কেন খাবেন কালোজিরা?
বিভিন্ন ধরণের রান্নায় তো বটেই সিঙ্গারাতেও ছোট কালো যে দানাটির উপস্থিতি পাওয়া যায়, সেটা আমাদের সকলের পরিচিত কালোজিরা।
ভীষণ উপকারী প্রাকৃতিক এই উপাদানটির বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa.
রন্ধনশিল্পে তো বটেই চিকিৎসাশাস্ত্রেও কালোজিরা অনন্য ভূমিকা পালন করে। এমনকি জেনে অবাক হবেন, শত বছর আগে ব্রঙ্কাইটিস ও ডায়রিয়ার মতো মহামারী রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতো কালোজিরা।
তিতকুটে স্বাদের এই খাদ্য উপাদানটি প্রতিদিন ১/৪ চা চামচ পরিমাণ খেলেও সুস্থ থাকা যাবে নিত্যদিনের নানান ধরনের ছোট-বড় অসুস্থতা থেকে। উপকারী এই উপাদানের অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জেনে রাখুন।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ
শরীরকে ফ্রি-রেডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে ও কোষের অক্সিডেটিভ ড্যামেজকে কমাতে প্রয়োজন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। গবেষণার ফল জানাচ্ছে বড় ধরণের ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রভাব থাকে। কালোজিরাতে থাকা থাইমোকুইনন (Thymoquinone), কার্ভাক্রোল (Carvacrol), টি-অ্যাথল (T-anethole), ফোর-টারপিনল (4-terpineol) থেকে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর
উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। যে কারণে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। প্রায় ১৭টি ভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা গেছে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল তথা LDL এর মাত্রা কমাতে কালোজিরা খুব ভালোভাবে কাজ করে। এমনকি কালোজিরা তেল রক্তে ভালো কোলেস্টেরল তথা HDL এর মাত্রা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
ব্যাকটেরিয়া দমন করে
রোগ তৈরিকারী ব্যাকটেরিয়া থেকেই ক্ষতিকর ইনফেকশন দেখা দেয়। কয়েকটি টেস্ট টিউব গবেষণা থেকে দেখা গেছে কালোজিরাতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা দারুণ কার্যকরভাবে শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে ও দমনে কাজ করে।
সুস্থ রাখে লিভার
শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমের জন্য লিভারের সুস্থতা আবশ্যক। লিভার শরীর থেকে টক্সিন, মেটাবোলাইজ ড্রাগস, নিউট্রিয়েন্টসের উচ্ছিষ্ট, ক্ষতিকর কেমিক্যালের প্রভাবকে দূর করে। কালোজিরা লিভারের সুস্থতায় চমৎকার কাজ করে। মূলত কালোজিরাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ও প্রদাহ-বিরোধী উপাদানের উপস্থিতি লিভারকে সুস্থ রাখতে কাজ করে।
নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তে চিনির মাত্রা
রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়া মানেই ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দেওয়া। সাত মাসের লম্বা একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, তিন মাস যাবত যারা নিয়মতি কালোজিরা খেয়েছেন, তাদের রক্তে চিনির মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং ইন্স্যুলিন সেন্সিটিভিটি খুব ভালোভাবে কাজ করেছিল।
আরও পড়ুন: অজানা গুণে ভরপুর সহজলভ্য লাউ
আরও পড়ুন: তুলনাহীন তেজপাতা!