কেন রক্ত দিবেন?



কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানব দেহের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রক্ত। মানুষকে ভালোবেসে যত কাজ করা যায়, তার অন্যতম হলো রক্তদান। নেলসন ম্যান্ডেলা বলেন, রক্তদান আমাদের সমাজের একটি মহান জীবন্ত সংস্থা গঠন করে, এটি একটি আদর্শ মানবিক অবদান। স্বেচ্ছা রক্তদাতারা রক্তবীর। জাতীয় বীর তারাই যারা নিজেদের রক্ত অন্যদের জন্য দান করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয় মানুষকেই। রক্তদান নিঃসন্দেহে মহৎ ও মানবিক। তবে এর সাথে নানান জটিল দুরারোগ্য ব্যাধী থেকে বাঁচার উপায়ও হলো নিয়মিত রক্তদান।

আগামী ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। ডব্লিউএইচও এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে, 20 years of celebrating giving: thank you blood donors! সহজ বাংলা করলে দাঁড়ায়- ‘দিবস উদযাপনের ২০ বছর: ধন্যবাদ হে রক্তদাতা!’।

যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এই দিবসের উদ্দেশ্য।

১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই দিবস পালনের জন্য তাগিদ দিয়ে আসছে।

প্রতিবছর ৮ কোটি ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান হয়, অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া এখনো বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম।

স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এদিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল লান্ডষ্টাইনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও,এবি’। রক্তদান মহৎ দান। রক্তদান করলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। এমনিতেই রক্ত কণিকা নির্দিষ্ট সময় পর নষ্ট হয়ে যায়। তাই রক্ত দান করুন, রোগীর প্রাণ বাঁচান। এটাই মূলত প্রকৃত সেবা।

দাতা বা রক্তগ্রহীতাকে কোনো রকম ক্ষতির আশঙ্কায় না ফেলে রক্ত সংগ্রহ ও বিতরণসহ ৫টি রক্তবাহিত ঘাতক রোগের জীবাণু বাধ্যতামূলকভাবে স্ক্রিনিং করাই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনার প্রথম ধাপ। ডব্লিউএইচওর নিয়মানুযায়ী শতভাগ স্বেচ্ছারক্তদাতাদের রক্ত আহরণ, সংগৃহীত সব রক্তের বাধ্যতামূলক টিটিআই স্ক্রিনিং ও রক্তের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের মূল উদ্দেশ্য। কম ঝুঁকিপূর্ণ রক্তদাতা থেকে রক্ত সংগ্রহ করে স্ক্রিনিং পরীক্ষা বা কম্পোনেন্টে বিযুক্তকরণের মাধ্যমে রক্ত বা উপাদান

পরিসঞ্চালন করাকে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বলা হয়। নিরাপদ রক্তদানে রক্তদাতার কোনো ক্ষতি হয় না। রক্ত গ্রহণ করে রক্তগ্রহীতার দেহে তাৎক্ষণিক বা দেরিতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না বা গ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না সেটাই নিরাপদ রক্ত বা রক্ত উপাদান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিসিটি ইউনিটের মতে, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির ৪টি লক্ষ্য রয়েছে। ১. নিরাপদ রক্ত সংস্থান ২. নিরাপদ রক্ত সহজলভ্য, ৩. নিরাপদ রক্ত সংস্থায় পাওয়া এবং ৪. সমন্বিত ও যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।

নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির ৩টি কৌশলের মধ্যে রয়েছে ১. শতভাগ স্বেচ্ছা রক্তদানে রক্ত সংগ্রহ করা, ২. সংগৃহীত রক্তের সব স্ক্রিনিং নিশ্চিতভাবে করা এবং ৩. উপাদানভিত্তিক যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।

রক্তদানের নানামুখী উপকারিতা: রক্তদানের প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো একজনের দানকৃত রক্ত আরেকজন মানুষের জীবন বাঁচাবে। রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী দিক। রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়

এবং রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকার জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। বছরে ৩ বার রক্তদান আপনার শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলার সাথে সাথে নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য রক্তদান করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়।

আরেক গবেষণায় দেখা যায়, যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পরিলক্ষিত হয়েছে। চার বছর ধরে ১২০০ লোকের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়েছিলো।

নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীরে বড় কোনো রোগ আছে কিনা তা বিনা খরচে জানা যায়। যেমন : হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি। প্রতি পাইন্ট (এক গ্যালনের আট ভাগের এক ভাগ) রক্ত দিলে ৬৫০ ক্যালরি করে শক্তি খরচ হয়। অর্থাৎ ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।রক্তদান উচ্চরক্তচাপ কমায়,মানুষ এবং সমাজের

উপকারের স্বার্থে রক্তদান অন্যতম কর্তব্য। রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীর ঠিক থাকে এবং অন্যের জীবন বাঁচে। রক্তদানে নানারকম শারীরিক লাভ হয়। মেরুমজ্জার রিজুভিনেশন বা স্টিমুলেশন, হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমা, বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া থমকে যাওয়া।

রক্তদানের সাথে হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন একদল গবেষক। তারা ২০ বছর ধরে নির্দিষ্ট রক্তদাতাদের অবজার্ভ করেন। এই পরীক্ষায় হৃদরোগের চেয়েও ক্যান্সারের ফলাফল দেখে তারা বেশি বিস্মিত হন। গবেষণায় দেখা যায়, রক্তদাতাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩৭% পর্যন্ত নেমে গেছে। আর যাদের ক্যান্সার হয়েছে, তাদের মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে কম। এই ফলাফলে বিস্ময় প্রকাশ করে ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট জার্নাল (Journal of the National Cancer Institute)। এক রিপোর্টে তারা বলেন, “results almost seem to be too good to be true.”. এ থেকে তারা উপসংহার

টানেন যে, ৬ মাসের মধ্যে শুধু একবার রক্ত দান করলেই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে আসে। স্বেচ্ছায় রক্তদানের পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের নির্ভরশীলতা ও রক্ত নিয়ে ব্যবসা কমানো, ঘাতক রোগের বিস্তার কমানোসহ, সামাজিক বন্ধন বাড়েস্বর্গীয় আনন্দের অনুভূতি উপভোগ করা যায় রক্তদানের মাধ্যমে। রক্তদানের অর্থনৈতিক লাভও রয়েছে রক্তদানে। নিচখরচায় চেকআপ, পরামর্শ বা চিকিৎসা প্রাপ্তির সুযোগ, নিয়মিত রক্তদান ওষুধ ছাড়া চিকিৎসা পদ্ধতি। আর এই পুরো প্রক্রিয়া আসলে শরীরের সার্বিক সুস্থতা, প্রাণবন্ততা আর কর্মক্ষমতাকেই বাড়িয়ে দেয়। তবে রক্তদানের এ উপকারগুলো আসলে তারাই পাবেন যারা নিয়মিত রক্তদান করেন।

রক্ত দেয়া কেন প্রয়োজন?

দুর্ঘটনায় আহত, ক্যান্সার বা অন্য কোন জটিল রোগে আক্রান্তদের জন্য, অস্ত্রোপচার কিংবা সন্তান প্রসব অথবা থ্যালাসেমিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়।

দেশে বছরে আট থেকে নয় লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্ত সংগ্রহ হয় ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যাগ। তবে বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা এখনো নগণ্য। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বছরে আট থেকে নয় লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্ত সংগ্রহ হয় ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যাগ। ঘাটতি থাকে তিন লাখ ব্যাগের বেশি।

এছাড়া সংগ্রহকৃত রক্তের মাত্র ৩০ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে। নিজের পরিবারের সদস্য বা পরিচিতজন না হলে এখনো বেশিরভাগ মানুষ রক্তের জন্য নির্ভর করেন পেশাদার রক্তদাতার ওপর। রক্তের অভাবের কারণে প্রতিবছর বহু রোগীর প্রাণ সংকটের মুখ পড়ে। এক ব্যাগ রক্ত দিতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট। এই অল্প সময়ে চাইলেই একজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ভোগান্তি বেশি

থ্যালাসেমিয়া একটি জন্মগত রক্তের রোগ। মা-বাবার মধ্যে কেউ বা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া রোগী বা এ রোগের বাহক হলে সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এর মানে প্রতিদিন ২০টিরও বেশি শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই শিশুদের কেবলমাত্র বেঁচে থাকার জন্যই তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রন অপসারণ করতে মাসিক রক্ত সঞ্চালন এবং চিলেশন থেরাপির প্রয়োজন হয়।

নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ানোয় বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগী পর্যাপ্ত চিকিৎসা পান না।

থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা কী?

মেজর থ্যালাসেমিয়ার রোগীকে নিয়মিত বিরতিতে রক্ত দিতে হয়। তা না হলে তাকে বাঁচানো মুশকিল। এর সঙ্গে বারবার লোহিত কণিকা ভেঙে যাওয়ার কারণে এবং বারবার রক্ত দেওয়ার জন্য এদের শরীরে অতিরিক্ত আয়রন বা লৌহ জমে যায়। অতিরিক্ত আয়রন বিভিন্ন অঙ্গে বিশেষ করে গ্রন্থিগুলোতে জমে গেলে সেই গ্রন্থির কার্যকারিতা নষ্ট হয়। এজন্য আয়রনযুক্ত খাবার বা আয়রন বড়ি এড়িয়ে চলা দরকার। প্রয়োজনে নিয়মিত রক্ত থেকে আয়রন নিষ্কাশন করার দরকার পড়ে। অনেক সময় প্লীহা কেটে ফেলে দিতে হয়। তবে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হলো এর নিরাময়ে একমাত্র চিকিৎসা। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। মাইনর থ্যালাসেমিয়া বাহকদের অনেকেই এই সমস্যার উপস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। ফলে দুজন আক্রান্ত জিনের অধিকারী বা দুজন বাহকের মধ্যে বিয়ে হলে তাঁদের সন্তান মারাত্মক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।

মৃদু মাত্রার রক্তস্বল্পতা হলেও অকারণে আয়রন বড়ি না খেয়ে রক্তস্বল্পতার কারণ খুঁজে দেখা দরকার। দম্পতির কেউ বাহক হলে গর্ভধারণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। দুজনেই বাহক হলে যথাযথ কাউন্সেলিংয়ের দরকার।

   

নারীর চেয়ে পুরুষের হৃদরোগ ঝুঁকি বেশি!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পুরুষের হৃদরোগ

পুরুষের হৃদরোগ

  • Font increase
  • Font Decrease

আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি, যখন সুস্থ থাকা জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখন মানুষের জীবনযাত্রার ধরন বদলেছে, একই সাথে বেড়ে চলেছে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা। আর কিছু বছর আগেও যেসব রোগ সাধারণত ষাটোর্ধ্ব মানুষদের মধ্যে দেখা যেত এখন তা মধ্যবয়সীদেরও গ্রাস করছে।
আশঙ্কাজনক হলেও সত্য যে, ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকেই এই তথ্যচিত্র আরও স্পষ্ট হচ্ছে। মানুষের জীবন যাপনের রুটিন এমন হয়ে গেছে যে, হৃদয় খুব কম সময়েই দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সমবয়সী নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবে শুধু জীবনধারাই নয়; অতিরিক্ত চিন্তা করা, হাই কোলেস্টেরল এমনকি বংশগত কারণেও হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ছে। জেনে নেওয়া যাক, সেসব কারণ-
জীবনধারা: মূলত বর্তমান সময়ের জীবনধারা হৃদপিণ্ডে চাপ সৃষ্টি করে। আজেবাজে খাওয়া-দাওয়া, শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, অতিরিক্ত ধুমপান এবং নেশাজাত দ্রব্য সেবন ইত্যাদি অভ্যাস হার্টের জন্য ভালো নয়। এসব হৃদপিণ্ডতে দুর্বল তো করেই বরং আরও অনেক রোগের বাসা বাঁধায়।
মানসিক চাপ: পারিবারিক, ক্যারিয়ারের চিন্তা, কাজের চাপ, আর্থিক দুশ্চিন্তা নানান কারণে কম বয়স থেকে অধিকাংশ পুরুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
মানসিক স্বাস্থ্য: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষরা তাদের মানসিক অসুবিধাগুলো নিয়ে উদাসীন থাকে। ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, মানসিক চাপগুলোর জন্য তারা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়না। দীর্ঘদিন এসবের প্রভাবে হাইপারটেনশন সৃস্টি হয়, যা হৃদরোগের সূত্রপাত ঘটায়।
কোভিড-১৯: করোনার প্রভাব পৃথিবীব্যাপী বিস্তারের পর অনেক ক্ষেত্রেই ছোট বড় পরিবর্তন এসেছে। এরমধ্যে একটি হলো, এখন হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়ছে। বিশেষ করে অল্প বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ আশঙ্কাজনক। কয়েকজনের ক্ষেত্রে করোনার টিকা দেওয়ার পর মায়োকার্ডাইটিসের এমআরএনএ (প্রোটিনবহনকারী ম্যাসেঞ্জার আরএনএ)- এর বিরল রিপোর্ট লক্ষ্য করা গেছে।
নারীদের তুলনায় পুরুষ হৃদয়: মধ্যবয়স্ক নারীদের মধ্যে মেনোপজ পূর্ববর্তী ধাপে কিছু শারীরিক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনের কারণে তাদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। অন্যদিকে একই বয়সী পুরুষদের মধ্যে সেই ঝুঁতি থেকেই যায়। তাছাড়া আমাদের সমাজ ব্যবস্থার কারণে ধূমপান, মদ্যপানের সঙ্গে নারীদের সম্পৃক্ততা অনেকাংশে পুরুষের তুলনায় কম। এসকল কারণে পুরুষরা নারীদের তুলনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

;

যে কাজগুলো করলে বাড়বে হ্যাপী হরমোন মাত্রা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
উৎফুল্ল মন / ছবি: নূর-এ-আলম

উৎফুল্ল মন / ছবি: নূর-এ-আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

মস্তিষ্ক হলো শরীরের ইঞ্জিন। শরীরের যাবতীয় কাজ পরিচালনার  প্রক্রিয়া চলে ব্রেনে। হাত-পা চলা, ক্ষুধা লাগা, ব্যথায় কাতরানো; এমনকি দুঃখ বা আনন্দ অনুভব করার পেছনেও মস্তিষ্কের হাত রয়েছে। এক কথায় বলা যায়, আমাদের খুশি থাকার কলকাঠি নাড়ছে মস্তিষ্কই। 

এন্ড্রোফিন, ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন - এরকম কিছু হরমোন আছে, যা হ্যাপী হরমোন নামে পরিচিত। এসব হরমোন নিঃসরণের কারণে আমরা আনন্দ অনুভব করি। যখন কোনো কারণে হ্যাপী হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় তখন আমরা প্রাণবন্ত থাকি।

কিছু শারীরিক ধারাবাহিকতায় এই হরমোনগুলোর নিঃসরণ মাত্রা বাড়ানো  যায়।  নিজেকে হাসি-খুশি এবং প্রাণচ্ছল রাখতে প্রতিদিন কিছু কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

আমাদের মেজাজ এবং ভালো থাকার অনেকাংশ নির্ভর করে শরীরের হরমোনগুলোর উপর।  খুশি থাকা মানে কেবল কোনো আনন্দঘন অনুষ্ঠান উপভোগ করা নয়। মনে আনন্দ থাকলে প্রতিদিনের সাধারণ কাজগুলোও উৎফুল্ল হয়ে করা যায়। তাই প্রতিদিন এমন কাজগুলো করতে হবে যা বেশি করে হ্যাপী হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াবে।

১. কৃতজ্ঞতা: দিনটি সুন্দরভাবে শুরু করতে পারেন সকালে ঘুম থেকে উঠেই উপরওয়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আমাদের যা কিছু, তার কিছুই মূলত আমাদের নয়! স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। তাই আল্লাহর প্রতি কিছুটা সময় নিয়ে আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রতিদিন প্রকাশ করা উচিত, এতে দিনের শুরু থেকেই ইতিবাচক মেজাজ এবং প্রভাব বজায় রাখা সম্ভব।

 উৎফুল্ল মন / ছবি: নূর-এ-আলম

২. ব্যায়াম: প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করা শরীর এবং মেজাজ দুটো ভালো রাখার ক্ষেত্রেই কার্যকর। কায়িক পরিশ্রম করলে শরীরে এন্ড্রোফিনের  নিঃসরণ বাড়িয় দেয়।

৩. সূর্যের আলো: প্রকৃতির মধ্যে যেমন আছে পবিত্রতা, তেমন শান্তি। তাই প্রকৃতির স্পর্শ মনকে উৎফুল্ল করে। সকালের স্নিগ্ধ রোদের আলো অনেক আরামদায়ক। প্রাকৃতিক এই আলোরশ্মির নানান শারীরিক উপকার ঘটাতে হাত রয়েছে। তাই অন্তত ১৫ মিনিটের জন্য হলেও সকালে হাঁটতে বের হন। এতে কোমল রোদের ছোঁয়াও পাবেন, আবার ফ্রেশ অক্সিজেন সমৃদ্ধ মুক্ত বাতাসও পাবেন।

৪. ধ্যান:  সারাদিনের একগাদা কাজের হিসাব মাথার মধ্যে জমে থেকে দুশ্চিন্তা বাড়ায়। এতে হ্যাপী হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। তাই নিজেকে ভালো এবং হাসিখুশি রাখতে মনকে শান্ত করা প্রয়োজন। এর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ধ্যান বা মেডিটেশন। মেডিটেশনের মাধ্যমে গভীর শ্বাস গ্রহণ ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করার চর্চা করুন। এতে শরীরও সুস্থ থাকে, আবার হ্যাপী হরমোন লেভেলও বাড়ে।  

 উৎফুল্ল মন / ছবি: নূর-এ-আলম

৫. খাদ্যাভ্যাস: খাবারের উপর মূলত আমাদের শরীরের চাল-চলনের অনেকাংশ নির্ভর করে। গ্রহণ করা খাদ্য উপাদানের ভিত্তিতে শরীরের ক্রিয়াকলাপ প্রভাবিত হয়। তাই প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর এবং ফ্রেশ খাবার খাওয়া উচিত। খাদ্যতালিকায় ‍সুষম উপাদান থাকা নিশ্চিত এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে যেতে হয়। এছাড়া হ্যাপী হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে ওমেগা-৩ উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্যগুলো। তেলযুক্ত মাছ, শস্যজাত খাবার, আখরোট ইত্যাদি খাবার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় মেজাজ ভালো ও মস্তিষ্কে শান্তি বজায় থাকে। 

৬. সামাজিক সম্পর্ক: পরিবার-পরিজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন। এতে মন ভালো থাকবে। বাড়তি চিন্তা থাকবে নাা আর আনন্দে থাকতে পারবেন। সকলের প্রতি দয়াবান হউন। কারো প্রতি রাগ পুষে রাখবেন না।

৭. গান: গান শোনা, মন ভালো করার এবং হ্যাপী হরমোন নিঃসরণের খুব সহজ একটি পদ্ধতি। পছন্দের গান শুনলে তা মেজাজে বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিজের পছন্দের গানগুলো বাছাই করে একটি প্লে-লিস্ট তৈরি করতে পারেন।   

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

;

ঈদে বেশি মাংস খেয়ে পেটের যত গণ্ডগোল!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ঈদের মাংস খাওয়ার আধিক্যে পেট ব্যথা / ছবি: সংগৃহীত

ঈদের মাংস খাওয়ার আধিক্যে পেট ব্যথা / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুরবানির ঈদে গরু-ছাগল সহ নানারকম মাংস রান্না হয়। ঘরে ঘরে ঈদ আর ঈদের পরবর্তী বেশ কয়েকদিন এইরকম ভরপুর রান্না-বান্না হয়। এমনকি বেশ কয়েকদিন ধরে চলে আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে দাওয়াত। মোটামুটি বেশ কয়েকদিন তাই প্রায় প্রতিদিনই গরু, ভেড়া, ছাগলের মাংস বা রেডমিট খাওয়া হয়।

এই রেডমিট বা লাল মাংস বেশি পরিমাণে খাওয়ায় কারো ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং বদহজম অবধি হতে পারে। ঈদের মৌসুমে অতিরিক্ত মাংস খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে, জেনে নিন সেসব-

ফুড ইনটলারেন্স/অস্বস্তি: অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার পরে পেটে ব্যথা ও অস্বস্তি হতে পারে। এর লক্ষণগুলো হতে পারে- পেট ফুলে যাওয়া, থেকে থেকে ব্যথা হওয়া, বমি বমি ভাব, অম্বল, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা এছাড়া খিটখিটে বা নার্ভাস বোধ করাও হতে পারে।

প্রতিবার রেডমিট খাওয়ার সময় বা পরে যদি বমি বমি ভাব বা অন্য হজমের লক্ষণ দেখা গেলে তা ফুড ইনটলারেন্স বা অস্বস্তির লক্ষণ। এই সমস্যার কোনো সরাসরি প্রতিকার নেই। তাই এইরকম সমস্যা খাওয়া এড়াতে বেশি পরিমাণে মাংস খাওয়া এড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। পেটের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে খাদ্যতালিকায় শাক-সবজি রাখুন। এছাড়া সমস্যা গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অ্যালার্জি: রেডমিট একটি অত্যন্ত অ্যালার্জি জনিত খাবার। অনেকেরই এইরকম রেডমিট খেলে অ্যালার্জি দেখা যায়। যদিও এই ধরণের খাবারের অ্যালার্জি খুব স্বাভাবিক নয়। এক্ষেত্রে বমির সাথে ডায়রিয়া, কাশি-শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরার লক্ষণও দেখা যেতে পারে। রেডমিটে যদি অ্যালার্জি থাকে তবে তা একেবারেই এড়িয়ে চলা ভালো। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে মুরগী বা টার্কি খেতে পারেন। তাছাড়া টফু, মটরশুটি এবং ডিমের মতো খাবার প্রোটিনের উৎস হিসেবে বেছে নিন। অ্যালার্জির কারণে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে, যেমন জ্ঞান না থাকা এবং শ্বাসকষ্ট হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সহায়তা নিন।

বদহজম: কোরবানি ঈদের সময় সবচেয়ে বেশি এই সমস্যা দেখা যায়। বার বার অনেক বেশি মাংস খাওয়ার কারণে বদহজম হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর ফলে বমি, পেট ব্যথাসহ কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দিতে পারে।  অল্প কিছুদিন ধরে এরকম সমস্যা হলে বেশ কিছুদিন তরল খাবার খেলে অন্ত্র স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। সমাধান না হলে ডাইভার্টিকুলাইটিসের চিকিৎসা নিতে হতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন।

গ্যাস্ট্রাইটিস: এই সময় পেটে ব্যথার আরেকটি কারণ হতে পারে গ্যাস্ট্রাইটিস। পেটের আস্তরণে জ্বালাপোড়া, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ সেবনসহ আরও অনেক কারণেই এই সমস্যা হতে পারে।

ফুড পয়জনিং: অনেক সময় মাংস খাওয়ার পর ফুড পয়জনিং হতে পারে। খাবারে ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী বা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে এরকম হয়। সাধারণত গরুর মাংসে থাকা দু’টি ব্যাকটেরিয়া ই. কোলাই এবং সি. পারফ্রিনজেন এর প্রভাবে বেশি সমস্যা দেখা যায় ।

;

ঈদুল আজহায় গোশত সংরক্ষণ করবেন যেভাবে



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কাঁচা মাংস / ছবি: সংগৃহীত

কাঁচা মাংস / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ মানেই আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস। তার সাথে নতুন পোশাক-জুতা, আর নানা পদের খাওয়া-দাওয়া। কোরবানির ঈদে খাওয়া দাওয়ার পাট টা একটু বেশি ভারী থাকে। কারণ, ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা সুন্নত, যা প্রতিটি মুসলমানকেই করার জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে। তাই গরু, ভেড়া. ছাগলসহ নানান পশু কোরবানি করার প্রচলন রয়েছে। যে প্রাণীই জবাহ করা হোক না কেন, দেখা যায় প্রত্যেকের ঘরেই রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়ার পরও অনেক পরিমাণে মাংস রয়ে যায়। এই মাংসগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

পশুর মাংসে সাধারণত আর্দ্রতার পরিমাণ শতকরা ৭৫ ভাগের মতো থাকে। পানি হল অণুজীবের প্রধান প্রজনন স্থান। মাংসে পানি জমে থাকলে দ্রুত পচতে শুরু করে অণুজীবের ক্রিয়ার ফলেই। তাই মাংস সংরক্ষণ করতে এদের থেকে পানি অপসারণ করা দরকার।

মাংস বিভিন্ন ভাবে সংরক্ষণ করা যায়। যেমন চুলায় সেকে পানি শুকিয়ে এবং সেটি ফ্রিজে হিমায়িত করে রাখতে পারেন। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে এই কৌশল অবলম্বন করে নিরাপত্তার মান পূরণ করা হলে মাংস দীর্ঘদিনের জন্য মাংস সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

তাছাড়া রোদে শুকিয়েও অনেকে মাংস সংরক্ষণ করে। তবে এইসময় মাংসে মাছি, পোকামাকড় বা ধুলাবালি পরতে পারে। এসব অস্বাস্থ্যকর দিক থেকে মাংস সুরক্ষিত করে মাংস শুকাতে হবে। পাতলা একটা কাপড় দিয়ে মাংস পোকা ও ধূলা থেকে রক্ষা করা যায়। তিন বা চার ঘণ্টা করে কড়া রোদে শুকাতে দিন। এতে পুরো মাংসের উপরে প্রোটিনের আবরণ তৈরি হয়, আর্দ্রতা শুকিয়ে যায় এবং মাংস দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

কাঁচা গোশত

অ্যাসিড বা অম্লজাতীয় পদার্থে জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। তাই মাংস রোদে শুকানোর আগে লবণ, লেবুর রস (সাইট্রাস এসিড) বা ভিনেগার ছিটিয়ে দিন। সাইট্রাস এসিড বা লেবুর রস দিয়ে শুকানো মাংস আয়রনের ঘাটতি আছে যে ব্যক্তিদের, তাদের জন্য বেশি উপযুক্ত।

এখন যেহেতু বর্ষাকাল, যেকোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে বা আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে সূর্যের তাপ পর্যাপ্ত না পাওয়ায় বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। মাংসগুলো কেটে তার উপর লবণ ছড়িয়ে দিন এবং ওভেনে বা চুলায় কিছুক্ষণ গরম করুন।

যদিও দীর্ঘ সময়ের জন্য মাংস সংরক্ষণের জন্য ডিপফ্রিজে রাখা সবচেয়ে  নিরাপদ উপায়। কারণ বরফ অবস্থায় জীবাণুর বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায়। ডায়েটিশিয়ানদের মতে ফ্রিজের মাংস তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ এবং ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি ফ্রিজার ঘনঘন খোলা না হয় বা দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং-এর সমস্যা না হয়, তাহলে প্রায় ৬ মাস পরও সংরক্ষিত করা মাংস ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোরবানির মাংস খেয়ে শেষ করা উচিত।

মাংস ফ্রিজে রাখার ক্ষেত্রে ছোট প্লাস্টিকের পাত্র এবং নিউজপেপার ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। কারণ খবরের কাগজে ব্যবহৃত প্রিন্টের কালিতে সীসা থাকে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তার বিকল্প হিসেবে বাটার পেপারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: ফুড সাইন্স ইউনিভার্স

 

;