শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলি মূসার চরের চিত্র, ছবি: বার্তা২৪.কম

কুড়িগ্রামের উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলি মূসার চরের চিত্র, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জেলা সদরের যাত্রাপুর ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার।

পাশাপাশি বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। এ অবস্থায় এসব নদ-নদীর নিম্নাঞ্চলের স্বল্পমেয়াদী বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার অববাহিকার পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৪১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে ধরলার পানি কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

এর আগে, সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে পাউবো বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী ধেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই সময়ে উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।


ব্রহ্মপুত্রে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে এর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাথে চলছে তীব্র ভাঙন। উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলি মূসার চর, ব্যাপারিপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চরের অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের অনেকে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছেন। ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মোল্লাহাট বাজার এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। বাজার রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বতুয়াতলি মূসার চরের বাসিন্দা শরিফুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ৪০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস। সবকটি পরিবারের ঘরের ভেতর পানি। বাইরে চারপাশে পানি।’

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দি পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়াও দুর্গত পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

এদিকে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে যাত্রাপুরের রলাকাটা চরে একের পর এক বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। চরের উত্তর দিকে অব্যাহত ভাঙনে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা বেলাল বলেন, ‘বন্যার পানি এখনও বাড়িঘরে প্রবেশ করে নাই। তবে ভাঙনে এলাকার মানুষ দিশেহারা। রলাকাটার পশ্চিমে মাঝের চর ও চিড়াখাওয়ার চরের আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাড়তে থাকলে দুই একদিনের মধ্যে বাড়িঘরে ঢুকবে।’


যাত্রাপুরের কালির আলগা ও গোয়াইলপুরির চরে গত দুই দিনে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানকার বেশ কিছু পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। বেশিরভাগ পরিবারের বসতবাড়ির চারপাশে পানি।

গোয়াইলপুরির চরের বাসিন্দা মাহবুব বলেন, ‘পরিস্থিতি খারাপ। বন্যার কবলে পইড়া গেছি। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকতাছে। আইজ কাইলের মধ্যে সব ঘরবাড়িতে পানি ঢুইকা পড়বো।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জেলা জুড়ে ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবারও পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে আমরা সেদিকে বাড়তি নজর রাখছি।’

৩০ জেলায় ২ লাখ ৩৭ হাজার টয়লেট নির্মাণ করেছে পিকেএসএফ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ প্রায় নির্মূল হলেও মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে দেশের ৩০ জেলায় ২ লাখ ৩৭ হাজার নিরাপদ ব্যবস্থাপনা টয়লেট নির্মাণ সম্পন্ন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁও পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত প্রকল্পটির তৃতীয় বার্ষিক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ প্রায় নির্মূল হলেও স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ ব্যবস্থাপনাসম্পন্ন টয়লেট ব্যবহারের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি-এর ৬নং লক্ষ্যপূরণে (বিশুদ্ধ, সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার ‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি’ শীর্ষক একটি বিশেষায়িত প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর তত্ত্বাবধানে দেশের ৩০টি জেলায় ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার নিরাপদ ব্যবস্থাপনায় দুই গর্ত বিশিষ্ট টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময় ৬০ হাজার বাড়িতে নিরাপদ ব্যবস্থাপনায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাও স্থাপন করা হয়েছে।

সভায় পিকেএসএফ-এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি পিকেএসএফ-এর ৮৭টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের ১৮২টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এ সমন্বয় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন স্পেশালিস্ট রোকেয়া আহমেদ এবং পিকেএসএফ-এর মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. আবদুল মতীন বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন বিষয়ক বিভিন্ন দিক নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।

এছাড়া, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাফল্য পাওয়ায় ১১টি সহযোগী সংস্থার ২০টি শাখাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

;

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু, আহত ২



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু/ছবি: সংগৃহীত

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারী সদরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে ভীস্ম দেব রায় (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) বিকেলে ওই বৃদ্ধ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে নীলফামারীর সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া ইন্দ্রমোহনপাড়া এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বৃদ্ধ ভীস্ম দেব রায় ওই এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় আহতরা হলেন, ভীস্ম দেব রায়ের ভাই ফুল কুমার রায় ও ভাতিজা মিলন চন্দ্র রায়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার জাহিদুল ইসলাম, পিয়ারুল ইসলাম ‍ও মো. হুমায়ুন সঙ্গে এক খণ্ড জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল নিহত ভীস্ম দেব রায়ের। পরে ভীস্ম দেব রায় বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে বিচারক উক্ত মামলার রায় তার পক্ষে প্রদান করে জাহিদুলদেরকে জমিটি ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ প্রদান করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সেই জমিতে ভীস্ম দেব রায় স্থানীয় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ধান রোপণ করতে যায়। সেই সময় জাহিদুল আরও লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে জমিতে এসে তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় জাহিদুল কাঁঠের পাড় দিয়ে ভীস্ম দেব রায়ের মাথা আঘাত করেন ও হুমায়ুনের লোহার রড দিয়ে ভীস্ম দেব রায়ের ভাতিজা মিলন চন্দ্র রায়ের মাথায় আঘাত করেন। আর পিয়ারুল ইসলাম ভীস্ম দেব রায়ের ভাই ফুল কুমার রায়ে হাত ভেঙ্গে দেন। এরপর বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তারা।

শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক ভীস্ম দেব রায়কে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আহত রয়েছেন আরও দুইজন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;

ব্যর্থতার মধ্যেই নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নে হাত জিইডির



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/ছবি: সংগৃহীত

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ, সরকারের রাজস্ব আহরণ ও ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার মধ্যেই নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজে হাত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।

নতুন পরিকল্পনায় সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা পুনরুদ্ধারের বিষয়টিকে শীর্ষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের অংশ হিসেবে জিইডির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে উচ্চ পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে জিইডির সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহাম্মদ বলেন, আগামীতে আমাদের প্রধান ফোকাস হবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়ানো। এটা করা না গেলে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ আয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়তে হলে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ প্রয়োজন। বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয় বাড়তে হবে। আর এর জন্যে প্রয়োজন হবে সরকারের বাড়তি রাজস্ব।

অবকাঠামো ছাড়াও বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ও উৎসাহ দিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমিয়ে দিতে হবে। এই অবস্থায় আগামীতে বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও রফতানিতে ভর্তুকি ও প্রণোদনার বিকল্প হিসেবে কী ধরনের সুযোগ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলোকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আগামী পরিকল্পনায় দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়কে বিশেষভাবে প্রধান্য দিয়ে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

ড. মো. কাউসার আহাম্মদ বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর নমনীয় ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে আসবে। রফতানিতে প্রণোদনা বন্ধ করে দিতে হবে। কৃষি ও শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকিও কমাতে হবে। মেধাস্বত্বের রেয়াতি সুবিধাও থাকবে না। অগ্রাধিকার বাজার সুবিধা (জিএসপি) কমে আসবে। এ সব সমস্যার সমাধানে করণীয় সংক্রান্ত একটি আলাদা চ্যাপ্টার নতুন পরিকল্পনায় থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

শিল্পায়নে আগামীতে চামড়া ও চামড়াজাত, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষি নির্ভর শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জিইডি সদস্য।খাতভিত্তিক সিএমএসএমই শিল্প প্রাধান্য পাবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

আগামীতে ব্লু ইকোনমি ও স্পেস ইকোনমিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানো হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সরকারের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সভা করেছেন পরিকল্পনা কমিশনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ব্লু ইকোনমিতে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ সব নির্দেশনার প্রতিফলন থাকবে বলেও তিনি জানান।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সাল থেকে বাস্তবায়নে আসা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৩২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য থাকলেও গত অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে প্রাথমিক হিসাবে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

চলতি অর্থবছরে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সাড়ে আট শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য থাকলেও নতুন বাজেটে ৬.৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিদায়ী অর্থবছরে মুল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৭০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও গত মে মাস পর্যন্ত আগের এক বছরের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িযেছে ৯.৭৩ শতাংশে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় ২০২০ সালে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা জিডিপির ২৬.১ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য থাকলেও পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে তা ২৩.৫১ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিনিয়োগের মত রাজস্ব আহরণ এবং সরকারি বিনিয়োগেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিএস। রাজস্ব আহরণ ২০২০ সালে জিডিপির ৯ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে গত অর্থবছরে ১২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য থাকলেও তা ৯ দশমিক ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

২০২০ সালে সরকার জিডিপির প্রায় ১৫ শতাংশ ব্যয় করলেও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা জিডিপির ১৪ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ এ সময়ে সরকারি ব্যয় জিডিপির প্রায় ১৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য ছিল।

;

বিশেষ ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাবেন স্পিকার



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
বিশেষ ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাবেন স্পিকার।

বিশেষ ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাবেন স্পিকার।

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা বিশেষ ট্রেনে চড়ে পর্যটন নগরীতে ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এজন্য ঈদ স্পেশাল ট্রেন-৯’ -এ সুপার সেলুন কোচ সংযোজনের অনুরোধ জানিয়ে রেলের মহাপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (০৩ জুলাই) দেওয়া এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপককেও পাঠানো হয়েছে। রেলমন্ত্রীর পর সরকারের এই প্রথম কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই রুটে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন।

স্পিকারের একান্ত সচিব (অতিরিক্ত সচিব) এম এ এ কামাল বিল্লাহর সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, 'জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী (এমপি) আগামী ১৮-২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা সফর করবেন। সে লক্ষে স্পীকার বিমানযোগে ১৮ জুলাই চট্টগ্রাম গমন করবেন এবং পরবর্তীতে ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার রেলওয়ের সুপার সেলুন কোচে ভ্রমণের সদয় অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এতপ্রেক্ষিতে আগামী ১৯ জুলাই সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার অভিমুখী 'ঈদ স্পেশাল ০৯' ট্রেনে একটি সুপার সেলুন কোচ সংযোজন করা প্রয়োজন। উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।'

চট্টগ্রাম রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'স্পিকার মহোদয় কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনে কক্সবাজার যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। নির্ধারিত দিনে বিশেষ সেলুন কোচ সংযোজন করা হবে।'

;