্যম-চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এভাবেই মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুরকে। বরাবরের মতো মোস্তাফিজের সেই গালিগালাজের অডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।

ঘটনার সূত্রপাত ২৯ জুন (শনিবার) উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় আবদুল গফুরের একটি বক্তব্যকে ঘিরে। ওই বক্তব্যে দলীয় কার্যালয় নির্মাণে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে অভিযোগ করেন। গফুরের এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। পরদিন ৩০ জুন গফুরকে ফোন করে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান মোস্তাফিজুর।

ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই কথোপকথনের শুরুতে গফুর মোস্তাফিজুর রহমানকে সালাম ও নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার ওই ফোনে চার্জ নেই। এরপর মোস্তাফিজুর রহমান সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলতে থাকেন ‘কাল (২৯ জুন) এগুলো কী বলেছিস? আমি কার থেকে চাঁদা নিয়েছি পার্টি অফিস বানানোর জন্য?

জবাবে গফুর বলেন, ওগুলো তো চেয়ারম্যানরা বলছেন। উত্তেজিত হয়ে গালি দিয়ে মোস্তাফিজুর বলেন, চেয়ারম্যানরা বলছে, আমার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করবি না, প্রমাণ দে না।’ গফুর আবারও বলেন, চেয়ারম্যানরা সবাই বলছেন তো। তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আমি এত দিন আপনাকে বলিনি।

তখন গালিগালাজ করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোন... (ছাপার অযোগ্য) কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তার (ছাপার অযোগ্য) প্রমাণ দেখাতে বল। নইলে তোকে এসে হাড্ডি (হাড়) ভেঙে ফেলব আমি। গফুর আবার বলেন, চেয়ারম্যানরা সবাই এখন বলছেন তো।

মোস্তাফিজুর রহমান উত্তেজিত হয়ে আবার গালিগালাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, যে বলেছে তাকে আমার সামনে নিয়ে আয়। চাঁদা নিয়েছি এটা প্রমাণ দিতে হবে।

একপর্যায়ে মোস্তাফিজুর বলেন, তুই এখনো আমাকে চিনস নাই। আমি এলে তোর হাড় গুঁড়ো করে ফেলব। এরপর গফুরের মাকে জড়িয়ে প্রকাশ অযোগ্য গালি দেন মোস্তাফিজুর। জবাবে গফুর বলেন, গালি দিলে আমাকে দেবেন, আমার মা-বাবাকে নিয়ে কথা বলেন। এটা তো ভালো না। তখন মোস্তাফিজুর আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, মা-বাবা এরকম ছেলে জন্ম দিসে কেন?

এখানেই থামেননি মোস্তাফিজুর রহমান। গালি দিয়ে আবার মোস্তাফিজুর বলেন, তোকে বাঁশখালী কলেজে ঢুকিয়েছি আমি। হয় কি না, তুই কোরআন ধরে শপথ করে বল না। আমি আগে চট্টগ্রাম আসি। সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। ২৯ জুন অনুষ্ঠিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর যে সভায় গফুর বক্তব্য দেন, সেখানে বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথি ছিলেন।

ওই সভায় আবদুল গফুর বলেন, সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বুঝাতে চেষ্টা করেছেন নিজের বাড়ি না করে তিনি দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করেছেন। অথচ এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভণ্ডামি।

মিথ্যার উপরই সাবেক এমপির জন্ম আখ্যা দিয়ে আবদুল গফুর সেদিন আরও বলেন, দলীয় কার্যালয় নির্মাণে সাবেক এমপি ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন। খানখানাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা, সাবেক চেয়ারম্যান বদরুদ্দীন চৌধুরীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, কাথরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইবনে আমিনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা, পুকুরিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা মাহবু্ব আলীর কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালীব সাদলীর কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে অফিস সংলগ্ন ছড়ায় গাইড ওয়াল নির্মাণ করেন মোস্তাফিজ। এভাবে আরও বহু মানুষের কাছে টাকা নিয়েছেন সাবেক এমপি মোস্তাফিজ।

মোস্তাফিজের এমন ব্যবহারে মর্মাহত হয়েছেন আবদুল গফুর। তিনি বলেন, আমি সেদিন চেয়ারম্যানদের অভিযোগের বিষয়টি সভায় তুলে ধরেছিলাম। সেজন্য আমার মা-বাবাকে জড়িয়ে গালিগালাজ করেছেন আমার সভাপতি। আমি তার এমন আচরণে খুবই মর্মাহত হয়েছি।

সাধারণ সম্পাদককে গালি দেওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি মোস্তাফিজুর রহমান।

অবশ্য এর আগেও বিভিন্ন নেতাকে গালিগালাজ করে ভাইরাল হয়েছিলেন মোস্তাফিজুর। একবার গাড়িতে চড়তে চড়তে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জড়িয়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর কথা বলেন মোস্তাফিজুর। পেছন থেকে সেটি একজন ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন। তখনও মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে মিছিল করেও সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপরও সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ করায় ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্তে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। এই আসনে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুজিবুর রহমান।

;

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শূন্যপদ থাকায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে শূন্যপদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি শূন্যপদ পূরণের ব্যবস্থা করাসহ বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সকল প্রকার ডেপুটেশন বন্ধ করার সুপারিশ করে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। বৈঠক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাদিকের সভাপতিত্বে কমিটি সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নূর-ই-আলম চৌধুরী, ড. শ্রী বীরেন শিকদার, মেহের আফরোজ, শরীফ আহমেদ, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, শাহদাব আকবর, মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ এবং শাহ সারোয়ার কবীর অংশগ্রহণ করেন।

কমিটি দ্বিতীয় বৈঠকের কার্যবিবরণী নিশ্চিত করা হয় এবং ২য় বৈঠকের সিদ্ধান্তসমুহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।এছাড়াও বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদফতর ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠকের এক পর্যায়ে সদস্যরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যেসব প্রকল্প থেকে সরকারি যানবাহন অধিদফতরে গাড়ি ফেরত দেওয়া হয়নি তাদেরকে পত্র দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি দ্রুত গাড়ি ফেরত দেওয়ার সুপারিশ করে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ খায়রুল আলম সেখ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

রাজশাহীতে পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির ফসল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম

পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীর চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরে বসবাসকারী প্রায় ৩ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি। শত শত বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) মানিকের চরে বাদাম রক্ষার চেষ্টা করছেন বাবুল শেখসহ অন্যান্য চাষিরা।

এই চরে শতাধিক পরিবার বাস করে, যারা এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও ১৪টি চরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এদের প্রধান জীবিকা কৃষি কাজ, কিন্তু চারদিকে এখন শুধুই পানি। জমির ফসল সব পানির নিচে। এরই মধ্যে বাবুল শেখ তার পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষার জন্য চেষ্টা করছেন।

পদ্মার ১৫টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বাস করে। চরের অধিকাংশ পরিবারই অন্যের জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে বসবাস করে।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পরিস্থিতি মনিটর করছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, বন্যার পানির কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা সাহায্য কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য তারা আরও নৌকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে।

এদিকে, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের মানুষদের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। শিশু এবং বৃদ্ধদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে গেছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে।

চরের মানুষরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সহায়তা চান তারা। এখন তাদের জীবনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো খাদ্য এবং নিরাপদ পানির যোগান নিশ্চিত করা। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একসাথে কাজ করে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে। পদ্মার চরের মানুষের অবস্থা খুবই নাজুক। তাদের জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার করতে সরকার এবং বিভিন্ন সংগঠনের আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

বাদাম চাষিরা বলছেন, ‘এই বন্যার কারণে তাদের সমস্ত ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। মূলত তারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল, এবং এটি তাদের প্রধান আয়ের উৎস। এখন সমস্ত জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। তাদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা খুবই দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই অবস্থায় আমাদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বন্যার কারণে তাদের পরিবার চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছে। বন্যার পানি দ্রুত হ্রাস না হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।

বাদাম চাষি বাবুল শেখ বলেন, মানিকের চরে ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। এরমধ্যে তিন বিঘার বাদাম উঠাতে পারলেও আরো তিন বিঘার বাদাম উঠানোর আগে পদ্মায় পানি চলে এসেছে। এগুলো উঠানোর চেষ্টা করছি। এর আগে শ্রমিকের খুব সংকটে রয়েছি। পানির কারণে আমাদের ফসল সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের আয়ের প্রধান উৎস হলো কৃষি, কিন্তু এখন সবকিছু পানির নিচে। আমরা খুব কষ্টে আছি। এদিকে রাসেল ভাইপারের ভয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে চায়নি। ফলে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। তবে তিন বিঘা জমির বাদাম এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে।

এই চরের আজগর আলী বলেন, আমি, আমার স্ত্রী এবং দুই ছেলে মিলে অন্যের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছি। তবে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমরা চরম বিপদে আছি। আমাদের ছাগল ও গরুর জন্য কোন জায়গা নেই। বর্তমানে কৃষি কাজও বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি মাঝে মাঝে জাল দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করি এবং তা বিক্রি করে কিছু টাকা উপার্জন করি। কিন্তু এই সামান্য আয় দিয়ে আমাদের সংসার চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের জীবনযাত্রা এখন চরম বিপর্যস্ত। আমরা জানি না কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেব। আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে সরকারের সহায়তা এবং সাহায্য।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর জালাল উদ্দিন বলেন, পদ্মার চরের মধ্যে মানিকেরচর দিয়ারকাদিরপুর, টিকটিকিপাড়াচরসহ চকরাজাপুর ও কালিদাসখালির কিছু অংশ নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এই ওয়ার্ডে পরিবার রয়েছে তিন শতাধিক। ভোটার রয়েছে এক হাজার ৩৫ জন। চরের অধিকাংশ জমি নিচু ও ফসলি। জমিতে রোপন করা বাদাম ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অধিকাংশ জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, পদ্মার চরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। তারা এখন পানিন্দি রয়েছে। চরের অধিকাংশ বাড়ির পাশে পানি এসেছে। ৪৭৩ হেক্টর জমির মধ্যে অর্ধেক বাদাম উঠাতে পারেনি চাষিরা। সেই বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে অনেকেই পানির নিচে ডুব দিয়ে বাদাম উঠাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, "কিছু বাদাম চাষিরা জমি থেকে উঠাতে পারেনি কারণ তাদের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে কিছু পাটের আবাদ বেঁচে রয়েছে। বাদামের চাষ হয়েছে ৪৭৩ হেক্টর এবং পাটের আবাদ হয়েছে ৪,৭৮০ হেক্টর। এই অবস্থার পরিস্থিতিতে বাদাম চাষিরা অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় রয়েছেন এবং তাদের জীবিকা প্রভাবিত হয়েছে।

;

‘ডেঙ্গু মোকাবেলায় পরিকল্পিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়াসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মতবিনিময় সভায়/ছবি: বার্তা২৪.কম

ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়াসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মতবিনিময় সভায়/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম সিটি (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীতে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোধে আমাদের সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনার মতো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

মঙ্গলবার (০২ জুলাই) দুপুরে চসিকের টাইগারপাসস্থ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়াসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়র বলেন, নগরীর প্রত্যেক সংস্থা, সামাজিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, মসজিদে জুমার নামাজে মাধ্যমে নাগরিকদের সচেতন করতে পারলে করোনার মতো ডেঙ্গুও প্রতিরোধ সম্ভব।

তিনি বলেন, আমাদের চারপাশে যে সমস্ত জায়গায় এডিস মশা জন্মায়, সেই সমস্ত জায়গায় যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেই ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে। নালা-নর্দমায় এডিস মশা জন্মায় না। পরিস্কার ও বদ্ধ পানি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র। তাই বসা-বাড়ির আশে-পাশে ডাব ও নারকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ছাদ বাগান ও ফ্রিজে জমানো পানি তিন দিনের বেশি যাতে জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাসা বাড়ি, ছাদ-আঙ্গিনা নিজ নিজ উদ্যোগে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এটি আমাদের সকলের নাগরিক দায়িত্ব। তিনি চট্টগ্রাম নগরীকে একটি নিরাপদ বাসযোগ্য ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নগর গড়তে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ ডেঙ্গু প্রতিরোধে তাদের মতামত প্রদান করেন।

চসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী’র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাইরেক্টর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তসলিম, ফৌজদার হাট বিআইটিআইডি পরিচালক ডা. মো. সাখওয়াত উল্লাহ্, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েল ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডা. হোসাইন সরোয়ার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার(রোগ নিয়ন্ত্রক) ডা. মো. নরুল হায়দার, ভারপ্রাপ্ত জেলা কীটতত্ববিদ সৈয়দ মো. মঈন উদ্দীন।

উপস্থিত ছিলেন-চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ।

;