খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে দূর করুন অনিদ্রা
অনিদ্রার সমস্যা যেন দৈনন্দিন জীবনের একটি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সাধারণত ঘুম কম হওয়া বা একদমই না হওয়াকে অনিদ্রা সমস্যা বলে ধরে নেওয়া হয়।অনিদ্রা সমস্যায় ভোগেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে।
নানা কারণেই ঘুম কম হতে পারে। যেমন- মানসিক চাপ, কর্মজীবনের উদ্বেগ বা হতাশা, সম্পর্কের টানাপোড়ন বা যেকোন মানসিক অশান্তি। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের মতে, ‘তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠা একজন মানুষকে স্বাস্থ্যবান, জ্ঞানী এবং সম্পদশালী বানায়।’
দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের কিছু সহজ পরিবর্তন- এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।চলুন দেখে নেই সমাধানের উপায়গুলো-
সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছ সাথে রঙিন শাক-সবজি আমাদের হৃদরোগের এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এটি আমাদের শরীরকে শীতল রেখে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেয়। এক সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, যারা সামদ্রিক মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেন তারা অনিদ্রাজনিত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকেন।
টিনে সংরক্ষিত সামুদ্রিক মাছ/সার্ডিন: জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, শরীরে ক্যালসিয়াম কম গ্রহণ করলে অল্প সময়ের জন্য বা চিরতরে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।সার্ডিন মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা কিনা দুধ বা যেকোন দুধজাত খাদ্যের সমান। দুধ না দুধজাত খাবার না খেতে চাইলে বিকল্প হিসেবে সার্ডিন মাছ খেতে পারে।
পাকা কলা: পাকা কলায় রয়েছে ৩৭৫ মি.গ্রা. এর মতো পটাশিয়াম ও মিনারেলস যা, যা শরীরে ভিটামিন বি৬ এর ঘাটতি পূরণ করে। ভিটামিন বি৬ আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন সংশ্লেষণে হস্তক্ষেপ করে। সেরোটোনিন মস্তিষ্ক শান্ত রাখতে সাহায্য করে, এতে ঘুম আসে।
ব্রাজিল নাট: এটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা শরীরের ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মাংসপেশিকে বিশ্রাম দিয়ে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
কাজুবাদাম (আমন্ড): কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা ঘুমের জন্য খুবই উপকারী।
শস্যজাত খাদ্য: উচ্চমানের শস্যজাতীয় খাদ্য আমাদের শরীর ও একাধারে ঘুমের জন্য খুবই উপকারী।
কম প্রোটিন, চর্বিযুক্ত খাবার: এই ধরনের খাবার এর তালিকায় সাধারণত মাছ, মুরগি, লাল মাংস স্থান পায়।
কাঁকড়া: অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁকড়া খেলে শরীরে স্লিপ নিউট্রিয়েন্ট বাড়ে, কারণ কাঁকড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে যা স্লিপ নিউট্রিয়েন্টের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
তৈলাক্ত মাছ: ২০১৪ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণে স্যামন মাছ খান তাদের অন্যদের থেকে ঘুমানোর সময়টা বেশি। মাছের তেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ এবং ভিটামিন ডি যা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সচল রাখতে সাহায্য করে এবং মাংসপেশিকে শিথিল করে।
সয়া ফুড: সয়া ফুড যেমন তফু, সয়া মিল্ক, সয়া বিন এগুলোতে রয়েছে এস্টোজেন যা ঘুমে সহায়তা করে।
বাটার বিন (মটরশুঁটি): এটি সাধারণত এক শ্রেণির মটরশুঁটি যাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, বি৬ ও ফসফরাস যা নিয়মিত ঘুমের সাথে ৬ মাত্রা যোগ করে।
ভাত: ভাত এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত যে কোন খাবার গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়ায়।
দই ও মধু: উচ্চমাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
প্যাশনফ্লাওয়ার ও ক্যামমাইল চা: ক্যামমাইল চা স্ট্রেস দূর করে এবং প্যাশনফ্লাওয়ার শ্রেণির গুল্মলতা হারবাল ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
কিউই: ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে দুটো এই ফল তাড়িতাড়ি ঘুম আসতে সাহায্য করে।
এক কাপ গরম দুধ: দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা ঘুম আসতে সাহায্য করে।
ডিম: প্রচুর ট্রিপ্টোফ্যান, এমোনিয়া সমৃদ্ধ খাবার যা স্লিপিং হরমোন নিঃসৃত করে ঘুম আসতে সাহায্য করে।