শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ এবং কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের সূচনা করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১ জুলাই) মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। কোটা বাতিল করে বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চার দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী।

তারা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সোমবার বিক্ষোভ দেখিয়ে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

জাবিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-২০১৮ সালের পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে)।

এছাড়া সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিফাত রশিদ বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় গণপদযাত্রা করব। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ৫ জুন বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর প্রতিবাদে কোটা বাতিল করে বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ক্যাম্পাসে সোমবার বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী। দুপুরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, মল চত্বর, ভিসি চত্বর ও টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘১৮’র হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্নোগান দিতে থাকেন।

অমর একুশে হলের শিক্ষার্থী সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমানে শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটার পাশাপাশি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতেও গলাকাটা পোষ্য কোটা দেওয়া হয়েছে। এই পোষ্য কোটার ফলে কর্মচারী শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। একটি পরিবারের একজন যেখানে চাকরিতে রয়েছেন, সেখানে অন্যদেরও সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার, আপনার বাবা-মা যারা শ্রমজীবী, কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ তাদের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, স্বাধীন এই বাংলায় কোটা বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বৈষম্যমূলক, নিপীড়নমূলক, নির্যাতনমূলক কোটা ব্যবস্থার কবর দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী যখন সংসদে দাঁড়িয়ে আপামর ছাত্র জনতার কথা বিবেচনা করে কোটা বাতিল করেছিলেন, সেখানে হাইকোর্ট থেকে কিভাবে সেই পরিপত্র আবার বাতিল করা হয়? আজকে সারা দেশের ছাত্রসমাজ একযোগে আন্দোলন শুরু করেছে। এই কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল করার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’

সমাবেশে অংশ নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী হিমু বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, আমরা নাকি মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরোধী। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা শুধু বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে নয়। আজকে তারা বলছেন, তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পায়। বছরে দুই ঈদ ও বিজয় দিবসে ভাতা পায়। অথচ দেশের অসংখ্য পরিবারের মাসিক আয় ২০ হাজার টাকার অনেক কম। যেখানে তারা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন, তাদের সন্তান-নাতি-নাতনিরা পাশ করতে পারলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। অথচ অনেক শিক্ষার্থী মেধাবী হয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না। তাহলে কীভাবে তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হলেন? বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল না করা হলে ছাত্রসমাজ আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।’

বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। সমাবেশে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে ছাত্রছাত্রীরা চার দফা দাবি জানান।

সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

বিক্ষোভ-মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৪ দফা দাবি জানান।

সমাবেশে বোটানি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘সংবিধানে স্পষ্ট লেখা আছে শুধু পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর জন্যই কোটা থাকবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম বলেন, আমরা যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করি আমরা নাকি জামায়াত-শিবির করি। কারণ হিসাবে দেখানো হয় আমরা রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। তাহলে আমরা বলতে চাই, যে শিক্ষকরা আজকে প্রত্যয় পেনশন স্কিমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তারাও কি জামায়াত-শিবির করেন? ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে। একটা গাড়িও চলবে না ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে।’

অন্যদিকে, দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে ছিল ‘মেধাবীদের কান্না আর না আর না’, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’ ইত্যাদি। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিবের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান, স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব ও পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফ।

সোমবার দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে ববির প্রধান গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে মহাসড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ সময় বক্তারা প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর কোটা বাদে সব কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন- ববি শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার, মাইনুল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সিরাজুল ইসলাম, সুজয় শুভ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, কোটা পদ্ধতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাকরি প্রাপ্তি নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। কোটা বাতিল করা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ। এ সময় তারা ৪টি দাবি উপস্থাপন করেন।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের জন্য এনআইডি কার্যক্রম বিষয়ক মতবিনিময় সভা 



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, (ব্যাংকক, থাইল্যান্ড)
জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম বিষয়ক সভা

জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম বিষয়ক সভা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম বিষয়ক মত-বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৩ জুলাই ২০২৪ ) কুয়ালালামপুরের সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে অবস্থিত আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লি. এর অফিসে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। মত-বিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামীম আহসান। 

অশোক কুমার বলেন, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় অনেকে এনআইডি করতে পারেননি। এনআইডি না থাকায় তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা বিবেচনা করে মালয়েশিয়ায় এনআইডি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের ৪০টি দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম পরিচালনা করার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের। এর ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ায় এনআইডি কার্যক্রম শুরু হলো। 

এ সময় অশোক কুমার দেবনাথ প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। 

সভাপতির বক্তব্যে হাইকমিশনার শামীম আহসান বলেন, ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় এনআইডি কার্যক্রম সফলভাবে নিষ্পন্ন করার লক্ষ্যে ‘কারিগরি যন্ত্রপাতি স্থাপন ও প্রশিক্ষণ’ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এনআইডি কার্যক্রম বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে। হাইকমিশন এনআইডি সেবা দিতে এখন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত।এ কার্যক্রমকে সফল করতে প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন হাইকমিশনার। 

মালয়েশিয়ায় সুচারুরূপে এনআইডি কার্যক্রম সম্পন্ন করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। মতবিনিময় সভায় ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রবাসী সাংবাদিক, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রতিনিধিদল এবং হাইকমিশন ও এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লি. এর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

;

চট্টগ্রামে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
নিহত এস এম আবদুল লাবিব

নিহত এস এম আবদুল লাবিব

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীতে ট্রেনে কাটা পড়ে এস এম আবদুল লাবিব (১৬) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর ২টায় এই দুর্ঘটনার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, একে খান এলাকার রেললাইনে কাটা পড়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে কিশোরের নাম এস এম আবদুল লাবিব। কিভাবে রেলে কাটা পড়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। ‌আমরা কিশোরটির মরদহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।

জানা গেছে, মৃত এস এম আবদুল লাবিব পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকার আবদুল বারেক মেম্বার বাড়ির মো. আবদুল মতিনের ছেলে। সে নেছারিয়া মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

;

নোয়াখালীতে চলন্ত ট্রেনে হামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা

উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার (৩ জুলাই) রাত ৯টা ৭ মিনিটের দিকে সোনাইমুড়ী রেলস্টেশনের আউটার সিগন্যালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক এই হামলার কোনো কারণ জানাতে পারেনি।  

সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল ৩টা ১০মিনিটে আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ট্রেনটি সোনাইমুড়ীর আউটার সিগন্যানে পৌঁছালে চলন্ত ট্রেনের একদল দুর্বৃত্ত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক বগির দুটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। তবে জানালার পাশে কোনো যাত্রী না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আবু ছায়েদ জানান, চলন্ত ট্রেনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের বিষয়টি শুনেছি। খবর পেয়ে চৌমুহনী রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।  

;

বরিশালের হাসপাতালগুলোতে ৬ মাসে ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

  • Font increase
  • Font Decrease

বছরের প্রথম ৬ মাসেই ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫৩ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।

অপরদিকে বর্ষার আসার সাথে ডেঙ্গুও হানা দিতে শুরু করেছে বরিশাল অঞ্চলে। গত একমাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই ১০৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তির খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে সরকারি হাসপাতালেই প্রায় ৩৯ হাজার ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার কথা জানিয়ে ২১৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। মে মাসেও প্রায় দেড়শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল হাসপাতালগুলোতে।

অপরদিকে গত এপ্রিলে ১২ হাজার এবং মে মাসে সাড়ে ৮ হাজারের পরে জুন মাসেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে।

তবে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সাধারণ চিকিৎসকদের মতে, বরিশালে যে সংখ্যক ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় বা চিকিৎসা গ্রহণ করে, তার কয়েকগুন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাড়ীতে চিকিৎসা গ্রহণ করছে। ফলে এ অঞ্চলে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব না। তবে সব চিকিৎসকরাই পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়ে অবিলম্বে ডেঙ্গুর বিষয়ে বিশেষ নজরদারি সহ সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তা না হলে পরিস্থিতি গতবছরের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।

গত বছরও বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য আসেন। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে আসায় বছর শেষে সংখ্যাটা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

এদিকে ফেব্রয়ারীর শেষ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তারা এ ব্যাপারে নজরদারিসহ জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন।

অপরদিকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যনিটেশন ব্যবস্থার অনেক উন্নতির পরেও ডায়রিয়া প্রবন বরিশাল অঞ্চলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তবে এর পেছনে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার চেয়ে এখন পথ খাবারের দোকানের নিম্নমানের মুখরোচক খাবারকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। বরিশাল মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত ও অননুমোদিত পথ খাবারের দোকানের সংখ্যাই এখন কয়েক হাজার। এসব দোকানের নিম্নমানের এবং বাসি ও মুখরোচক খাবার নগরবাসীর পেটের পীড়াকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চললেও তা নিয়ে জনসচেতনতার অভাবের সাথে এসব খাবার বিক্রি বন্ধে নগর ভবনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ সব ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় কার্যক্রমের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পথ খাবারের দোকানের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ডেঙ্গুর একমাত্র বাহন এডিস মশা নিধনেও তিনি অবিলম্বে ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে মাঠে নামার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুসহ যেকোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

ডায়রিয়া চিকিৎসায় বরিশালে ১ হাজার ও ৫শ এম এল-এর  প্রায় ৩০ হাজার ব্যাগ আইভি স্যালাইন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক এ্যন্টিবায়োটিক ক্যাপসুল ও মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট সহ সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর মজুদের কথাও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

;