করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নগরবাসীর সেবায় নিজেদের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ডিএনসিসির কাউন্সিলররা কর্মহীন দুস্থ মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে গঠিত ত্রাণ মনিটরিং টিম ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় করছে।
কাঁচাবাজার করোনা সংক্রমণের অন্যতম উৎস হওয়ায় সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে অনেকগুলো কাঁচাবাজার খোলা জায়গায় স্থানান্তর করেছে।
বিজ্ঞাপন
সামনে বর্ষা মৌসুম। নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার অবর্ণনীয় দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে প্রকৌশল বিভাগ অগ্রিম পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বলে ডিএনসিসি'র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার রাকিবুল ইসলাম বুলেটের (২০) লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতের নির্দেশে কাঁঠালিয়া উপজেলার চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দি গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মং চেনলা। রাকিবুল ইসলাম বুলেট উপজেলার মহিষকান্দি গ্রামের দিনমজুর মো: জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাকিবুল ঢাকার চানখারপুল এলাকার একটি প্লাস্টিক কোম্পানিতে কাজ করতেন। সরকার পদত্যাগের ১ দফা দাবিতে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন দুপুরে ঢাকার চানখারপুল এলাকায় রাকিবুল ইসলাম বুলেট গুলিবিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে তাকে ড. সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার বাবা গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার চকবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার বাদী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত ৫ আগস্ট ঢাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাকিবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সহায়তায় রাকিবুলের লাশ বাড়িতে আনা হয়। রাতেই লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রাকিবুলের মেঝ ভাই মো. রাহাত বলেন, আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে কবর থেকে লাশ উত্তলন করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে লাশ বাড়িতে দিয়ে গেছে। এরপর তাকে করবে দাফন করা হয়েছে।
কাঁঠালিয়া থানার ওসি মং চেনলা জানান, ডিএমপির চকবাজার থানার মামলায় আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ উত্তোলন করা হয় ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গড়াই নদীর তীরে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এসময় নদীর তীর থেকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মাটি কাটার অপরাধে চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—খোকসা উপজেলার ওসমানপুর এলাকার ওহাবের ছেলে শাজাহান (৩২), সোলাইমানের ছেলে সোহেল রানা (৩১), বাবু শেখের ছেলে মিজানুর রহমান (৩০) এবং কুমারখালীর যদুবয়রা ইউনিয়নের হাঁসদিয়া এলাকার হযরত আলীর ছেলে আবু বক্কর (৪৩)।
স্থানীয়রা জানান, ২৯ নভেম্বর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী আজিজল, মিঠু, মিজান, মামুন, কালাম মেম্বররা গড়াই নদী থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সরকারি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে নদীর পাড় ও কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়ছে এবং গ্রামীণ সড়ক ভেঙে পড়ছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত বলেন, গড়াই নদীর তীরে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মাটি কাটার অপরাধে শাজাহান ও আবু বক্করকে ১০ দিনের এবং সোহেল রানা ও মিজানুর রহমানকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জনস্বার্থে প্রশাসনের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রাজধানীর কলাবাগানে অফিস ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাড়িওয়ালা। অফিসের মালিক বকেয়া ভাড়া পরিশোধ না করে উল্টো বাড়ির মালিকের নামে থানায় অভিযোগ দিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে হেনস্তার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন বাড়ির মালিক ইসমাইল হোসেন, সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, নূরতাজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সেলিম শেখ গত ০১/১২/২০২৩ইং তারিখে ফেয়ার দিয়া কমপ্লেক্স এর ৬/আই ফ্ল্যাটটি মাসিক ৫৫,০০০/-(পচান্ন হাজার) টাকা ভাড়ায় নিয়ে অফিস পরিচালনা করছিলেন। ভাড়া নেওয়ার পর তারা ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কাজ করে যার ফলে তাদের এক মাসের ভাড়া মুওকফও করে দেই। কিন্তু ফ্লাট ভাড়া নেওয়ার পর থেকেই তারা অনিয়মিত ভাবে ভাড়া প্ররিশোধ করত, আজ নয় কাল দিবে বলে গত এপ্রিল/২০২৪ মাস হইতে এখন পর্যন্ত তালবাহান করে আসছে। আমি গত ২৭/১১/২০২৪ইং তারিখ সকালে আমার ফ্ল্যাটের ভাড়া জন্য বিবাদীর অফিসে গিয়ে দেখি অফিসের দরজা খোলা এবং ভিতরে প্রবেশ করে দেখি অফিসের কোনো মালামাল নাই। তারা ছয় মাসের ভাড়া বাবাদ(৫৫,০০০X৬=৩,৩০,০০০/-(তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা এবং বিদ্যুৎ বিল ৩২,০০০/-(বত্রি হাজার) টাকা পরিশোধ না করিয়া পালিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক ইসমাইল হোসেন জানান, নূরতাজ ডটকমের কাছে ৬ মাসের ভাড়া বকেয়া রয়েছে। তার সেই ভাড়া পরিশোধ না করে তারা মালপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন আমার নামে থানায় তাদের অফিসের মালামাল লুটপাটের অভিযোগ করেছে।
তিনি বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকেই ভাড়া দেয়ার বিষয়ে গড়িমসি করে আসছেন নূরতাজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম শেখ। তাকে উকিলের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশও দিয়েছি আমি, সর্বশেষ গত মাসে নূরতাজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম শেখকে ভাড়া পরিশোধ না করায় অফিস খালি করার নোটিশ দেই, তারপরে তারা ভাড়া না দিয়ে আমার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, সেলিম শেখ আরও অনেক মানুষের থেকে প্রতারণা করেছেন। এখন সেসব লোক আমার বাড়িতে এসে তাকে খুঁজছে, আমাকে নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় কলাবাগান থানার ১৬নং ওয়ার্ডের বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল মান্নান ভূইয়ার নাম জড়িয়েও আনা হয়েছে চাঁদাবাজি ও লুটপাটের অভিযোগ।
এ বিষয়ে আব্দুল মান্নান ভূইয়া জানান, আমি কখনো নূরতাজের অফিসেও যাইনি। আমার বাসা একই বিল্ডিংয়ে হওয়ায় বাড়ির মালিক আমাকে বিষয়টি জানালে আমি এটা সমাধান করতে বলি। এদিকে সেলিম শেষ আমাকে জড়িয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। অথচ আমি চাঁদাবাজি লুটপাট তো দূরের কথা ওনার সাথে এর আগে আমার কথাও হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে নূরতাজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম শেখের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি কুড়িগ্রাম জেলা শাখা যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিলে প্রতিবাদী স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা ; দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ ; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’ ইত্যাদি স্লোগানে ভারতকে সতর্ক করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে জেলা শহরের শহীদ মিনার সংলগ্ন শাপলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির জেলা নেতৃবৃন্দ। বক্তারা ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননা করে ভারত সীমালঙ্ঘন করেছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীলতার জন্য ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায় দিয়ে বক্তারা বলেন, ‘ ভারতে বসে শেখ হাসিনা “র” এর মাধ্যমে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এরপর যদি আর ন্যূনতম কোনও ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করা হয় তাহলে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা কঠোরভাবে তার জবাব দেবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মুকুল মিয়া বলেন, ‘জুলাই পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে আর একবার যদি ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দেব। এদেশের মানুষ জীবন দিয়ে এই স্বাধীনতা পেয়েছে। প্রয়োজনে আবারও জীবন দিবে। তবুও আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে এ দেশে ফিরে আসতে দেবে না।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার ‘হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামে ভারতীয় একটি ডানপন্থি সংগঠনের নেতৃত্বে একদল লোক আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে বিক্ষোভ ও হামলা করেন। এ সংগঠনটি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়।
ঘটনার পর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা তার দেশের বিক্ষোভকারীদের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ আমি এই ঘটনার নিন্দা করি। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’