শক্তিপ্রয়োগে কার লাভ?

  • কবির য়াহমদ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কোটা আন্দোলনকারী ও সরকার দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন কয়েশ। আহতদের মধ্যে আছেন যেমন কোটা আন্দোলনকারীরা, তেমনি আছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীও। যদিও কোটা আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বেশি এখানে।

যে কোনো বিচারে যে কোনো সংঘর্ষ অনাকাঙ্ক্ষিত। এসবে প্রাপ্তির কিছু নাই। থাকে বল প্রয়োগে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। রাজধানীর শিক্ষাঙ্গন বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গতকালের অনাকাঙ্ক্ষিত এই সংঘর্ষ শিক্ষার্থীদের মধ্যকার। এখানে ছাত্রলীগ ও কোটা আন্দোলনকারীদের নাম দেওয়া যায় তবে দুপক্ষই শিক্ষার্থীই। সংঘর্ষে পুলিশ প্রশাসন অংশ নেয়নি। কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ এখানে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে নেমেছে। মারধরে কোটা আন্দোলনকারীরা শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে যদিও, তবে তারা সরকার ও সরকারি দলের নানা অংশ ছাড়া সহানুভূতি পাচ্ছে সকল মহল থেকে।

বিজ্ঞাপন

কীভাবে সংঘর্ষের শুরু, কেন ঘটল এমন, এই যে শক্তি প্রয়োগ এতে কার কী লাভ হলো—এই প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম যা জানাচ্ছে তাতে দেখা যায়, হলে হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান এবং সেখানে কোটা আন্দোলনকারীদের যাওয়া এবং মাইকে স্লোগান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার আহবান, ভেতরে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসার চেষ্টা, হলে-হলে ছাত্রলীগের অবস্থান, ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা, এমন নানা অভিযোগ তুলে আন্দোলনকারীরা ইট পাটকেল ছুঁড়ে, ছাত্রলীগও এর জবাব দেয়।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের শুরু যেভাবে’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে প্রথম আলো জানায়, ‘‘আন্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধু হলের ভেতরের ফটকের সামনে গিয়ে রিকশায় থাকা মাইকে ‘বঙ্গবন্ধু হলের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। কয়েকজন হলের ভেতরে ঢুকে কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের আনতে যান। মিনিট কয়েক পর মিছিলটি বের হয়ে আসে। এ সময় তারা ‘বাধা দিলে বাধবে লড়াই’সহ নানা স্লোগান দেন। বঙ্গবন্ধু হল থেকে বের হয়ে আন্দোলনকারীদের মাইক থেকে বলা হয়, তারা খবর পেয়েছেন, কয়েকজন আন্দোলনকারীকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর তারা প্রবেশ করেন জিয়াউর রহমান হলে। হলের সামনে গিয়ে তারা ‘দালালদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’সহ নানা স্লোগান দেন। আন্দোলনকারীদের কয়েকজন ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের আনতে হলে প্রবেশ করেন। এ সময় বাইরে আন্দোলনকারীদের জমায়েত থেকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের মিছিলটি জিয়াউর রহমান হল থেকে বের হয়ে বিজয় একাত্তর হলের ফটকের দিকে যায়। মিছিলটি হলের ফটকে যাওয়ার পর মাইকে বলা হয়, আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে বিজয় একাত্তর হল সংসদে আটকে রাখা হয়েছে। একপর্যায়ে মাইকে শিক্ষার্থীদের একাত্তর হলের ভেতরে ঢোকার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, ‘সন্ত্রাসীদের ধরে নিয়ে আসুন।’ একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা হলের বাগানে ঢুকে পড়েন। তারা নিচ থেকে ইট ও পাথরের টুকরা, ছেঁড়া জুতা প্রভৃতি হলের বিভিন্ন তলায় থাকা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকেন। ওপর থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও প্লাস্টিকের বোতল, ঢিল প্রভৃতি ছুড়ছিলেন। দুই পক্ষই পরস্পরকে অকথ্য গালিগালাজ করছিল। এর মধ্যে হলের বাগানে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মারামারি বেধে যায়। এরপর হল শাখার কিছু নেতা আন্দোলনকারীদের দিকে এগিয়ে এলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের বিভিন্ন তলা থেকে লাঠিসোঁটা, কাঠ, লোহার পাইপ ও বাঁশ নিয়ে দল বেঁধে নিচে নেমে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান, অনেকে দৌড়ে জসীমউদ্‌দীন হলের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিজয় একাত্তর হলে ঘটনার শুরু হলেও আশপাশের হলগুলোর (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও জিয়াউর রহমান হল) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও সংঘর্ষে যোগ দেন। সংঘর্ষ চলাকালে দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে ইট ও পাথরের টুকরা ছুড়তে থাকে। দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের হাতেই ছিল লাঠিসোঁটা ও বাঁশ।’’ [১৬ জুলাই ২০২৪] প্রথম আলোর প্রতিবেদনকে সূত্র হিসেবে উল্লেখের কারণ নানা সময়ে পত্রিকাটি যে কোন আন্দোলনে একটা পক্ষ নিয়ে ফেলে। নির্দিষ্ট বিষয়ে, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য একাধিক নিবন্ধ প্রকাশ করে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না যদিও, তবে এই প্রতিবেদনে ধারাবর্ণনায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থানের বিপরীত।

বিজ্ঞাপন

বার্তা২৪.কমের এক প্রতিবেদন বলছে, ‘‘ছাত্রলীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়াতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন তারা।’’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘আন্দোলনকারীরা বলেন, তারা (ছাত্রলীগ) আজকে আবার বিকেল ৩টায় টোকাইদের এই ক্যাম্পাসে মহড়া দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়ে এই দেশের শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়। আমরা আজকে তাদের এই রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়াতে দেব, দাঁড়াতে দেব, এই টোকাইদের, তখন শিক্ষার্থীরা না না বলেন। তাহলে আজকে আমাদের এই হাজার হাজার লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের এখানে বসে থাকতে হবে।’’

হলে-হলে গিয়ে ‘সন্ত্রাসীদের ধরে নিয়ে আসুন’, ‘টোকাইদের বসতে দেওয়া হবে না’ জাতীয় স্লোগান, ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়ে হলে-হলে ছাত্রলীগের অবস্থান স্বাভাবিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করে। এছাড়া রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ‘তুমি কে আমি কে— রাজাকার রাজাকার’ বলে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ স্লোগান ওঠেছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে সেটা পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। যদিও পরের দিন আন্দোলনকারীদের নেতাদের কয়েকজন বলছেন, তারা নিজেদের রাজাকার দাবি করে স্লোগান দেননি। তারা বলেছেন, ‘তুমি নও আমি নই— রাজাকার রাজাকার’। আর এদিকে, ফেসবুকে একটা অংশ প্রচার করছে স্লোগান নাকি ওঠেছিল, ‘তুমি কে আমি কে— রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যকার ‘স্বঘোষিত রাজাকার’ অংশের স্লোগানের পর মূলত পুরো আন্দোলনের মোড় ঘুরে গেছে। মধ্যরাতের স্লোগানের পর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের মন্ত্রীদের অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘যে বিষয়টি (কোটা) দেশের উচ্চ আদালতে বিচারাধীন, সেটি আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কোনো কিছুই করার নেই। বিচারাধীন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা বারবার আন্দোলনকারীদের বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত বাদ রেখে অন্য কোনো উপায়ে বা বলপ্রয়োগে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই। আন্দোলনের নামে দুর্ভোগ মেনে নেব না। রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সভা-সমাবেশ আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা লক্ষ করছি, এ আন্দোলনের কুশীলব বিএনপি-জামায়াত তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করতে চায়। তাদের কারসাজিতে গতকাল (রবিবার) রাতে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে। তারা সমগ্র ছাত্রসমাজকে সরকারের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে।’’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য প্রাসঙ্গিক। তবে তিনি এও বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে। শিক্ষার্থীদের রাজাকার স্লোগানের কারণে কোনো ধরনের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে কি না জানাতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। [দেশ রূপান্তর, ১৬ জুলাই ২০২৪]

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিশাল অংশের নিজদের ‘রাজাকার’ দাবির পর প্রকৃত অর্থে পুরো দৃশ্যপট পালটে গেছে। এতদিন ছাত্রলীগ আন্দোলনে কোন ভূমিকায় না থেকে কোটা সংস্কারের পক্ষেই বলছিল, সেই ছাত্রলীগ মাঠে হাজির, এবং সংঘর্ষের ঘটনা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ এবং ছাত্রলীগ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। এখন তাই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। শক্তি প্রয়োগের নজির ফুটে ওঠেছে সোমবারের ঘটনায়। এই শক্তি প্রয়োগে দুই পক্ষই সমভাবে দায়ী। উসকানি দিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া যা বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের ওঠে এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটেছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের। এখানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হলে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে আপিল বিভাগ কোটা সংস্কারের বিষয়টিকে যেখানে একটা ইতিবাচক সমাধানের পথে নিয়ে যাচ্ছিল, সরকারেরও তাতে সায় আছে, সেই পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। সমাধান যখন সন্নিকটে তখন এইধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টির নেপথ্যে কি কেউ আছে, এটা তাই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে যৌক্তিকতা আছে। এই যৌক্তিকতা কেউ অস্বীকার করছে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে শুরু করে সরকার—সবাই দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রধান বিচারপতি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন, তাদেরকে আদালতে এসে বক্তব্য উপস্থাপনেরও পরামর্শ দিয়েছেন। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের যে আন্দোলন সেটা ব্যর্থ হয়নি, বরং একটা সম্মানজনক সমাধানের পথেই যাচ্ছিল। তবু আন্দোলনরতদের আন্দোলন থামেনি, বরং নিজেদের ‘রাজাকার’ দাবি করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তারা সেটা যেকোনো দেশপ্রেমিক বাঙালি-বাংলাদেশিকে সংক্ষুব্ধ করবে।

তবু আমরা চাই এর সমাধান। এখানে শক্তি প্রয়োগে আন্দোলন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা/নেওয়া এবং বানচাল করে দেওয়ার চেষ্টা হিতে বিপরীত হতে পারে। সংঘর্ষের পর সামাজিক মাধ্যমে আহতদের ছবি ছড়াচ্ছে তাতে মানুষের সহানুভূতিই পাচ্ছে তারা। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও আন্দোলনকারীদের যারাই সংঘর্ষে জড়িয়েছে তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল, অর্থাৎ দুই পক্ষের পূর্ব-প্রস্তুতি ছিল।

এইধরনের শক্তি প্রয়োগের ফল কী হয় সেটা আমাদের চোখে দেখা। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, এবং সেই আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুরের ওপর একের পর এক হামলা, তাকে নেতা বানিয়ে দিয়েছে। ওই আন্দোলনের পথ ধরে নুরুল হক নুর পরে ডাকসুর ভিপি হয়েছিলেন। জাতীয় রাজনীতিতেও উত্তাপ ছড়িয়েছিলেন বেশ কিছুদিন। নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন, পরে যদিও আন্দোলন ও দলের অর্থ তছরুপের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথেই বসেছেন। নুরের এই হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জাতীয় রাজনীতির চিত্র হলেও কোটা আন্দোলন ও তার একের পর এক মার খাওয়া তাকে কিছুদিনের জন্যে হলেও আলোচিত এক নেতায় পরিণত করেছিল।

সকল পক্ষ যখন কোটা সংস্কারের দাবিতে একমত, তখন বিষয়টিকে আর রাজপথে না রাখাই হবে যৌক্তিক। এখানে উসকানি থাকবে, কিন্তু এই উসকানিকে অগ্রাহ্য করে সহনশীল থাকা উচিত ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। দুই পক্ষ যদি সহনশীল না হয়, তবে যৌক্তিক এই দাবি এবং আন্দোলনটাই শেষ পর্যন্ত কোন পক্ষের ইগো ইস্যু হয়ে ওঠবে। আমরা চাইব না তেমন কিছু হোক।