অফিস খোলা-বন্ধ গণপরিবহন, তীব্র ভোগান্তি
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসদুই মাসের ছুটিতে দুবাই থেকে দেশে এসেছেন আরমান হোসেন। ইতোমধ্যে আড়াই মাস পার হয়েছে। আরমান হোসেনের কোম্পানি থেকে তাড়া দিচ্ছে দুবাইয়ে ফিরে যেতে। আরমান হোসেনও কাজে ফিরতে চান। করোনা পরিস্থিতি দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে কিছু বাড়তি ঝামেলা। এইসব ঝামেলার সমাধান করতে একদিন আগে কুমিল্লার বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। কিন্তু ঢাকায় এসে পড়েছেন বিপাকে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যেতে পারছে না কোথাও। কাজের প্রক্রিয়াও শেষ হচ্ছে না।
সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ধানমন্ডি-১৫ নম্বারে কথা হয় আরমান হোসেনের সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কাগজে সই আনার জন্য মন্ত্রণালয়সহ কয়েক জায়গা যেতে হবে। অনেকক্ষণ ধরে যাওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু কোথাও যেতে পারছি না। বাস বন্ধ, সিএনজিও নাই। মোটরসাইকেল সব রাস্তায় যেতে চায় না। গাড়ি বন্ধ থাকলে কী হবে, আমার তো কাজ করতে হবে। এখন অফিস খোলা আছে, দুইদিন পর যে লকডাউন দিবে তখনত অফিসও বন্ধ থাকবে। বলেই চোখেমুখে বিরক্তের ছাপ ভেসে উঠে।
করোনা সংক্রমণ রোধে ৩ দিন লকডাউনের প্রথম দিন আজ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (২৮ জুন) সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে খোলা আছে অফিস। আর এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন চাকরিজীবীরা।
সকাল থেকে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে অফিসগামীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণপরিবহন না চলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেককে। সকালের দিকে দুই একটি সিএনজি চলাচল করলেও বেলা গড়ানোর সাথে সাথে কমতে থাকে। রাইড শেয়ারিংয়ের কিছু বাইক থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খবই কম।
কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় মোশাররফের সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসলে বলার কিছু নেই। বিষয়টি সবাই বুঝছে। আপনিও বোঝেন আমিও বুঝি। গণপরিবহন বন্ধ করেছে, অফিস বন্ধ করা উচিত ছিল কিন্তু করেনি। আমাদের তো অফিসে যেতে হবে। এখন কষ্ট করে যেতে হবে।
লকডাউন ঘীরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যদের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। পথচারীদের মাস্ক পরতে বাধ্য করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মানুষের জটলাও নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে তাদের। কয়েকজন রাইড শেয়ারিংয়ের সদস্য জানান বিভিন্ন মোড়ে আইনশৃঙ্খলার সদস্য কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বার বার তাদের জিজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে। জরিমানাও গুনতে হয়েছে।
সকাল থেকেই রাজধানীর মোড়ে মোড়ে গণপরিবহনের অপেক্ষায় থাকা মানুষের জটলা দেখা গেছে। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই রিকশা ও রাইড শেয়ারিংয়ের বাইকে করে গন্তব্য পৌঁছেন। যাদের সামান্য নেই তাদের অনেকে পায়ে হেঁটে পৌঁছেছেন গন্তব্যে। চলাচলের অনুমতি থাকলেও এদিন সড়কে রিকশার উপস্থিতি ছিল অনেক কম।