ঘানি ভাঙা খাঁটি সরিষার তেলের খোঁজে



ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
কাঠের ঘানি ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল। ছবি: সৈয়দ নবী

কাঠের ঘানি ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল। ছবি: সৈয়দ নবী

  • Font increase
  • Font Decrease

এতো ভেজালের ভিড়ে বিশুদ্ধ কোন কিছু পাওয়া সত্যিই কষ্টকর।

দোকানে পাওয়া ‘খাঁটি সরিষার তেল’ এর উপর ভরসা রাখাটাও যেন বেশ সাহসিকতার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ইদানিং। যে কারণে ব্যাকপ্যাক কাঁধে এক সকালে বেরিয়ে পড়া, ঘানি ভাঙা খাঁটি ও বিশুদ্ধ সরিষার তেলের খোঁজে।

গন্তব্য ছিল সাভার। ঢাকা থেকে এতোদূর যাওয়া যে উদ্দেশ্যে, সেখানে যাওয়ার জন্য প্রথমে নামতে হবে সাভার বাসস্ট্যান্ডে। এরপর রিকশা নিয়ে যেতে হবে সাভারের ‘দক্ষিন নামা বাজার’ এলাকায়। এই বাজারেই খোঁজ মেলে ঘানি ভাঙা সরিষার তেলের দোকানের। দোকানটির নাম রুবেল এন্টারপ্রাইজ।

 

নতুন এক অভিজ্ঞতা, নতুন কিছু দৃশ্য

দোকানে ঢুকতেই অপরিচিত দৃশ্যে আটকে যায় চোখ। কলুদ বলদের সাহায্যে ঘুরছে কাঠের তৈরি ঘানি। ঘানি ঘোরার সঙ্গে তাল রেখে ফোঁটায় ফোঁটায় চুইয়ে পড়ছে বিশুদ্ধ সরিষার তেল। কিছুক্ষণ পরপর ঘানির বলদ পরিবর্তন করছেন দায়িত্বরত ব্যক্তি। সরিষা শেষ হলে বস্তা থেকে নতুন সরিষা এনে দিচ্ছেন আবার। শহুরে চোখ এই দৃশ্যের সাথে পরিচিত নয়। অনেকটা অবাক ও কিছুটা উত্তেজনা নিয়ে চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে গল্প করতে বসে পড়ি দোকানের মালিক মোঃ আরশাদ আলী-র সঙ্গে।

কথায় কথায় জানালেন, বিগত বিশ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি কাজ করছেন ঘানি ভাঙা সরিষার তেল নিয়ে। তার বাবাও এই ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে সাভারে তিনি নিজের দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

ইলেকট্রিক কলে নয়, কাঠের ঘানি ভাঙা তেলই বিশুদ্ধ!

নামা বাজারে বেশ কয়েকটি ইলেকট্রিক কলে ভাঙা সরিষার তেলের দোকান আছে। তার মাঝে আরশাদ আলীর দোকানটা যেন প্রাচীন ঐতিহ্যকে আগলে রেখেছে পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে। তিনি জানান, কাঠের ঘানি ভাঙা তেল ও ইলেকট্রিক কলে ভাঙা তেলের ভেতর রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। পার্থক্যটা কেমন?

আমরা সবাই জানি যে খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁজ খুব কড়া হয়। আদতে ঘটনা ভিন্ন। একেবারে খাঁটি দেশীয় সরিষা কাঠের ঘানিতে ভাঙা হলে, সেই তেলের ঝাঁজ হয় খুবই কম। কিন্তু সুঘ্রাণ হয় তীব্র! যেখানে ইলেকট্রিক কলে পিষ্ট হয়ে ও অনেকটা পুড়ে যে সরিষার তেল পাওয়া যায়, তার সুঘ্রাণ তীব্র না থাকলেও, ঝাঁজ থাকে অনেক বেশি। কারণ, তেল তৈরির প্রক্রিয়ায় সরিষা পুড়ে তেল তৈরি হয়।

আরশাদ আলীর ছেলে মোঃ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গেও কথা হয় এই তেল নিয়ে। তিনি জানান, সদ্যজাত শিশুর শরীরেও এই তেল ব্যবহার করা যাবে নিশ্চিন্তে। একেবারে ঝাঁজবিহীন হওয়ায়, শিশুর শরীরে কোন জ্বালাপোড়া হবে না এবং শিশুর শরীরে তেলের সম্পূর্ণ পুষ্টিই শোষিত হবে।

সচেতন ক্রেতাদের পছন্দ যে সরিষার তেল

ষাট বছর বয়সী আরশাদ আলী ও আশরাফুল ইসলামের সাথে গল্প করার মাঝেই বেশ কয়েকজন ক্রেতা আসলেন সরিষার তেল কেনার জন্য। এর মাঝে একজন হলেন মোঃ ওহাব। ‘কেন এই সরিষার তেল কিনছেন? দোকানেও তো কত ধরণের সরিষার তেল আছে, ইলেকট্রিক কলে ভাঙা সরিষার তেলও আছে। সব কিছু বাদ দিয়ে এই তেল কেন’?

খুব আনন্দের সঙ্গে উত্তরে তিনি জানালেন, বিগত প্রায় বছর দশেক ধরে এই রুবেল এন্টারপ্রাইজ থেকে নিয়মিত সরিষার তেল কিনছেন তিনি। এই অভ্যাসে কোন ব্যতিক্রম হয়নি কখনো। ঘানি ভাঙা এই সরিষার তেল ছাড়া অন্য সরিষার তেলের রান্না তিনি খেতে পারেন না, ব্যবহারও করতে পারেন না।

মোঃ ওহাবের কথার জের ধরে আরশাদ আলী জানালেন, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তো বটেই দেশের বাইরেও তার তেলের কদর ও চাহিদা রয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ি উৎপাদন নেই। ক্রেতাদের চাহিদার জোগান দিতেই হিমসিম খেতে হয় তাদের।

যে কারণে ইলেকট্রিক ঘানি নয়, কাঠের ঘানি ভাঙা সরিষার তেলের ব্যবসা

আরশাদ আলীর কাছে প্রশ্ন করেছিলাম, এই কাঠের ঘানি ভাঙা সরিষার তেল বিক্রির পাশাপাশি ইলেকট্রিক কল দিয়ে সরিষার তেল তৈরির পরিকল্পনা আছে কিনা তার। উত্তরে মিষ্টি হেসে জানালেন, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, যতদিন তার এই ব্যবসা থাকবে- ততদিন এই কাঠের ঘানি ভাঙা সরিষার তেল বিক্রি করেই কাটাবেন।

দিনে তিন মণ সরিষা থেকে ৪৫-৫০ কেজি তেল তৈরি হয়। যেখানে ইলেকট্রিক কলে তিন মণ সরিষা থেকে প্রায় দেড়শ কেজি তেল তৈরি করা সম্ভব। এই কারণে তেলের দামটাও একটু বেশি পড়ে তার। প্রতি কেজি ২২০ টাকা। দামটা চড়া হলেও, বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা থাকায় ক্রেতারা তার কাছ থেকেই নিতে চান সরিষার তেল।

খুব প্রফুল্ল ও গর্বভরে তিনি আরও জানান, আজতক দেশী ও বিদেশি সরিষা মিশিয়ে তেল তৈরি করেননি তিনি। যে কারণে পরিচিত মহলে তার বেশ সুনাম রয়েছে। তার পরিশ্রম ও সততার স্থানে কোন আঁচ কখনোই আসতে দেননি বলেই, ক্রেতাদের কাছ থেকে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা।

এই সকল কারণে নিজের ছোট ব্যবসার পরিসরের মাঝেই, কাঠের ঘানিতে ভাঙা বিশুদ্ধ ও খাঁটি সরিষার তেলই বিক্রি করে যেতে চান সবসময়। তার ছেলে আশরাফুল ইসলামেরও ইচ্ছা আছে বাবার হাতে গড়ে ওঠা এই ব্যবসার হাল ধরে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

গল্পে গল্পে দিন গড়ালে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিদায় নিতে হয় তাদের কাছ থেকে। ফেরার পথে অবাক হয়ে ভাবতে হয়, এখনও কেউ খুব যত্নে আগলে রেখেছে নিজের হাতে গড়ে তোলা সীমিত লাভের ব্যবসা। যার সাথেই কিনা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্যের দারুন একটি দিক।

   

ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ে ভুল যত ধারণা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

  • Font increase
  • Font Decrease

যকৃত মানব শরীরের খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নালীদের প্রবাহিত হওয়া রক্ত পরিশুদ্ধকরণ করা এর প্রধান কাজ। রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে যকৃত। এছাড়াও ভিটামিন সঞ্চয় এবং হরমোনও তৈরি করে। তবে হেপাটাইটিস এমন এক ভাইরাস যা সরাসরি কলিজা, তথা যকৃতেই আক্রমণ করে। এতে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হয়। মূলত হেপাটাইটিস ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ এবং ‘ই’ ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য দায়ী। হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ খাদ্য ও পানি দূষণের ফলে হয়। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি রক্তেএবং রক্তরসের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস ডি হওয়ার সম্ভাবনা তাদের থাকে যারা ইতোমধ্যেই হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রয়েছেন।   

ভাইরাল হেপাটাইটি থেকে সাবধানে থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে নানারকম কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। এক প্রতিবেদনে ভারতীয় হেপাটোলজি বিশেষজ্ঞ অমিত মান্ডোট বলেছেন, `হেপাটাইটসের ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণ যতটা শঙ্কাজনক, একইরকমভাবে এ্ সম্পর্কিত যে ভ্রান্ত ধারণাগুলো রয়েছে সেগুলোও নানারকম সমস্যা বৃদ্ধি করে। এতে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বাঁধা পড়ে। অনেকে মনে করেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ এইডসের সংক্রমণের মতো। ভয়াবহ ড্রাগ নেওয়ার মাধ্যমে এবং অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এসব একেবারেই ভুল ধারণা।‘

ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগী

তিনি ভ্রান্ত ধারনা দূর করার ব্যাপারে বলেন, ‘রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এমনটি শিশু জন্মদানের সময় হওয়াও অযাচিত নয়। রক্তদান বা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও হেপাটাইটিস ছড়াতে পারে। তাই এই রোগ সম্পর্কিত গোড়ামি ভেঙে রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সাহায্য করতে হবে। এইজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরও একটি ভুল ধারণা হলো, ব্যক্তি পছন্দ এবং জীবনধারার সিদ্ধান্তের কারণেও হেপাটাইটিসে কেউ আক্রান্ত হয়। রোগীর প্রতি সকলের এই বিরুপ দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিতে পারে। একঘেয়ে গোড়ামি সমাজের অগ্রগতির পথেও বাঁধা।      

একত্রিত হয়ে এসব ভুল ধারণা দূর করার আহ্বান করেছেন ডাক্তার অমিত। তিনি বলেন, রোগ নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা, প্রাথমিক পর্যায়ে  শিক্ষাপ্রচার এবং আপপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যাবশ্যকীয়। তবেই সকল সাহায্য প্রত্যাশীদের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।  

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

;

ভিটামিনের ‘ডি‘ এর অভাব পূরণ করবে মাশরুম



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাশরুম

মাশরুম

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ভিটামিনের অভাবের কথা ভাবতো না। কারণ তাজা এবং পুষ্টিকর শাক, সবজি এবং ফল প্রায় ঘরে ঘরে পাওয়া যেত। বা বাজারেও ছিল তা বেশ সহজলভ্য। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সব অভাবই পূরণ করে এসব খাবার। এখন মানুষের জীবনে বেড়েছে ব্যস্ততা। অল্প পরিশ্রমে এখন যতটা সম্ভব বেশি পু্ষ্টি গ্রহণ করা এখন বেশ কঠিন হয়ে উঠছে।

বিভিন্ন প্রকার মাশরুম

ভিটামিন ডি-এর অভাব একটি অন্যতম গুরুতর সমস্যা। এর অভাবে অস্টিওম্যালেশিয়া, রিকেটস, কোমড় বা হাঁটুতে ব্যথা, হাড় ক্ষয়সহ নানারকম গুরুতর সমস্যা হয়।  বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা যেতে পারে। এতে শিশুদের হাড়ের বিকাশ পরিপূর্ণ হয় না। ক্যালসিয়ামের অভাবে তোদর হাড়ে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, পা ধনুকে মতো বেঁকেও যায়। একে রিকেটস রোগ বলে। ভিটামিন ডি এর অতিরিক্ত অভাব হলে শিশু চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুর রিকেটস রোগ

এই সমস্যার সমাধান হতে পারে মাশরুম। কারণ সাধারণত ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশ খরচ সাপেক্ষ। মাছের লে, চর্বিযুক্ত মাছ, মাখন, ঘি, দুধ-এই জাতীয় খাবারে উচ্চপরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। উদ্ভিজ খাবারে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে তা অভাব পূরণে পর্যাপ্ত নয়। তবে এই ক্ষেত্রে মাশরুম কিছুটা ব্যতিক্রম।  এই খাবার যেমন পুষ্টিকর, তেমন সুস্বাদু। এক ইন্সটাগ্রাম রিলে পুষ্টিবিদ লিন্ডি কোহেন বলেন, ‘ভিটামিন ডি‘য়ের চমৎকার উৎস হলো মাশরুম। মাশরুম খাওয়ার যেমন নানা রকম পুষ্টিকর সুবিধা রয়েছে, তেমনই এটি বেশ সাশ্রয়ী। অন্যান্য দামী খাদ্যের বিকল্প হিসেবে মাশরুম খাওয়া একটি ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। তবে উত্তম এই খাদ্য উপাদানকে আরও বেশি লাভজনক করা যেতে পারে। খুব ছোট একটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই মাশরুমের পুষ্টিগুণ বাড়ানো যায়।’

রান্না করা মাশরুম

তিনি পরামর্শ দেন, বাইরে থেকে কিনে এনে মাশরুমকে রান্না করার আগে রোদে রাখতে। সকালের পরপর ১ থেকে ২ ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ স্থানে মাশরুমকে রোদ পোহাতে রাখা যেতে পারে। লম্বা ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট বা চওড়া পাত্রে মাশরুমগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে রোদে রাখা যেতে পারে। এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাশরুমের বেশিরভাগ অংশ রোদের সংস্পর্শে আসতে পারে।  বিষুবরেখা থেকে দূরের অঞ্চলে এবং শীতকালে চাষ করা মাশরুমে ভিটামিন ডি এর কিছু ঘাটতি দেখা যায়। কারণ মাশরুমের ধরন, সূর্যের আলোর তীব্রতা ও সংস্পর্শ, চাষের সময়- বিভিন্ন বিষয়ের উপর মাশরুমের পুষ্টির সহজলভ্যতা নির্ভর করে।  

রোদের আলোয় ভিটামিন ডি

আমাদের দেশে যেসব মাশরুম খাওয়া হয় তা সম্পূর্ণরূপে ভিটামিন ডি সরবরাহ করতে পারে কিনা- তা নিয়ে সন্দিহান পুষ্টিবিদরা। ভারতীয় চিকিৎসক শুভ রমেশ এই নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। মাশরুমে এরগোস্টেরল নামের একটি যৌগ রয়েছে। সূর্যরশ্মি যখন মাশরুমে পড়ে তখন অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে এটি ভিটামিন ডি-২ তে রূপান্তরিত হয়। সকালেরেোদ শরীরে পড়লে যেমন শরীরে ভিটামিন ডি-৩ সংশ্লেষণ হয়, অনেকটা অনুরূপ পদ্ধতিতেই এই প্রক্রিয়া হয়। তবে ভিটামিন ডি২ এবং ডি৩ এর কার্যকারিতা এবং ধরন ভিন্ন হয়। ডি৩ সাধারণত ডি২ এ তুলনায় রক্তে ভিটামিন ডি বাড়াতে ও ধরে রাখতে বেশি কার্যকর।      

 তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি



লাইফস্টাইল ডেস্ক বার্তা২৪.কম
পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

  • Font increase
  • Font Decrease

পিরিয়ড মানেই মুড সুইং, ক্র্যাম্প, পেইন। তবু এটুকুই যথেষ্ট না। পিরিয়ডের সবচেয়ে কমন ফেনোমেনা হলো রক্তক্ষরণ, যা বয়স ও ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম হয়। কারও কারও শুরুতে হেভি ফ্লো হয়ে পরে কমে যায়, আবার কারও পুরো সময়জুড়েই হালকা অথবা ভারী ব্লিডিং হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের সময় স্বাভাবিক রক্তক্ষরণের পরিমাণ ৩০-৫০ মিলিলিটার, কিন্তু যখন রক্তক্ষরণের মাত্রা এর চেয়ে বেশি হয়ে যায়, মেডিকেলের ভাষায় তাকে বলে হেভি মেন্সট্রুয়াল ব্লিডিং বা এইচএমবি। ধারণা করা হয়, শতকরা ২৫ ভাগ নারীর হেভি ফ্লো হয়। 

যেহেতু হেভি ফ্লো হলে প্রতি ২-৩ ঘন্টায় ন্যাপকিন পাল্টানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, এবং স্বচ্ছন্দে প্রতিদিনের কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এমনকি ভালোভাবে মেন্সট্রুয়াল হাইজিন মেইন্টেইন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই ডিপ্রেসড হয়ে যায়। 

এছাড়া হেভি ফ্লো হলে প্রয়োজনে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা ঠিক হবে কি হবে না, এ নিয়ে ক্লিয়ার কনসেপ্ট না থাকায় হেভি ফ্লো-এর সময়টা অনেকের জন্যই খুবই পীড়াদায়ক মনে হয়। বিশেষভাবে কর্মজীবী নারীরা এই বিষয়টা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন পরে থাকার সাথে গাইনোকোলজিকাল সমস্যার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু ন্যাপকিন কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন সর্বোচ্চ শোষণক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারে।


কারও ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন যদি ভালো শোষণক্ষমতা সম্পন্ন হয়, তবে হেভি ফ্লো-এর সময়ও কোনোরকম জটিলতা ছাড়াই ১০-১২ ঘন্টা পরে থাকা সম্ভব। তাই শুধুমাত্র গৎবাঁধা ধারণার উপর নির্ভর না করে, হেভি ফ্লো-এর কঠিন এই সময়টা স্বস্তি ও সুরক্ষার সাথে কাটাতে এমন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা উচিত, যা সর্বাধিক সময় ধরে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি ইনফেকশন এড়াতে পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

;

স্বাস্থ্য সচেতনতা

গরমে লাচ্ছির নানান উপকারিতা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা! পানির পাশাপাশি দুপুরের গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই নানান রকমের পানীয় পান করে থাকেন। কারো কারো পছন্দের শীর্ষে থাকে লাচ্ছি বা ঘোলের মতো দুগ্ধজাতীয় পানীয়।

এই ধরনের পানীয় শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করার কারণে সতেজতার অনুভূতি দেয় লাচ্ছি বা দুগ্ধজাতীয় পানীয়। গরমে পানির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি হাইড্রেশন নিশ্চিত করে এ পানীয়। এছাড়াও ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যাওয়া পটাসিয়াম এবং সোডিয়ামের মতো ইলেক্ট্রোলাইটের অভাবও পূরণ করে এ পানীয়।

ত্রুপ্তি পাধী একজন ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান এবং ডায়বেটিস শিক্ষাবিদ। গরমে প্রতিদিন এক বা দুই গ্লাস করে লাচ্ছি বা দুগ্ধ জাতীয় পানীয় খাওয়ার উপকারিতা ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তিনি বলেন, গরমে শরীরকে সুস্থ, স্বাভাবিক রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলার দরকার। এর মধ্যে অন্যতম হলো- লাচ্ছি। লাচ্ছির উপকারিতা সম্পর্কে ত্রুপ্তি পাধী যে বিষয়গুলো তুলে ধরেন, সেগুলি হচ্ছে-

পানিশূন্যতা: লাচ্ছি বা ঘোল এমন সুস্বাদু তরল পানীয়, যা আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করেন। তাছাড়া সারাদিন ভালোভাবে হাইড্রেটেড রাখতে সক্ষম এ ধরনের পানীয়। বিশেষ করে গরম আবহাওয়ার সময় স্বস্তি দেয় এ পানীয়।

হজম: এই ধরনের পানীয়গুলোতে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান হজমে সহায়তা করে। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা এবং পেট ফোলার সমস্যা দূর করতে পারে।

হৃদক্রিয়া: নিয়মিত বেশি করে লাচ্ছি খেলে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে। এতে রোগের ঝুঁকি কমে হার্ট সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।

এনার্জি বুস্টার: লাচ্ছি, ছাস বা ঘোল প্রাকৃতিকভাবে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। শরীরে সামগ্রিক পুষ্টির পরিমাণও বাড়ায়। তাছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে৷

মজবুত হাড় এবং দাঁত: দুগ্ধজাত হওয়ায় এই পানীয়গুলিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম উপাদান থাকে। ফলে, শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ হয়। তার সঙ্গে হাড় এবং দাঁতকে শক্তিশালী করতে অবদান রাখে।

ওজন ও অন্ত্র: এই ধরনের পানীয় অন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এতে তৃপ্তি অনুভূতি হয় এবং খাবার ভালোভাবে হজম হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খুব উপকারী লাচ্ছি।

তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;