বৈশ্বিক মহামারির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক সমন্বয়হীনতা!

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাস/কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি আকারে মাত্র ছয় মাসে কোটির বেশি মানুষকে আক্রান্ত ও ছয় লাখ মানুষের মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনা ঘটানোর পটভূমিতে তীব্রভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সংস্থার পক্ষেও জবাব দিয়ে দায়ী করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে। এতে মহামারি পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে বিশ্বে বিরাজমান সমন্বয়হীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে।   

তোপের মুখে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবচেয়ে বড় সমালোচক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সংক্রমণ-তালিকায় শীর্ষ স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র  ১ লক্ষ ৪০ হাজার নাগরিকের মৃত্যুতে দিশেহারা। 

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আক্রান্ত ও প্রাণহানির  কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেদেশের সংবাদ সংস্থাগুলোর একাংশের মত, এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। অন্যদিকে, একটি মার্কিন দৈনিকে হু-র উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছিলেন ২৩৯ জন বিজ্ঞানী। তাঁরা দাবি তোলেন, হু তাদের নির্দেশিকায় কোভিড-১৯-কে বায়ুবাহিত রোগ হিসেবে উল্লেখ করুক। এর পরে চাপের মুখে দিন দুয়েকের মাথায় হু নির্দেশিকা পরিবর্তন করে জানায়, সম্পূর্ণ ভাবে বায়ুবাহিত না-হলেও বদ্ধ ঘরের হাওয়ায় ছড়াতে পারে ভাইরাসটি। 

হু-এর এ ভাবে মতবদল নতুন নয়। গোড়ার দিকে তারা বলেছিল, সব সময় মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। পরে নিজেরাই সমস্ত দেশের সরকারকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে জোর দিতে থাকে।

একটি মার্কিন দৈনিকে লেখা হয়েছে: ‘সংক্রমণ রুখতে মুখে মাস্ক পরা উচিত না অনুচিত, এ নিয়ে স্পষ্ট করে বার্তা দিতে পারেনি হু। তারা এক সময়ে বলেছিল, অসুস্থ হলে তবেই মাস্ক পরুন। হু-এর এ ধরনের বার্তাতেই এত ধন্দ ছড়িয়েছে বিশ্ব জুড়ে।’

তবে শুধু হু নয়, জনসাধারণকে সন্দিহান করার পিছনে রাষ্ট্রনেতাদের ভূমিকাও কম নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই মাস্ক-বিরোধী। পারস্পরিক দূরত্বের প্রয়োজনীতাও মানতে বাধ্য নন তিনি। 

হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো, যার দেশ চরমভাবে আক্রান্ত। সাংবাদিক বৈঠকে এসে মাস্ক খুলে জানিয়েছিলেন, তিনি কোভিড-পজ়িটিভ। সংবাদ সংস্থাগুলি তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে। তারপর ফের পরীক্ষা হয় ৬৫ বছর বয়সি বোলসোনারোর। আবার পজ়িটিভ রিপোর্ট। চিকিৎসকেরা তাঁকে ঝুঁকির তালিকায় রেখেছেন। ব্রাসিলিয়ায় সরকারি বাসভবনে কোয়রান্টিন আছেন তিনি অবশেষে। 

অথচ সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে। আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিল, পাঁচে পেরু, ছয়ে চিলি, সাতে মেক্সিকো। ব্রাজিল মৃত্যুতেও দ্বিতীয়। সাড়ে ৭৫ হাজার ব্রাজিলীয় মারা গিয়েছেন ইতিমধ্যেই। মৃতের সংখ্যায় ইটালিকে ছাপিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে মেক্সিকো। ৩৭ হাজার ছুঁইছুঁই মারা গিয়েছেন এ দেশে। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সম্প্রতি বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বাড়িতেই থাকতেই হবে এমন নয়, বরং সতর্ক থাকুন।’ তবে, মৃতের সংখ্যার নিরিখে ব্রিটেন তৃতীয়, যেখানে ৪৫ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। এখন অবশ্য খোদ ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক মাস্ক-পরার গুরুত্ব বোঝাতে রীতিমতো  হিমশিম খাচ্ছেন। 

ইউরোপের কোথাও কোথাও সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী দোকান-বাজারে গেলে মাস্ক পরতে হবে। তবে পাব কিংবা অফিসে মাস্ক পরার দরকার নেই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে য , এই ফারাকের কারণ কী? বাজারের জন্য এক নিয়ম আর অফিসের জন্য অন্য নিয়ম কেন, জবাব দিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।  

নানা দেশের সরকার প্রধানদের হটকারিতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে হু অবশ্য বলেছে, সব দায়িত্ব তাদের নয়। তাদের একার পক্ষে সারা বিশ্বের মহামারি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। স্ব স্ব দেশগুলোকে পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। 

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনে যখন প্রতিনিয়ত আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের মধ্যকার মুখোমুখি-সমালোচনামূলক অবস্থান চরম সমন্বয়হীনতার ইঙ্গিত বহন করছে। একাধিক স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি চিহ্নিত করেছে 'দুঃখজনক' ও 'ক্ষতিকর' তৎপরতা হিসেবে। তারা মনে করে, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সমন্বয়হীনতা বৈশ্বিক মহামারির বিপদ আরো বাড়াবে। 

বৈশ্বিক মহামারির বিরুদ্ধে যখন প্রয়োজন বৈশ্বিক ঐক্য ও সমন্বয়, তখন বৈশ্বিক সমন্বয়হীনতার ঘটনা রাজনৈতিক নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতার প্রমাণবহ। তাদের অপরিণামদর্শিতা বিশ্ববাসীকে প্রাণঘাতী ভাইরাসের আক্রমণের মুখে আরো বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত করবে।  

   

পিৎজা খেতে ইতালি ভ্রমণ!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে এক মুখরোচক খাবার হলো পিৎজা। প্রায় সব দেশেই এ খাবারটি বেশ জনপ্রিয়। দিনে কিংবা রাতের পার্টির হোক সব সময়ই অনেকের কাছে পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে থাকে বিভিন্ন ফ্লেভারের ও ব্র্যান্ডের পিৎজা। অনেক পিৎজা প্রেমী আছেন যারা পিৎজা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। সম্প্রতি এরকমই দুই পিৎজা প্রেমী কেবল পিৎজা খাওয়ার জন্য বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। তাও মাত্র একদিনের জন্য। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। প্রতিবেদন- এনডিটিভি। 

যুক্তরাজ্যের লিভারপুল থেকে মোরহান বোল্ড (২৭) ও জেস উডার (২৬) নামে দুই বান্ধবি তাদের কর্মস্থল থেকে এক দিনের ছুটি নিয়ে উড়ে যান পিৎজার দেশ ইতালিতে। গত ২৪ এপ্রিল এমন ঘটনাই ঘটেছে। একদিনের এই ভ্রমণে তারা দিনভর সেখানে কেনাকাটা করেছেন, ঘুরে বেড়িয়েছেন, পিৎজা খেয়েছেন।

তারা ২৪ এপ্রিল সকাল ৬টার ফ্লাইট নেন, আবার সন্ধ্যা ৬টায় ফিরে আসেন। তাদের এই ভ্রমণে মোট খরচ হয়েছে ১৭০ পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২৩ হাজার ৩১৮ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে উড়োজাহাজের ভাড়া, এয়ারপোর্ট পার্কিং, খাবার ও বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড।

নিজেদের এই অদ্ভুত ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে মোরহান বোল্ড বলেন, লিভারপুল থেকে লন্ডনে যাওয়ার চেয়ে আমাদের জন্য ইতালি যাওয়া সাশ্রয়ী ছিল। কেননা, লন্ডন ইউস্টনে যাওয়া ও সেখান থেকে আসা বাবদ খরচ হবে প্রায় ১০০ পাউন্ড। এটি কিন্তু খাবার ও পানীয় ছাড়াই। আর এক দিনের এই সফর খুবই সহজ। এর জন্য ব্যাগ গোছাতে হয় না। সোজা সিকিউরিটি হয়ে উড়োজাহাজে। আমি যদিও এক দিন ছুটি নিয়েছি, পরের দিন আবার যথাসময়ে কাজে যোগ দিয়েছি।’

দুই বান্ধবি পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে অনেকগুলো ছবি তুলেছেন। আর ভাল পিৎজা রেস্তোরাঁ খুঁজে পাওয়ার জন্য গুগোল ম্যাপের সাহায্য নিয়েছেন।
তারা পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে বসে পিৎজা খেতে খেতে ছবি তুলেছেন আর নিজেদের আত্মতৃপ্তির কথা শেয়ার করেছেন।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

পুলিশ-সমাজসেবা কর্মকর্তাদের সহায়তায় বাড়ি ফিরলো শিশু ইয়ামিন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

 

পুলিশ ও সমাজসেবা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় দেড় মাস পর খুলনা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লালপুরে নিজের বাড়ি ফিরতে পেরেছে সাত বছরের শিশু ইয়ামিন।

চলতি বছরের ১৯ মার্চ নিরুদ্দেশ মাকে খুঁজতে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে খুলনা চলে যায় ইয়ামিন। এরপর সে নিজেই নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তাকে আর খুঁজে পায়নি পরিবার। অবশেষে অনেক নাটকীয় ঘটনার পর পুলিশ ও সমাজসেবার কর্মকর্তাদের সহায়তায় বুধবার (৮ মে) ঢাকার ফতুল্লার লালপুরে নিজের বাড়ি পৌঁছাতে পেরেছে ইয়ামিন।

পুলিশ ও সমাজসেবা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ১৯ মার্চ রাত ৯টায় হঠাৎ ফোনকল আসে খুলনা মহানগরীর হরিণটানা থানায়। ফোনকলে জানানো হয়, একটি শিশু খুলনার গল্লামারী এলাকায় কান্নাকাটি করছে। পুলিশ নিয়ে সেখানে হাজির হন হরিণটানা থানার এসআই (উপপরিদর্শক) মো. মাসুম বিল্লাহ।

ওই শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করে তারা জানতে পারেন, তার নাম ইয়ামিন। বয়স ৭। বাড়ি ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের আশপাশে। সে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে এসেছে।

পরে তাকে থানায় এনে কমলাপুর রেলস্টেশনের আশপাশের থানায় খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু কোথাও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে শিশু ইয়ামিনকে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের জিম্মায় দেওয়া হয়। এরপরের দিন ২০ মার্চ থেকে শিশু ইয়ামিনকে বটিয়াঘাটার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের বালক হোস্টেলে হেফাজতে রাখা হয়।

এদিকে, শিশুটির অভিভাবকের সন্ধানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার এবং কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশসহ ডিএমপির বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়।

পরবর্তীতে শিশু ইয়ামিন জানায়, তাকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে গেলে তার বাড়ি চিনিয়ে দিতে পারবে। সেই মোতাবেক বটিয়াঘাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল বুধবার (৮ মে) সকালে ইয়ামিনকে নিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে রওয়ানা করে। কিন্তু সেখানে ইয়ামিনের পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দুপুর ১টার দিকে ইয়ামিন নারায়ণগঞ্জ রুটের একটি ট্রেন দেখিয়ে জানায় যে, এই ট্রেন যেখান থেকে এসেছে, সেখানে তাকে নিয়ে গেলে সে তার বাড়ি চিনিয়ে দিতে পারবে। তখন তারা শিশুটিকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা করেন।

সমাজসেবা কর্মকর্তা ও পুলিশের সহায়তায় দেড় মাস পর খুলনা থেকে ফতুল্লার লালপুরে নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছে ৭ বছরের শিশু ইয়ামিন

তারা ইয়ামিনের কথা মোতাবেক ফতুল্লা রেলস্টেশনে নেমে লালপুর গ্রামে যান। লালপুর গ্রামের বাড়িতে হাজির হলে মাতৃহীন শিশু ইয়ামিন তার বাবাকে জড়িয়ে ধরলে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

শিশু ইয়ামিনের বাবা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ইয়ামিন এবং তার ছোট একটি বোন রয়েছে। তাদের মা নিরুদ্দেশ। ছেলে-মেয়ের কথা চিন্তা করে তিনি আর বিয়ে করেননি। ইয়ামিন তার মাকে খুঁজতে প্রায়ই বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতো।

এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসান বার্তা২৪.কম বলেন, ইয়ামিনকে আমরা রমজান মাসের শুরুতে খুঁজে পাই। তারপর থেকে তার পরিবারের খোঁজ করতে থাকি। হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের দুই সদস্য অনেক সহযোগিতা করেছেন। অবশেষে শিশু ইয়ামিনকে ওর বাবার হাতে হস্তান্তর করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।

 

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন

চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব চীনের একটি চিড়িয়াখানা কুকুরকে ‘পান্ডা’ বানিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে। কুকুরের শরীরে সাদা এবং কালো রং মাখিয়ে আসল পান্ডাদের মতো বানিয়ে প্রদর্শন করা হয়। চীনের জিয়াংসু প্রদেশের তাইঝু চিড়িয়াখানায় গত ০১ মে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন অবাক কাণ্ডের তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়- পহেলা মে’র ছুটিকে কেন্দ্র করে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী বাড়াতে কর্তৃপক্ষ চিড়িয়াখানায় ‘পান্ডা কুকুর’ দেখা যাবে বলে বিজ্ঞাপন দেয়। তাদের বিজ্ঞাপন দেখে দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় ছুটে আসে। এসে তাদের এমন কাণ্ড দেখে অনেক দর্শনার্থী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।

নিউইয়র্ক পোস্টে বলা হয়, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা দুটি চৌ চৌ কুকুরের মুখ কালো রং করেছেন, যাতে কুকুরগুলোকে ক্ষুদ্রাকৃতির পান্ডাদের মতো দেখা যায়। এই কুকুরগুলোকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেওয়া হয়, যেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় করে তাদের দেখার জন্য জড়ো হয়।

যখন দর্শনার্থীরা বুঝতে পারেন কুকুরগুলো আসল পান্ডা নয়, তখন অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তারা অভিযোগ করেন, প্রাণীর সঙ্গে এমন আচরণ নিষ্ঠুরতা।

তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে রং তারা ব্যবহার করেছেন তা ক্ষতিকারক নয় এবং এ রঙে কোনো রাসায়নিকও নয়।

চিড়িয়াখানার একজন মুখপাত্র জানান, তাদের চিড়িয়াখানায় কোনো পান্ডা ভাল্লুক ছিল না। তাই তারা এমনটি করেছেন। মানুষও চুলে রং করে। কুকুরের লম্বা পশম থাকলে প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করা যায়।

অন্য একজন জানান, তাদের চিড়িয়াখানায় আসল পান্ডা রাখার জায়গা নেই। এভাবে করলে দর্শনার্থীদের আরও বেশি আনন্দ দেওয়া যাবে বলে তারা এমনটি করেছেন।

উল্লেখ্য, চৌ চৌ একটি স্পিটজ-টাইপ কুকুর, যা মূলত উত্তর চীনে পাওয়া যায়।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

চম্পারণের ১০৭ বছর



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১০৭ বছর আগে ১৯১৭ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলের কথা। শোষণের হাত থেকে বাঁচার জন্য হাজার হাজার কৃষক বিহারের চম্পারণের মতিহারি রেলস্টেশনে তীক্ষ্ণ চশমা পরা এক লোকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রাজকুমার শুক্লা নামে একজন চম্পারণের কৃষক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জী কে চম্পারণে আসার জন্য অনুরোধ করেন।

তিনি এখানে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে না আসলেও প্রায় এক বছর ধরে তার উকিল বন্ধু ব্রজ কিশোর প্রসাদ, রাজেন্দ্র প্রসাদ, গোরখ প্রসাদ, চন্দ্রভাগা সহায় এবং বাবু ধারনীধরদের নিয়ে ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কৃষকদের সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। সাবধানতার সাথে ৪ হাজারের বেশি সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেন তারা। প্রধানত কৃষকদের দুঃখজনক জীবনের বর্ণনা ও দ্বিগুণ করের আওতায় তাদের শোষণের কথা সমীক্ষায় উঠে আসে।

চম্পারণ সত্যাগ্রহ ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের পদ্ধতি ও মতাদর্শ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি অহিংস প্রতিরোধ এবং নাগরিক অবাধ্যতার সাথে মহাত্মা গান্ধীর প্রথম দিকের পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি চিহ্নিত করে, যা পরে তার নেতৃত্ব এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। চম্পারণ সত্যাগ্রহ ১৯১৭ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে ভারতের বিহারের চম্পারণ জেলায় সংঘটিত হয়েছিল।

১০০ বছর পর হস্তলিখিত সাক্ষ্যগুলি জাতীয় আর্কাইভস থেকে সংগ্রহ করে সবরমতী আশ্রমের আর্কাইভ বিভাগে প্রতিলিপি করা হচ্ছে। এসব আর্কাইভ আটটি খণ্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। কীভাবে কৃষকরা তাদের কণ্ঠস্বর উত্থাপিত হতে দেয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অধিকারের দাবি জানায়। সাক্ষ্য রেকর্ড করার এই সত্যাগ্রহের ফলেই চম্পারণ কৃষি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল।

চম্পারণ সত্যাগ্রহ গান্ধীর নিপীড়ক ব্রিটিশ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের উপায় হিসাবে অহিংস প্রতিরোধকে নিয়োগ করার প্রথম প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। তিনি এই কৌশলটিকে “সত্যাগ্রহ” বলে অভিহিত করেন, যার অনুবাদ “সত্য শক্তি”।

 চম্পারণের মতিহারি রেলস্টেশন। ছবি: সংগৃহীত

চম্পারণ অভিযানের জনগণের হতাশা একটি কার্যকর রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়। গান্ধী জী এবং তার দল রেকর্ড করছিল কিভাবে কৃষকরা নীল চাষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নীলকররা কিভাবে কৃষকদের বাধ্য করছে নীল চাষ করার জন্য এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। নীল চাষ না করলে কৃষকদের উপর দ্বিগুণ করন চাপিয়ে দেওয়া হতো। ব্রিটিশ রোপনকারীরা এজেন্টদের ব্যবহার করে বলপ্রয়োগ ও সহিংসতার মাধ্যমে কর আইন কার্যকর করতো।

সবরমতি আশ্রমের পরিচালকের মতে, গান্ধী ও তার অ্যাডভোকেট বন্ধুরা শ্রোতার ভূমিকা পালন করেন। গান্ধীর মাধ্যমে কৃষকরা নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারেন। তারই ফল হলো আজ আমাদের সাথে কৃষকদের সম্পর্কের বিস্তারিত রেকর্ড রয়েছে জমিদার, ব্রিটিশ নীল কারখানার মালিকদের সাথে সম্পর্ক এবং ভূমি রাজস্ব কাঠামোর শোষণমূলক প্রকৃতি।

তিনি বলেন, চম্পারণ সত্যাগ্রহের সময়, বাপু দেখিয়েছিলেন যে মানুষকে স্বাধীনতার জন্য একটি গণআন্দোলনে আকৃষ্ট করার জন্য তাদের ব্যক্তিগত জীবনে একটি সুস্পষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন করা গুরুত্বপূর্ণ। তবেই স্বাধীনতার ধারণা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

চম্পারণ সত্যাগ্রহের ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ কৃষকদের অভিযোগ তদন্তের জন্য চম্পারন কৃষি তদন্ত কমিটি নিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিল। এই কমিটি শেষ পর্যন্ত কৃষকদের অনুকূলে সংস্কারের সুপারিশ করেছিল, যা গ্রামীণ জনগণের মধ্যে উন্নত অবস্থা এবং ক্ষমতায়নের বোধের দিকে পরিচালিত করে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;