২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট

যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে কমলো ৫ হাজার কোটি টাকা

  সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ
  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ বাজেট বরাদ্দ গতবারের চেয়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা কমেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনে এই ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বিজ্ঞাপন

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা ইত্যাদির গুরুত্ব বিবেচনায় যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮০ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। বর্তমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এখাতে ৮৫ হাজার ১৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যা সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া খাত ছিল।

এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিবহন ও যোগাযোগখাত সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছিল, যা তার আগের অর্থবছর থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা বেশি ছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে এখাতে ৮১ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।

বিজ্ঞাপন

অর্থমন্ত্রী বলেন, মহাসড়কের পরিমাণ প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ হাজার ৬৭৮ কিলোমিটারে এবং গ্রামীণ সড়ক প্রায় ৭৬ গুণ বেড়ে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৬ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। নির্মিত হয়েছে, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলের ইত্যাদি মতো গর্ব করার অবকাঠামো।

আধুনিক ও টেকসই মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহাসড়কে ১ হাজার ৪৩৯টি সেতু নির্মাণ-পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৮৫১ দশমিক ৬২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

রেলখাতের উন্নয়ন উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, মোট রেলপথ ২ হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার থেকে দেড় গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার।

সরকারের আগামী পরিকল্পনা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ ১২টি এক্সপ্রেসওয়ে এবং ১০টি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্য শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এটি হবে তার প্রথম বাজেট ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট। সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত রয়েছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে।

২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম করা হয়েছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার ঘাটতিই থাকবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে।

এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণও রয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির টার্গেট থাকছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।