২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগে বরাদ্দ মাত্র ১০০ কোটি টাকা!

  সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ
  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য উপস্থাপন করা জাতীয় বাজেটের শিরোনাম করা হয়েছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। ২০১২ পৃষ্টার এই বাজেট দলিলে ‘স্মার্ট’ শব্দটি লেখা রয়েছে ৪৯ বার।

বাজেট শিরোনামে প্রাধান্য পেলেও চলতি বছরের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে থাকা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগে নতুন বছরের বাজেটে বরাদ্দ থাকছে মাত্র ১০০ কোটি টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটেও এখাতে একই পরিমাণে বরাদ্দ থাকলেও এ সংক্রান্ত কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে কোনো তোড়জোড় দেখা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

বাজেট বক্তব্যে কর আহরণ, সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ সরবরাহ, শিক্ষা কার্যক্রমসহ বিভিন্নখাতে প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির একটা তালিকা তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বাজেট বক্তৃতায় আইসিটিখাতে বেশ কিছু কর ছাড় এবং প্রণোদনার কথাও বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়ক হিসেবে দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে ৫জি’র উপযোগীকরণে বিটিসিএল-এর অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক উন্নীতকরণ ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আর্থিকখাতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর ভিত মজবুত করতে ২টি ডিজিটাল ব্যাংকের অনুকূলে লেটার অব ইনটেন্ট প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ডিজিটাল ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

কর কাঠামোতে স্মার্ট বাংলাদেশ উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, এআই বেজড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ব্লকচেইন বেজড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট, রোবোটিকস প্রসেস আউটসোর্সিং, সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস, ডিজিটাল ডেটা অ্যানালাইটিকস ও ডেটা সায়েন্স ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসসহ ১৭টি খাতে ২০২৭ পর্যন্ত অর্জিত আয়কে করমুক্ত রাখা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৯ সাল থেকে নির্বাচিত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৩৩ হাজারের বেশি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ১১ হাজারের বেশি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরে আরো ৬৫ হাজার ক্লাসরুম ও ১২ হাজার ল্যাব তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও বিলিং ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবাদে সিস্টেম লস কমেছে বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্য শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এটি হবে তার প্রথম বাজেট ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট।

সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত রয়েছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে।

২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম করা হয়েছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার ঘাটতিই থাকবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি পূরণে কয়েকটি খাতকে উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাত থেকে মোটা দাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ১ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প ঋণও রয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত খাত হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির টার্গেট থাকছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।