করোনা প্রকৃতির প্রতিশোধ নয়, মানুষের স্বেচ্ছাচারিতাই দায়ী

  করোনা ভাইরাস


মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বন্যপ্রাণী, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিষয়গুলো সামনে আসে। প্রকৃতিতে মানুষের অবাধ স্বেচ্ছাচারিতা বিশ্বকে মহামারি করোনাভাইরাসের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মার্কিন গবেষকরা দাবি করেছেন।

করোনাভাইরাস মহামারির জন্য মানুষকেই দায়ী করে গবেষকরা বলছেন, প্রকৃতির প্রতিশোধ নয়, এটা মানুষই করেছে।

বিজ্ঞানীরা প্রতিবছর দুই থেকে চারটি ভাইরাস শনাক্ত করেন, যা প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘনের ফলাফল। যার কোন একটি মহামারি আকার ধারণ করে থাকে বলে জানিয়েছেন থমাস লাভজয়। ১৯৮০ সালে যিনি প্রথম ‘জীববৈচিত্র্য’ শব্দটি ব্যবহার করেন। লাভজয়কে জীববৈচিত্র্যৈর গডফাদারও বলা হয়ে থাকে।

জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো লাভজয় জানান, এই মহামারি মানুষের প্রকৃতির ওপর স্বেচ্ছাচারী আচরণ ও বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের ফল। বিশেষ করে এশিয়ার বন্যপ্রাণীর বাজার, ওয়েট মার্কেট এবং আফ্রিকার বন্যপ্রাণীর মাংসের বাজার— এই মহামারিগুলোর জন্য দায়ী। এটা সুস্পষ্ট যে, এসব কারণে এ ধরনের মহামারি সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র।

তার মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে সেন্টার ফর আমেরিকান প্রোগ্রেসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের মহামারি ঠেকাতে যুক্তরাষ্টকে বন্যপ্রাণীর অবাধ বাণিজ্য বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

ওয়েট মার্কেট এমন ঐতিহ্যবাহী বাজার যেখানে গৃহপালিত ও বন্য জীবন্ত প্রাণীর সঙ্গে সবজি, ফল ও মাছ অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় বিক্রি হয়। এশিয়া ও আফ্রিকার লাখো মানুষের জীবিকা এই ওয়েট মার্কেটের ওপর নির্ভরশীল। এমন একটি ওয়েট মার্কেট চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে রয়েছে, যেখান থেকে কোভিড-১৯ সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হয়। এই মার্কেটে শিয়াল, ইঁদুর, কাঁঠবিড়ালী, নেকড়ের বাচ্চা এবং সালামান্ডারসহ বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণী বিক্রি হয়।

নতুন নতুন ভাইরাসের জাত উদ্ভূত হচ্ছে। এজন্য লাভজয় বাজারে বন্যপ্রাণী ও ফার্মের প্রাণীকে সবসময় আলাদা রাখতে বলেন, এতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কম সম্ভাবনা থাকে। গৃহপালিত প্রাণীকে বাজারে নেওয়ার ফলে বন্যপ্রাণী থেকে ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে, এতে সহজেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।

গার্ডিয়ানকে তিনি জানান, অবৈধ প্রাণীর বাণিজ্য একটি খেলার মতো। এটা যদি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে কালোবাজারে ছড়িয়ে পড়বে। তখন বন্যপ্রাণীর অবাধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে যাবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম জানিয়েছে, এ বছর ইতোমধ্যে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ কর্মসংস্থান হারাতে বসেছে।

এসব কারণে করোনাভাইরাসকে প্রকৃতির প্রতিশোধ বলা যাবে না, এরজন্য দায়ী আমরাই। এজন্য বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে, বলেন লাভজয়।

যদিও বন্যপ্রাণীর বাজার বন্ধে বিশেষজ্ঞরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। তারা মনে করেন, হঠাৎ করে বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য বন্ধ করে দিলে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিস্ট ড. এমি ডিকম্যান সতর্ক করে বলেন, বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ দরকার তবে বৈষম্যের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বন্ধ করা যাবে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক এক প্রোগ্রামে ২৫০ জন বিজ্ঞানী একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তার মধ্যে এমি ডিকম্যান অন্যতম। চিঠিতে বলা হয়, বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে কোনো বৈষম্য করা যাবে না, কারণ অনেক অসহায় জনগোষ্ঠী জীবিকা এর ওপর নির্ভরশীল।

এই চিঠিতে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও গরিব মানুষের ওপর। ধারণা করা হয়, এই ভাইরাসের উৎস চীনের ওয়েট মার্কেট। এ কারণে ওয়েট মার্কেটে বন্যপ্রাণী নিষিদ্ধ এবং ওষুধ তৈরিতে বন্যপ্রাণীর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। তবে বৈষম্যমূলকভাবে এ বাণিজ্য বন্ধ করলে তা কার্যকর হবে না।

এছাড়া অরনোকিয়া ও আমাজনে কিছু আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর বন্যপ্রাণী নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ‘তাদের জীবিকায় আঘাত’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ক্যামেরুন ভিত্তিক এনজিও মামা মওফোন জানায়, যাদের জীবিকা বন্যপ্রাণীকে কেন্দ্র করে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে এদের জীবন ব্যবস্থা ধ্বংস হবে। এদের মতো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভালো মাংস ও প্রোটিনের ব্যবস্থা করা সম্ভব না। তবে সবকিছু পর মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রকৃতির ওপর কতটুকু খরবদারি করবে তারা।

সূত্র: গার্ডিয়ান

   

বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, আসামী কারাগারে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বগুড়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধন (৬) হত্যার সাথে জড়িত সুকুমার দাসকে (২৫) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নিহত বন্ধনের বাবা রবি দাস বাদী হয়ে সকুমার দাসকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তয়ন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতার সুকুমারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কেও সুকুমার মুখ খুলছে না। বারবার বলছে আমার ভুল হয়ে গেছে। সুকুমারকে অনেকে মানসিক রোগী বলে দাবী করলেও তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এদিকে রবিদাসের দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে তার স্ত্রী কাকলী দাসের মামা সুকুমার। মামা-ভাগ্নির পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সুকুমার এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে পারিবারিক বিরোধের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের পরপরই সুকুমারকে পুলিশ আটক করে এবং তার দেখানো মতে বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধান কাটা কাঁচি জব্দ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া সদরের শশিবদন গ্রামে মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধনকে তার মায়ের মামা সুকুমার ঘরে ডেকে নিয়ে কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

  করোনা ভাইরাস

;

এসি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত ধারণা ফায়ার সার্ভিসের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।

তিনি বলেন, দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান চালায়। তবে আমরা কোনো ভুক্তভোগীকে পাইনি। আগুন লাগার পরপরই আইসিইউতে থাকা সবাইকে সরিয়ে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধরণা করছি আইসিইউর ভেতরে এসি ছিলো। সেটা থেকে হয় তো আগুন লেগেছে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিলো সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় অক্সিজেন লাইনটি বন্ধ করা হয়েছে।

  করোনা ভাইরাস

;

গাংনীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ৫ মাদক কারবারি আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,মেহেরপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে ১১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৫০০ টাকা ও মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল। 

বৃহষ্পতিবার রাতে পুলিশের পৃথক পৃথক টীম কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।

আটককৃতরা হচ্ছেন- গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের ছাদের আলীর ছেলে স্বপন (৩৮) ও আয়ুব আলীর ছেলে লিটন (৪০), পলাশী পাড়ার মৃত সুজা উদ্দীনের ছেলে টেফেন ওরফে খালিদ মাহমুদ (৩০), আলমডাঙ্গার নগর বোয়ালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মামুনর রশীদ (৩০) ও ছাতিয়ান গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে স্বজল (২৭)। এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু সাপেক্ষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার রোধে গাংনী থানা পুলিশ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামে মাদকের মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

  করোনা ভাইরাস

;

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা চার দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই যেন তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই উপরে উঠছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে, তীব্র তাপদাহে প্রাণীকূল ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও যেন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন ১২ এপ্রিল থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৯ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত
 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই গরমে হিট স্ট্রোকের ঝু্ঁকি থাকে, তাই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।

গরমে স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন

এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, কড়া রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার নির্জন পরিবেশ খুঁজে বাতাসের জন্য প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। তবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ তীব্র গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে বাইক বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দীন নামের এক যুবক জানান, বাইক নিয়ে হাটে এসে পড়েছি বিপাকে। একে তো খোলা মাঠে হাট, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে। রোদ আর গরমে মনে হচ্ছে শরীর একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে ছাতাও নিয়ে আসা হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডাব বিক্রেতা শমসের মন্ডল জানান, এই তীব্র গরমে তার ডাবের চাহিদা ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ ডাব তিনি বাজারে নিয়ে আসেন, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ একটু স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন।

এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, গরমের সাথে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ার রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসক পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।

  করোনা ভাইরাস

;