জামদানির যত্ন: যেভাবে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে প্রিয় শাড়িটি
ভালবাসার শাড়ির ভেতর জামদানির স্থানটা থাকে সবচেয়ে উপরে। জামদানির উপর আকর্ষণ ও টান স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে তার অপূর্ব কারুকাজ সমন্বিত নকশা ও বৈচিত্রের জন্য। মিহি সুতার কাজে ফুটে ওঠা এক একটি শাড়ি যেন হাজারো গল্পের জন্ম দেয়।
তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল, জামদানি শাড়ি খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। অন্যান্য ঘরানার শাড়ির চাইতে জামদানি শাড়ির বুননে পার্থক্য থাকায় বাড়তি খেয়াল ও যত্নের প্রয়োজন হয় জামদানির শাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে।
দেশীয় শাড়ির গৌরব তুলে ধরতে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে জামদানি শাড়ির যত্ন নিয়ে দারুণ কিছু টিপস জানিয়েছেন অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘গুটিপোকার’ কর্ণধার আফসানা সুমী।
১. যে কোনো দামি শাড়ির পরিচ্ছন্নতা বলতেই আমরা বুঝি ড্রাই ওয়াশ। কিন্তু জামদানি ড্রাই ওয়াশ করা যাবে না। জামদানি শাড়ি করতে হয় কাটা ওয়াশ। ড্রাই ওয়াশে শাড়ির রং জ্বলে যেতে পারে।
২. শাড়িতে অবশ্যই ফলস পাড় লাগাতে হবে। নাহলে জুতোর চাপে শখের জামদানি ছিঁড়ে যেতে পারে।
৩. জামদানি শাড়ি যাতে ফেঁসে না যায় সেজন্য অনেকে রোল করে রাখেন। বাসায় কিভাবে এমনভাবে রোল করে রাখা যায় যাতে শাড়িতে একটিও ভাঁজ দিতে না হয় সেটা একটি কৌশলের ব্যাপার। কারণ ভাঁজ মানেই সেই ভাঁজের অংশে ফেঁসে যাবে শাড়ি। এক্ষেত্রে সমাধান হতে পারে পুরাতন শাড়ি বা পাটি। জামদানিগুলো একসাথে পেঁচিয়ে ফেলতে হবে পুরোনো শাড়ি বা পাটিতে। পাটি যেভাবে রোল করে রাখা হয় সেভাবেই রাখতে হবে ঘরের নিরাপদ কোনো জায়গায়। কোলবালিশের কভারের মতো লম্বা একটা মাপমত কভার করে নেওয়া যেতে পারে শেষ ধাপের সুরক্ষা হিসেবে।
৪. জামদানি বেশীদিন তুলে রাখলেই তার আয়ু কমবে, বরং মাঝে মাঝেই পরতে হবে।
৫. শাড়ি পরার পর সাথে সাথেই ভাঁজ করে বা রোল করে না রেখে হালকা রোদে দিতে হবে, তবে কড়া রোদে জামদানি দেওয়া যাবে না। রোদ না পেলে অন্তত বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে।
৬. দুর্ঘটনাবশত জামদানি শাড়িতে কোন দাগ লেগে গেলে ঘষে ঘষে তোলা যাবে না, এতে আরও বাজে অবস্থা হবে। সেক্ষেত্রে ড্রাই ওয়াশই ভরসা।
৭. শাড়ি যদি অনেক দিন না পরা হয় তবে নরম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রেও সমাধান কাটা ওয়াশ। তাতিঁরা অনেক দক্ষতার সাথে কাটা ওয়াশ করে থাকেন। বলা হয় জামদানিকে পূনর্জন্ম দেয় কাটা ওয়াশ। তাঁতিদের বিশেষ এই ওয়াশের পর মনে হবে জামদানি শাড়িটি একেবারে নতুন হয়ে গিয়েছে।
৮. অনেক লন্ড্রি কাটা ওয়াশ করায়, তবে তাঁতিদের কাছ থেকে সরাসরি করাতে পারলেই সবচেয়ে ভালো সমাধান পাওয়া যাবে।
৯. জামদানি শাড়ির ব্লাউজ শাড়ির চেয়েও স্পর্শকাতর হতে পারে, যেহেতু একই কাপড় কেটে ব্লাউজ করা হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সঠিক উপায় হল, হলো অন্য কাপড় দিয়ে ব্লাউজ তৈরি করে ব্লাউজ পিসের পাড়টা লেসের মতো হাতায় লাগিয়ে নেওয়া।