করোনা আক্রান্ত হয়ে যা বললেন ডা. সেঁওতি

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস
  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হামিদা মুস্তফা সেঁওতি

হামিদা মুস্তফা সেঁওতি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হামিদা মুস্তফা সেঁওতি।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পর স্বামীসহ তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন ডা. সেঁওতি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ২ টা পর্যন্ত সেটাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রায় সাত হাজার মানুষ। স্ট্যাটাসটি শেয়ার হয়েছে দেড় হাজার ও কমেন্ট করেছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। সবাই তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

স্ট্যাটাসে হামিদা মুস্তফা সেঁওতি লিখেছেন, সবাই বলছে কাউকে বলো না। কেন বলব না? আমি তো কোনো দোষ করি নাই। আমি আপনাদের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। লকডাউনে যখন আপনারা বাড়িতে বসে সময় কিভাবে কাটাবেন তা নিয়ে দুশ্চিতাগ্রস্হ ছিলেন তখন আমি হয়তো কোনো কোভিড-১৯ পজিটিভ ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়ে। হ্যাঁ, আমি কোভিড-১৯ পজিটিভ। এতে আমার কোনো লজ্জা বা ভয় বা আফসোস নাই। বরং আমি খুব গর্বিত। কারণ আমি শেষদিন পর্যন্ত কাজ করে এসেছি। এখন যদি মরেও যাই আমার আফসোস থাকবে না। কারণ, আমি ডাক্তার হিসেবে যে শপথ নিয়েছিলাম তা পালন করে এসেছি। আমি যতদিন পেরেছি আপনাদের জন্যে হাসপাতালে এবং মাঠে কাজ করেছি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও লিখেছেন, যেদিন আমার মনে হলো আমার নিজেরই স্যাম্পল পাঠানো দরকার, আমি সাথে সাথে স্যাম্পল পাঠিয়ে নিজেকে কোয়ারেন্টাইন্ড করেছি। আমার পক্ষে যতদূর সম্ভব মানুষ এড়িয়ে চলেছি। নিজের বাড়িতেও ফিরিনি যেহেতু আমারো পরিবার আছে, বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ি আছেন।

ডা. সেঁওতি ময়মনসিংহ নগরের চরপাড়ার নয়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। আক্রান্তের বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের কাছ থেকে বাজে ব্যবহারের শিকার হতে হয় তাকে।

সে বিষয়ে তিনি স্ট্যাটাসে বলেন, আজ আমার এলাকার মানুষের কাছে (যে এলাকায় ভাড়া থাকি) যে ব্যবহার পেয়েছি আমি ও আমার স্বামী তা আমি কোনোদিন ভুলব না। একটা কথা বলে যাই, নগর পুড়লে কি দেবালয় এড়ায়? আগামী বছর বেঁচে থাকলে এই স্মৃতিটা ভেসে উঠবে ফেসবুকের পাতায়।

উল্লেখ্য, ডা. সেঁওতি তার করোনা উপসর্গ না থাকা সত্ত্বেও করোনা পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনি তার নমুনা জমা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ নগরে আসেন। তার স্বামী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক হওয়ায় চরপাড়া এলাকায় তারা একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। মঙ্গলবার দুপুরে করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়ার পর ওই চিকিৎসক দম্পতিকে ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।