করোনা প্রতিরোধে কার্যকর সামাজিক-পারস্পরিক দূরত্ব



ফাতিমা তুজ জোহরা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে হলে প্রয়োজন ব্যক্তি সচেতনতা, সামাজিক ও পারস্পরিক দূরত্ব গড়ে তোলা। এখনও করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি, আর রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় সংক্রমণ রোধে একমাত্র উপায় হলো দূরত্ব বজার রাখা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়ত করোনা যে মহামারি আকার ধারণ করেছে তা একেবারে বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু এর সংক্রমণের হার কমানো সম্ভব। আমরা যদি সামাজিক দূরত্ব বজার রাখি তাহলে এই সংক্রমণ আশানুরূপভাবে কমে আসবে।

আর এখন চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের কথা না বললেই নয়। কারণ কোনো প্রতিষেধক ছাড়া শুধুমাত্র সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আজ করোনা জয় করতে সক্ষম হয়েছে চীন। অথচ মাস দুয়েক আগেও সবাই ভেবেছিল চীন হয়ত এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে না।

এমনকি বর্তমানে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও জার্মানিও একই পথ অবলম্বন করছে। যেহেতু এসব দেশে ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে এজন্য এই দূরত্ব বজায় রাখার পর ১০-১৫ দিন সময়ের প্রয়োজন। আর এই দূরত্ব বজায় রাখতেই আক্রান্ত দেশগুলো লক ডাউন ঘোষণা করছে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, এসব দেশে সংক্রমণের হার আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে।

এখন প্রশ্ন হলো সামাজিক দূরত্ব কী?

এক কথায় বলতে গেলে যেকোনো ধরনের জনসমাগম স্থল এড়িয়ে চলা, একে অপরের থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেকেই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। কারণ রোগটি সম্পর্কে তারা বেশি কিছু জানেন না। যেমন- কীভাবে করোনাভাইরাস ছড়ায়, কেন দূরত্ব রেখে চলতে হবে এগুলো জানেন না অনেকেই। প্রথমত করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে রোগ। হাঁচি- কাশি, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ অথবা ব্যবহার্য জিনিসের মাধ্যমে এই ভাইরাস অন্য দেহে সংক্রমণ ঘটায়। যেহেতু ভাইরাসটি ভারি হওয়ায় বাতাসে বেশিক্ষণ ভাসতে বা বেশি দূরে যেতে পারে না। এমনকি মানুষের দেহের বাইরেও বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে না এ ভাইরাস এজন্য আমাদের সবাইকে কমপক্ষে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এর মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচা সম্ভব।

বাড়িতে কীভাবে পরস্পর থেকে দূরত্ব বজায় রাখব—

এখন গোটা বিশ্বে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সবাইকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে প্রায় সবারই ছোট বাচ্চা ও বয়স্ক বাবা-মা আছেন। এজন্য আমাদের প্রত্যেককে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন দেশের মানুষ লকডাউনের সময় অন-লাইন মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কেনাকাটা করছেন। এক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞরা সচেতন হতে বলছেন। এমন সময় যিনি গৃহকর্ত্রী তাকে বেশি সচেতন হতে বলছেন। উদাহরণস্বরূপ- বাইরে থেকে আসা সকল পণ্য ধরে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। শুকনো খাদ্যদ্রব্য হলে প্যাকেটটি জীবাণুনাশ (ডিটারজেন্ট/ব্লিচিং মিশ্রিত পানি) দিয়ে মুছে নিতে হবে।

গবেষকরা বলছেন, পরিবারের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে। কারণ আক্রান্ত অনেকেই আছেন যাদের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। যেমন হাঁচি-কাশি কিংবা জ্বর থাকে না শরীরে। সেক্ষেত্রে বয়স্ক ও বাচ্চারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এজন্য খেতে বসেও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার কথা বলা হচ্ছে।

কর্মক্ষেত্রে কীভাবে দূরত্ব রেখে চলবেন—

এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে জরুরি প্রশাসনিক ও দাফতরিক কাজ চলমান। এক্ষেত্রে সরকারি দফতরে মেনে চলা হচ্ছে কিছু নিয়ম। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এ অবস্থায় হোয়াইট হাউজের প্রশাসনিক কাজ অব্যাহত আছে। এজন্য সম্ভব হলে বাড়ি থেকে কাজ করা, বাইরের খাদ্য এড়িয়ে চলা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, ১০ জনের বেশি সমাবেত নিষিদ্ধ করছেন। পরস্পর থেকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব রাখা, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, মুখে মাস্ক পরা, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু ও রুমাল ব্যবহার করা, নির্দিষ্ট সময় বাদে হাত ধোঁয়া, হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলি থেকে বিরত থাকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যক্তি সচেতনতার বিকল্প নেই—

এই মহামারি প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ব্যক্তি সচেতনতা। অর্থাৎ নিজেকে নিজের সুরক্ষা দেওয়া। এই ছোঁয়াচে রোগে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গ আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করেছেন। এতে বিষয়টি পরিষ্কার যে, এই রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে ও আক্রান্তের পর নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। প্রথমত হাত ধোঁয়া, জনসমাগম স্থলে যাওয়া থেকে বিরত ও শারীরিক পরিচ্ছন্নতা আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে। আর দ্বিতীয় ধাপ হলো- আক্রান্ত হওয়ার পর আপনার করণীয় কী হতে পারে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি যদি আক্রান্ত হন সেক্ষেত্রেও এই সচেতনতার বিকল্প নেই। জ্বর, কাশি কিংবা করোনার সামান্য লক্ষণ পাওয়া মাত্রই নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে নিতে হবে। যাতে পরিবারের কাছের মানুষটি আক্রান্ত না হতে পারে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে ফোনে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়া। লক্ষণ বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে যোগাযোগ করা। তবে এসব কাজই ঘরে বসে করতে হবে। না হলে আপনার থেকে আরও অনেকে আক্রান্ত হতে পারে। একইসঙ্গে সবার আগে এটি জানা যে, করোনায় আক্রান্ত মানেই মৃত্যু নয়। খাবার-ঘুম এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে এ রোগ থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এজন্য আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সচেতনতার।

সারাবিশ্বে করোনায় আঠারো লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৮ হাজার মানুষ মারা গেছেন এবং সুস্থ হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ।

আরও পড়ুন- করোনাভাইরাস: ‘প্লিজ, উহানের ভুল থেকে শিক্ষা নিন’

করোনা লড়াইয়ে চলচ্চিত্রকার যখন ওষুধ সরবরাহকারী

ক্লোরোকুইন ওষুধে কি করোনা নিরাময় সম্ভব?

গরমে কমবে করোনার সংক্রমণ, দাবি মার্কিন গবেষকদের

করোনার চিকিৎসায় চার ওষুধ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বন্যপ্রাণীর অবাধ বাণিজ্য, ভয়াবহ মহামারির দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব

নীল আকাশ বলে দিচ্ছে, ভারত কতটা দূষণমুক্ত

পৃথিবীর যেসব অঞ্চল এখনো করোনামুক্ত

ক্ষমতার অন্দরমহলে করোনার আধিপত্য!

বাতাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্ভব?

লকডাউনের শেষ কবে?

   

ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে পৃথক দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় তানভীর হোসেন সৈকত (১৬) ও শাকিল হক শান্ত (২৬) নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাইচ্ছুটি এলাকা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ডাক বাংলা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তানভীর হোসেন সৈকত ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ এলাকার গুড়াগাজী বাড়ির হারুনুর রশীদের ছেলে এবং অন্যজন শাকিল হক শান্ত ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের চাঁদগাজী এলাকার প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শান্ত দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সোনাগাজীতে তিন বন্ধু মিলে প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শান্ত। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলে প্রাণ হারান তিনি। এ সময় গাড়িতে থাকা তার অপর দুই বন্ধু অমি এবং রবিন গুরুতর আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে নিহত সৈকতের পরিবার জানায়, বিকালে বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে কাইচ্ছুটি রাস্তার মাথায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সৈকত। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সৈকতের ভগ্নিপতি মজিবুল হক বলেন, পরিবারে পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট সৈকত। আমি প্রবাস থেকে ফেরার পর ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ির সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। এখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিবারের সবাই চলে গেলেও সৈকত পরে বের হয়। পরে কাইচ্ছুটি এলাকায় পৌঁছালে তাকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দেয়। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না কেউ।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকজন পথচারী গুরুতর আহত অবস্থায় সৈকতকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

;

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;