হাতে আঁকা শাড়ি, সঠিক জেনে যত্নে রাখি
শাড়ির আবেদন কখনোই কমার নয়। যুগ যুগ ধরেই শাড়ির প্রতি ভালোবাসা ও আকর্ষণের ধারা বজায় আছে। শাড়ির তন্তু, বুনন ও শাড়ির গঠনে সময়ের হাত ধরে বৈচিত্রতা এসেছে, এসেছে ভিন্নতা ও স্বকীয়তা। শাড়িতে কারচুপির কাজ, ব্লক-বাটিকের কাজ, এম্ব্রয়ডারির কাজ জমকালো ও নতুনত্ব এনে দেয় সহজেই। সে মাত্রায় আরও এক ধাপ উচ্চতা এনে দিয়েছে হাতে আঁকা শিল্প। বিভিন্ন তন্তুর উপর হরেক ঘরানার রঙ ব্যবহারে হাতে আঁকা শাড়ি এ সময়ে কদর পাচ্ছে সকল স্তরের ক্রেতার কাছেই।
সাধারণ শাড়ির চাইতে হাতে আঁকা শাড়ি শুধু বৈশিষ্ঠ্যে আলাদা নয়, তার যত্নেও প্রয়োজন হয় আলাদা ধরণ। নতুবা প্রিয় শাড়িটি নষ্ট হয়ে যাবে বেখেয়ালে। কীভাবে নিতে হবে হাতে আঁকা শাড়ির যত্ন? কী করা যাবে এবং কী করা থেকে বিরত থাকতে হবে হাতে আঁকা শাড়ি ব্যবহারে, সেটা জানতে বার্তা২৪ কথা বলেছে অনলাইন প্রতিষ্ঠান গুটিপোকার কর্ণধার আফসানা সুমী’র সঙ্গে। হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাকের মাধ্যমেই যিনি পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে।
সুমী বলেন, ‘শিল্পীর ক্যানভাস যখন শাড়ি তখন তার দায়িত্বটাও অনেক বেশি। এত বড় ক্যানভাসে তুলির হাজারো আঁচড়ে তিনি ফুটিয়ে তোলেন গানের পাখি, সুরভী ফুল। সেই রঙে রঙে রঙিন শাড়িটির কি ভিন্ন কোনো যত্নের দরকার, অন্যান্য শাড়ির তুলনায়? হ্যাঁ, খুবই দরকার। হাতে আঁকা শাড়িটি সুরক্ষিত রাখতে কী করা যাবে ও যাবে না সেটা জানা থাকলেই ভালোভাবে রাখা সম্ভব প্রিয় শাড়িটি।’
হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাকের ক্ষেত্রে যা করা যাবে না
১. হাতে আঁকা কাপড় কখনোই গরম পানিতে ধোয়া যাবে না।
২. কড়া ডিটারজেন্ট একেবারেই ব্যবহার করা যাবে না।
৩. হাতে আঁকা পোশাক সরাসরি আয়রন করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
৪. কড়া রোদে দেওয়া যাবে না হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক। রোদের প্রখর আলো রঙ নষ্ট করে দেয়।
৫. হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক খুব বেশি আঁটসাঁট করে ভাঁজ করা যাবে না। হালকা ফুলকোভাবে ভাঁজ করতে হবে।
৬. অনেক কাপড়ের ভেতর মিশিয়ে চেপেচুপে রাখা যাবে না মোটেও। চেষ্টা করতে হবে হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাক ভিন্ন ড্রয়ার বা কম্পার্টমেন্টে রাখার।
হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাকের ক্ষেত্রে যা করা যাবে
১. হাতে আঁকা মসলিন, সিল্ক, এন্ডি, জয়শ্রী বা তসর এমনকি সুতি কাপড়ও ড্রাই ওয়াশ করলে সবচেয়ে ভালো হয়।
২. যদি হাতে আঁকা কাপড় সাধারণভাবে ধুতে হয়, তবে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৩. শ্যাম্পু বা মাইল্ড কোনো ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। এতে কাপড় বা রঙয়ের কোন ক্ষতি হবে না।
৪. হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক অবশ্যই উল্টো পিঠে আয়রন করতে হবে।
৫. ধোয়ার পর হাতে আঁকা কাপড় ছায়া ও শীতল স্থানে শুকাতে হবে।
৬. বাইরে থেকে এসে হাতে আঁকা শাড়ি বা পোশাক বদলে নিয়ে ফ্যানের বাতাসেই শুকিয়ে নিতে হবে।
৭. বড় বড় ভাঁজ করে শাড়ি গুছিয়ে হ্যাংগারে ঝুলিয়ে রাখলে বহুদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।
৮. নতুন হাতে আঁকা শাড়ি ও পোশাক কেনার পর উল্টো করে রোদে দিতে হবে অন্তত ২ দিন। এতে পোশাক ও শাড়ির রঙ পাকা হবে।
হাতে আঁকা শখের শাড়ি তৈরি করা যেমন কষ্টের কাজ, তেমনই বেশি তার মূল্যমান। দাম দিয়ে কেনা জিনিস যেন সামান্য অবহেলায় নষ্ট না হয়, চা বা আইসক্রীম খাওয়ার সময় শাড়িতে যেন পড়ে না যায়, জল-কাদা লেগে যেন দাগ না লেগে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যত্নে রাখুন, যুগ যুগ পরুন ভালোবাসার হাতে আকাঁ শাড়িটি।
আরও পড়ুন