বাইডেন-ট্রুডোসহ যাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন ড. ইউনূস

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো দেশের শীর্ষ নেতার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের তেমন নজির নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তো এমন বৈঠক বিরল।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেস্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাছে পেয়ে বুকে টেনে নেন। হাতে হাত রেখে বলেন, বাংলাদেশের সংস্কারের যে লক্ষ্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ঠিক করেছেন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে হোয়াইট হাউস।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সংক্ষিপ্ত এ বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক আরও সুদূঢ় করার উপায়, জনসাধারণের স্বাধীনতা আরও বিস্তৃত করা, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং বাংলাদেশের যুবসমাজকে সহায়তা করার বিষয়ে আলোচনা করেন।

এ সময় অধ্যাপক ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক আর্টবুক উপহার দেন, যেখানে বাংলাদেশে বিপ্লব চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থী ও তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি স্থান পেয়েছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অধ্যাপক ইউনূসের

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি মঙ্গলবার রোম ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের ‘একটি নতুন অধ্যায়’ শুরুর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ইতালীয়রা বাংলাদেশের বন্ধু।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, বৈঠকে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থানের একটি চিত্র তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে জানান, এই অভ্যুত্থান পুরো জাতির জন্য ‘রিসেট বোতাম’ চাপার মতো বাংলাদেশে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অধ্যাপক ইউনূসের

এসময় বাংলাদেশের প্রধান খাতগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের পদক্ষেপে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই, আপনি আমাদের উপর নির্ভর করতে পারেন। আসুন আমাদের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় শুরুর চেষ্টা করি।’

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অধ্যাপক ইউনূসের

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বাংলাদেশের সংস্কারের উদ্যোগকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, তারা এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে এরইমধ্যে ঢাকায় একটি দল পাঠিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ পরিষদের সাইডলাইন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের সময় আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার সমর্থন প্রকাশ করে বলেন, এটি অন্য দেশ, এটি বাংলাদেশ ২.০।

বিল ক্লিনটনের সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ

ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ২০২৪-এর এক বৈঠকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে।

এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রধানমন্ত্রী লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্ক প্রমুখের সঙ্গে ড. ইউনূসের দেখা হয়েছে।

ব্রাজিলের প্রধানমন্ত্রী লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভার সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ

তাছাড়া আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে ড. ইউনূস সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন বলে জাতিসংঘ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। তার আগে ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বাগতিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া ডিনার পার্টিতে অন্য সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূসও অংশ নেবেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ডিনার পার্টিটিতে সবাইকে স্বাগত জানাবেন। এ সময় অতিথিদের সঙ্গে ফটোসেশনেও মিলিত হবেন ফার্স্টলেডি ও প্রেসিডেন্ট।