অবরুদ্ধ রুদ্র বৈশাখ, তবু নতুন আলোয় জাগে প্রাণ

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
অলঙ্করণ: কাজী যুবাইর মাহমুদ

অলঙ্করণ: কাজী যুবাইর মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা বৈশাখ প্রাকৃতিক নিয়মে বাংলা নববর্ষকে নিয়ে এসেছে বসন্তের উজ্জ্বল নীলাকাশ ও উজ্জ্বলতর সবুজ প্রকৃতির পরশ মাখিয়ে। তবু করোনায় আক্রান্ত নতুন বছর ১৪২৭ বঙ্গাব্দে পৃথিবীর রং ধূসর। মানুষের চেহারা ভীত-বিহ্বল, পাণ্ডুর। প্রকৃতির পাতায় পাতায় ও নিসর্গের প্রতিটি অঙ্গনে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো হে’ স্পন্দন, তবু এই নববর্ষের, এই পহেলা বৈশাখের, সকল রুদ্রতা অবরুদ্ধ।

এই অচিন্তনীয় অবরুদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধের ফলে। মনুষ্য চলাচলহীন, নিস্তরঙ্গ পৃথিবীতে ঘরবন্দী হয়ে বেঁচে থাকাই বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ। উৎসবের প্রসঙ্গ তো রীতিমতো অকল্পনীয় বিষয় করোনাপীড়িত কালে।

তবুও গৃহের নিভৃত কোণ থেকে চিরচেনা, চিরপরিচিত প্রকৃতি ও ঋতুর অনিন্দ্য পালাবদল মানুষের দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পারে না। মানুষ, প্রকৃতির শিহরণ থেকে দূরে থাকলেও নির্বিকার থাকতে পারে না। উৎসবমুখর বাঙালি অন্তরের আলো ও উত্তাপে আমোদিত হয় নববর্ষের স্পর্শে, পহেলা বৈশাখের পরশে।

বাংলা জনপদে বাঙালি জীবনে পহেলা বৈশাখ নবতর চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আনন্দধ্বনি নিয়ে আসে। পুরনো ও জীর্ণকে ফেলে ‘ঐ নতুনের কেতন’ উড্ডয়নের ডাক দেয় বৈশাখ। আবাহন জানায়, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালির ঐক্য, বিকাশ ও সমৃদ্ধির।

 

দক্ষিণ এশিয়ার সুবিশাল ভূগোলের মধ্যে বিশাল ও বহুবিচিত্র ভারত উপমহাদেশে একমাত্র বাঙালি জাতিরই রয়েছে নিজস্ব ও কার্যকরী একটি বর্ষপঞ্জি, যাকে কেন্দ্র করে বাঙালির অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবন আবর্তিত হয় ঋতুবৈচিত্র্য এবং পালা, পার্বণ ও অনুষ্ঠানের সমান্তরালে। মাটি ও মানুষের সম্মিলনে সেই বর্ষক্রমের সূচনা আনে রুদ্র বৈশাখ।

বৈশাখে বাঙালির জাতীয় সাংস্কৃতিক জাগরণের মতো আলোড়ন তৈরি হয়। ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশ ঘর ছেড়ে বাইরে চলে আসে। শতসহস্র কণ্ঠে বলতে থাকে, ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’।

ভোরের নতুন আলোয় রমনার ঐতিহ্যবাহী বটমূলের সুর ও ছন্দে আবাহন করা হয় নতুন বছরকে। চারুকলা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। প্রত্যয়দীপ্ত বাঙালি অশুভ, অন্যায় ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর ডাক দেয়। বাঙালির শতকণ্ঠে জাগৃতির গানে গানে সমগ্র বাংলাদেশ মুখরিত হয় নববর্ষের প্রথম দিনে, পহেলা বৈশাখে।

কিন্তু ঐতিহাসিক বাস্তবতার কঠিন পরিস্থিতিতে ১৪২৬ বঙ্গাব্দ শেষে নতুন বছর ১৪২৭ এসেছে ঘোরতর সঙ্কুলতার মধ্যে। শুধু বাংলাদেশই নয়, সারা বিশ্বই এই নতুন বছরের মাহেন্দ্রক্ষণে তাপিত, পীড়িত। উৎকণ্ঠায় প্রকম্পিত। তবু মানুষের শাশ্বত সংগ্রামশীলতার শক্তিতে চলছে সঙ্কট মোচনের লড়াই। রোগের সঙ্গে মানুষের এই প্রচণ্ড দ্বৈরথে বিশ্বের প্রতিটি মানুষই আজ একেক জন সৈনিক। হয়তো কেউ লড়াই করছে বাইরে থেকে, কেউ ঘরের মধ্যে থেকে। তথাপি লড়াই চলছেই।

মানব সভ্যতার এই লড়াইয়ে বাঙালিকে আরও প্রাণিত করে বৈশাখের জীবনমুখী চৈতন্য। রুদ্র বৈশাখের প্রবল প্রতাপে করোনা-সৃষ্ট অবরুদ্ধতাকে পরাজিত করার প্রত্যয় ও প্রতীতি জাগে নববর্ষের নবতর আবহে, পহেলা বৈশাখের প্রাণময় স্পর্শে। যে পরশ প্রতিটি বাঙালি ঘরে বসেও অনুভব করে। উপলব্ধি করে প্রাণের আলোয় বিপদ উত্তরণের প্রেরণা। সামষ্টিক উৎসবময়তাকে পায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক পরিমণ্ডলে।

মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির, প্রাণের সঙ্গে প্রাণের মিলিত মুখরতায় বাঙালির চিরন্তন উৎসব বাংলা নববর্ষের পহেলা বৈশাখ। বাঙালি যেকোনও পরিস্থিতিতে এই সর্বজনীন, কল্যাণময় উৎসবের সঙ্গে একাত্মবোধ করবেই। হয়তো বাইরের সব আয়োজন আপতকালীন পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকবে। কিন্তু নববর্ষের নতুন আলোয় অন্তরের রজতশুভ্র আলোক দ্যুতিতে বাংলার প্রতিটি প্রান্তর, গৃহকোণ আলোকোজ্জ্বল হবেই। নতুন আলোয় জাগবেই প্রাণ।

আজ নয় কাল, অবরুদ্ধ প্রহর পেরিয়ে বাঙালি জাগবেই রুদ্র বৈশাখের উচ্ছ্বাসে। অবরুদ্ধ রুদ্র বৈশাখেও বাঙালির ঘরে ঘরে, অন্তরের গহীন প্রদেশে জাগবে প্রাণ।

বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি বার্তা২৪.কম বাংলার, বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে ঘরে ঘরে অবস্থানরত প্রতিটি বাঙালিকে জানাচ্ছে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

   

ময়মনসিংহে তিন দিনে ৪ জনের মৃত্যু, ধারণা হিটস্ট্রোক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে চার উপজেলায় তিন দিনে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নিহত চার জনই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

গত রবিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলার গফরগাঁও, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ ও ফুলপুর উপজেলায় চার জনের মৃত্যু হয়।

গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ও নিহতের পরিবার সুত্র জানায়, গত রবিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর উপজেলার লংগাইর ইউনিয়নের বাঘবের গ্রামের আফাজ উদ্দিন ঢালীর ছেলে ফজলুল হক ঢালী (৫৬) বাজার করে বাড়িতে ফিরে টয়লেটে যান। টয়লেট থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় তার মা টয়লেটের টয়লেটের দরজা খুলে দেখেন ফজলুল হক সেখানে উপুর হয়ে পড়ে আছেন। পরে তার মায়ের ডাক-চিৎকারে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গফরগাঁও পরিবার পরিকল্পনা ও উপজেলা স্বাস্থ কর্মকর্তা দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ফজলুল হক ঢালির মৃত্যু হয়েছে। যে কারণে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে, অতিরিক্ত গরমে এমনটা হতে পারে বলেও ধারণা করেন তিনি।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল পৌনে ৫ টার দিকে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের সুটিয়া বাজারের রমজান খলিফা (৫৫) নিজের দোকানে বসে কাজ করছিলেন। হঠাৎ তিনি শরীর খারাপ লাগছে বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় টের পেয়ে মাথায় পানি দিতে শুরু করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই রমজান অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তবে, হাসপাতালে নেয়া হয়নি বা পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। তিনি একই ইউনিয়নের পাইস্কা গ্রামের বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলার ফুলপুর উপজেলায় কয়রা ইউনিয়নের ইমাতপুর গ্রামে শিল-পাটা কাটার কাজ করছিলেন রমজান আলী। হঠাৎ সেখানে অসুস্থ হয়ে ঘটনাস্থলেই রমজান আলী মারা যান।

নিহত রমজান আলী রমজান আলী তারাকান্দা উপজেলার ৩ নম্বর কাকনী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়াডের বগীরপাড়া গ্রামের মৃত শুকুর মাহমুদের ছেলে।

তারাকান্দা বগীপাড়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. তরিকুর রহমান খন্দকার রাশেদ বলেন, রমজান আলী গ্রামে গ্রামে ঘুরে মশলা ভাটার শিলপাটা কাটায় হস্থশিল্পী শ্রমিকের কাজ করত। প্রতিদিনের মত আজ সকালে সে বাড়ি থেকে কাজে বের হয়ে পাশ্ববর্তী ফুলপুর উপজেলার ইমাতপুরে যায়। সেখানে কাজ করা অবস্থায় দুপুরে প্রচন্ড গরমে সে স্ট্রোক করে মারা যায়।

উপজেলা স্বাস্থ‍্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হুমায়ন কবীর বলেন, হাসপাতালে আসার আগেই রমজান আলীর মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। ধারনা করা যায় অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে বা অন্য কোন কারণে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।

একই দিন সকালে জেলার ভালুকা উপজেলায় কামরুল ইসলাম (৩০) নামে এক গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত কামরুল ইসলাম জেলার গৌরীপুর উপজেলার রায় শিমুল গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ'র ছেলে। সে ভালুকার মাস্টার বাড়ি এলাকার পুর্বাশা নিট কম্পোজিট লিমিটেডে চাকরী করতেন।

ভালুকা শিল্প পুলিশের এএসআই মোহাম্মদ মানিকুজ্জামান বলেন, নিহত কামরুল ইসলাম ভালুকায় বসবাস করে পুর্বাশা নিট কম্পোজিট লিমিটেডে চাকরী করতেন। ঘটনার দিন সকালে কামরুল অসুস্থ অবস্থায় তার ভাইকে নিয়ে গার্মেন্টস যান। গার্মেন্টসে গিয়ে কর্তব্যরত নার্সকে অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়ে চলে আসেন। সেখান থেকে কামরুল ইসলাম প্রথমে চুরখাই কমিনিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

এএসআই মোহাম্মদ মানিকুজ্জামান বলেন, কামরুল আগে থেকেই হার্টের রোগী ছিলেন। সকালে মুলত তার ভাইকে নিয়ে ছুটি নিতে গার্মেন্টসে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চিকিৎসা নিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

উপজেলা নির্বাচন: লোহাগড়ায় ১৩ জনের মনোনয়ন বৈধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জনসহ ১৩ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস- চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৫ জন, ভাইস- চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬১ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২১ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই হয় ২৩ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২ মে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং ভোট গ্রহণ ২১মে।

চেয়ারম্যান পদে ৭জনের মধ্যে ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪ নং নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে. এম ফয়জুল হক রোম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৬ নং জয়পুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম শরিফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুন্সী নজরুল ইসলাম (সাবেক নিবন্ধক- আই.জি.আর), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নড়াইল শাখার সভাপতি মো: তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। চেয়ারম্যান পদে ৭ জনের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগ নেতা মো: আইয়ুব হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

অপরদিকে ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে মনোনয়ন বৈধ হয়েছেন ৩ জনের মধ্যে ২ জন। তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, জেলা আওয়ামী মহিলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ইতি এবং মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মিসেস কনিকা ওছিউর।

ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে একমাত্র প্রার্থী পৌর মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোছা: কাকলি বেগমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২১০৭৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১০৫৭৮৫ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১০৪৯৮৩ জন। এই উপজেলা ১২ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

ময়মনসিংহে ট্রেনের ধাক্কায় রিকশার দুই যাত্রী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় রিকশার দুই যাত্রী মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও এক শিশু। নিহতরা হলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উজান বাড়েরা গ্রামের আব্দুর রহমান (৬২) তার ভাতিজি শেফালী আক্তার (৪৫)।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বিদ্যাময়ী রেলক্রসিং এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নাজমুল হক খান এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুর গামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার পথে বিদ্যাময়ী রেলক্রসিং রেললাইনে উঠে পড়া রিকশাটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যায়। এই ঘটনায় আহত হয় এক শিশু।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক এসআই দীপক পাল জানান, ঘটনাস্থলে দুই জন মারা গেছেন। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে হয়েছে এবং ঢাকা ময়মনসিংহ লাইনে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর: ময়লার ভাগাড়ে পরিণত শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল। সকাল ৯টা। হঠাৎ করেই বড় একটি দুর্ঘটনার সাক্ষী হয় দেশবাসী। ধ্বসে পড়ে রানা প্লাজা নামের একটি ভবন। প্রাণ হারায় হাজারের বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার। আহতদের মধ্যে অনেককেই বরণ করতে হয়েছে আজীবন পঙ্গুত্ব।

আলোচিত সেই রানা প্লাজা ট্রাজেডির কেটে গেছে ১০ বছর। বিষাদ ভুলে গেছে অনেকেই। তবে কেমন আছে আহতরা। তা জানতে আমরা গিয়েছিলাম রানা প্লাজার সামনে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রানা প্লাজার সামনে শহীদদের স্মরণে একটি সৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও তা পড়ে রয়েছে অযত্ন অবহেলায়। সামনে গাড়ির পার্কিং আর পেছনে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাচ্ছেন পথচারীরা।

সেদিন আহতদের মধ্যে একজন ফারুক হোসেন। রানা প্লাজা ভবনের নিচে দোকান ছিল তার। সেদিনের দুর্ঘটনায় তিনিও আহত হয়ে হাতের দুটি আঙুলের কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। কিন্তু পোশাক শ্রমিক না হওয়ার কারণে কোন ক্ষতিপূরণ পাননি তিনি।

দীর্ঘ চিকিৎসার পর এখন আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। ফারুক হোসেন বার্তা২৪.কমের কাছে আক্ষেপ নিয়ে বলেন, সেদিন আমি দোকানে বসেছিলাম। কাস্টমার ছিল, চা বানাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমরা ভূমিকম্পের মতো কিছু একটা অনুভব করতে-করতে দেখি ভবন নড়ছে। সাথে সাথে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও হাতে ভবনের একটি পিলার এসে আঘাত করলে আমার হাতের দুইটি আঙুল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনায় অনেকে নানা রকমের সাহায্য সহযোগিতা পেলেও আমি কোন সাহায্য পাইনি। অনেকদিন বউবাচ্চা নিয়ে অভাবে দিন কাটাইছি। অনেক সাংবাদিক আগে এসে ইন্টারভিউ নিয়েছে, কিন্তু কোন সাহায্য পাইনি।

সে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজন পোশাকশ্রমিক রিক্তা। ডান হাত হারিয়ে এখন অসহায় জীবন পার করছেন গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে। কাজ করার ক্ষমতা অর্ধেক হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখনো সেই স্মৃতি মনে ভাসলে নির্বাক হয়ে যান তিনি। তাকে খুঁজতে গিয়ে বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় তার পরিবারের সঙ্গে। রিক্তার শ্বশুর জানান সেদিনের সেই দুর্বিষহ ৭২ ঘণ্টার কথা।

তিনি বলেন, টানা ৭২ ঘণ্টা আমার ছেলের বউ এই ভবনে আটকে ছিল। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো মারা গেছে। কিন্তু তিন দিন পরে আমি দেখতে পাই আমার ছেলের বউর মুখটা। আমার ছেলের বউ যখন আটকে থাকা অবস্থায় আমাকে আব্বা বলে ডাক দিল, তখন আমি নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। শুধু আল্লাহর কাছে পুত্রবধূর প্রাণভিক্ষা চাইছি। তারপর আমি নিজে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে রিক্তার ডান হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে বের করেছি।

দুর্ঘটনার সময় রিক্তা গর্ভবতী ছিলেন। বর্তমানে তার একটা মেয়ে আছে ৯/১০ বছর বয়সের। বর্তমানে সে কোন কাজ একা ঠিকঠাক করতে পারে না। তবে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া সে এখনো বেঁচে আছে। ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সময় কিছু ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলাম, কিন্তু তা খুবই সামান্য। শুনেছিলাম আরও অনেক কিছু পাবো। কিন্তু তার আর কোন খোঁজখবর নাই।

রানা প্লাজা ভবনটি যেখানে ছিল সেখানে শ্রমিকদের জন্যে একটি ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অযত্নে অবহেলায় জায়গাটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যদি এই জায়গায় শ্রমিকদের জন্য একটা বাসস্থান করে সংরক্ষণ করতো, শ্রমিকদের থাকার জায়গা দিতো তাহলে আরও ভালো হতো। এখনো অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

স্থানীয় শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বার্তা২৪.কমকে জানান, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে রানা প্লাজার এই জায়গায় মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলে নোংরা করে ফেলছে। এছাড়া রাস্তার মানুষ হেঁটে যাওয়ার সময় এখানে প্রস্রাব-পায়খানা করে, যা শ্রমিকদের জন্যে অমর্যাদাকর।

এছাড়াও তিনি সরকার ও বিজিএমইএর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আহত-নিহত শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং এখনো যাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের সুচিকিৎসার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এব্যাপারে কথা বলতে গেলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দকে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;