আধ্যাত্মিকতা, সেবা ও জ্ঞান চর্চার সমন্বিত ধারা বায়তুশ শরফ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দরবারকেন্দ্রিক প্রচলিত পীর-মুরিদির আবহে সীমাবদ্ধ না থেকে বায়তুশ শরফের পীর-মুর্শিদরা ইহ ও পারলৌকিক কল্যাণে নিবেদিত থেকে যেভাবে দেশে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন তা অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এম.পি।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স পরিদর্শন, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের আওতাধীন বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী ক্যাম্পাসে শাহ আবদুল জব্বার মিলনায়তনের ভিত্তিফলক উম্মোচন ও নবনির্মিত কারিগরি শিক্ষা ভবনের উদ্বোধন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দেয়ালিকা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকা বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেক আগে থেকে পরিচয় এবং যাতায়াতের কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহানবী (সা.) যেভাবে সেবা ও দয়ার মাধ্যমে ইসলামের সুমহান বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বায়তুশ শরফ তারই বাস্তব উদাহরণ।
তিনি বলেন, বায়তুশ মসজিদভিত্তিক একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান হলেও মসজিদ, মাদরাসা, ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, এতিমখানার পাশাপাশি, স্কুল, কারিগরি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বায়তুশ শরফ পরিচালিত স্কুল ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে অসাম্প্রদায়িকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে- তা বিরল। কারণ, অন্যান্য পীরদের দরবারে সচরাচর এমনটি দেখা যায় না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান পীর আল্লামা শায়খ আবদুল হাই নদভি ও তার পিতা আল্লামা আবদুল জব্বার (রহ.) রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করে নিজের অনভূতি ব্যক্ত করে বলেন, বায়তুশ শরফ আধ্যাত্মিকতা, সেবা, দয়া ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার এক সমন্বিত আধার।
বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সভাপতি ও পীর আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সদর আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কুতুবদিয়া মহেশখালী আসনের এমপি রফিকুল্লাহ আশেক, সংরক্ষিত মহিলা এমপি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, চট্টগ্রাম জোনের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও কক্সবাজার পৌর সভার মেয়র মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম. এম. সিরাজুল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আনজুমনে ইত্তেহাদের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইদ্রিছ মিয়া। উপস্থিত ছিলেন এস আলম গ্রুপের ডাইরেক্টর রাশেদুল আলম খোরশেদ, আনজুমানে ইত্তেহাদের সহ-সভাপতি মর্তুজা ছিদ্দিক, অধ্যাপক শফিউর রহমান, আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম, কবির গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন শেঠ, ঢাকা বায়তুশ শরফের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম আজাদ, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক একরামুল হক আজাদসহ কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ ও কক্সবাজার বায়তুশ শরফের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ।
সভাপতির বক্তব্যে বায়তুশ শরফের পীর আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভি বলেন, দেশের ৩২টি জেলায় বায়তুশ শরফের কার্যক্রম রয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে প্রতিটি জেলায় বায়তুশ শরফের কার্যক্রম চালু হবে- ইনশাআল্লাহ।