বাংলাদেশে করোনার ৮টি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসবাংলাদেশের করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সে ৮ টি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পেয়েছে বিসিএসআইআর।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এ রোববার (১৯ জুলাই) এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সেলিম খান জানান, এ পর্যন্ত তারা ১৭৩টি নমুনার সিকোয়েন্সিং করেছেন। এতে দেখা গেছে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পরা ভাইরাসটির জিনেমিক লেভেলে ৫৯০ ও প্রোটিন লেভেল ২৭৩ বার মিউটেশন হয়েছে। ৮টি ইউনিক মিউটেশন পাওয়া গেছে যা বিশ্বের কোন দেশের ডাটার সঙ্গে মিল নেই। এটি এখন গবেষণার মূল বিষয়।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের যে গবেষণা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশকে বিবেচনায় রাখা হবে, তা এখন নিশ্চিত হয়েছে। বৃটেন ও আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, তারা যে পরিমাণ সিকোয়িন্সিং ডাটা চেয়েছেন তা দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন বলা যায় করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসলে বাংলাদেশের জন্য কার্যকর ভ্যাকসিন আমরা পাব।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে বলা যায়, বিসিএসআইআর যেসব ডাটা পেয়েছে তাতে ইতালির করোনার সঙ্গে মিল আছে। তবে ইউনিক যে কয়টি সিকোয়েন্স মিলেছে তার আরো নমুনায় পাওয়া যায় কিনা তা দেখতে হবে। বিস্তর গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে সংক্রমণের ধরনের বিষয়ে। সেজন্য আরো সময়ের প্রয়োজন।
দেশের সব বিভাগ থেকে সংক্রমণ হার ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে তিনশতাধিক জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। বিসিএসআইআর’র একটি গবেষণা দল সারাদেশ থেকে নমুনা ও রোগীর মেডিকেল হিস্টোরি সংগ্রহ এবং জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ অব্যাহত রেখেছে।
বিসিএসআইআর’র ড. মো. সেলিম খানের নেতৃত্বে গবেষণা দলটি এ পর্যন্ত ১৭৩টি নমুনার সিকোয়েন্সিং করেছে। এগুলোর মধ্যে ৯৫% ভাগ D614G করোনাভাইরাস স্ট্রেইনটি সিকোয়েন্সিং এ শনাক্ত হয়েছে যা বাংলাদেশের সংক্রমণের প্রধাণ কারণ। এছাড়া অন্যান্য আরো জীবাণুর উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা। জীবাণুগুলো সঙ্গে সংক্রমণের তীব্রতার সম্ভব্য যোগসূত্র নির্ধারণের গবেষণা চলছে।
করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের ডাটার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী ৭৮টি ভ্যাকসিন প্রকল্প চালু আছে। আরো ৩৭টি চালু হবে। বাংলাদেশের ডাটাগুলো Global Initiative on Sharing All Influenza Data (GISAID) প্রকাশ করেছে। ফলে যে কেউ চাইলে ভ্যাকসিন ডিজাইনের জন্য বাংলাদেশের ডাটা নিয়ে কাজ করতে পারবে। এখন পর্যন্ত বিসিএসআইআর’র ১৭৩টি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২২টি করোনা সিকোয়েন্সিং ডাটা NCBI ও GISAID প্রকাশ করেছে।