ময়মনসিংহ সদরে লড়বেন দুই হেভিওয়েট রওশন-জাহিদ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহ-৪ (সদর) থেকে পুরোদমে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। ডা. জাহিদ বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে খুবই পরিচিত এক মুখ।

এ দুই হেভিওয়েটের মনোনয়নপত্র জমার মধ্য দিয়ে পুরো মাত্রায় নির্বাচনী উন্মাদনা শুরু হয়েছে। অবশ্য ময়মনসিংহ সদর আসনটিতে ডা. জাহিদ হোসেন ছাড়াও দক্ষিণ জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ ও বিএনপির সংস্কারপন্থি সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার খান দুলু এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বেগম রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের পাশাপাশি ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকেও নির্বাচন করবেন। বুধবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে রওশন এরশাদের পক্ষে এ দুইটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের নেতৃত্বে এ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। এসময় সিটি কর্পোরেশনের প্রথম প্রশাসক মো. ইকরামুল হক টিটু ও মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

ফখরুল ইমাম বলেন, বেগম রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ ও ময়মনসিংহ-৭ এ দুটি আসনে নির্বাচন করবেন। এটি জোটের সিদ্ধান্ত। ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনটি আগেও আমাদের ছিলো। এ আসনে আওয়ামী লীগের যে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে আমি আশাবাদী তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিবেন।

এর আগে, দুপুরে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দসহ অন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান ডা. জাহিদ হোসেন। সদর আসনে তিনি ছাড়াও আরও দুজন মনোনয়ন পেয়েছেন। হেভিওয়েট হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ডা. জাহিদ হোসেনই দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন সবাই।

তবে বিচারিক আদালতে দুই বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না হাইকার্টের এমন আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকার বিষয়ে ডা. জাহিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আজ আমি আপিল করেছিলাম। কিন্তু বিচারক নো অর্ডার লিখেছেন। আমরা আদেশ পেলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আইনের মধ্যেই নির্বাচন করার সুযোগ পাবো।

   

এমপি আনারের হাড়-মাংস আলাদা করে মসলায় মিশিয়ে ফেলা হয়: হারুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনারকে কলকাতায় হত্যার পর মরদেহ গুম করতে খণ্ড খণ্ড করা হয়। হাড় মাংস আলাদা করে মসলায় মিশিয়ে ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া হয়। মরদেহের টুকরাগুলো কোথায় ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেলা ৩টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।

ডিবি প্রধান বলেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পরিকল্পনা হয় দুই থেকে তিন মাস আগে। তারা পরিকল্পনা করেছিল ঢাকায় হত্যা করবে। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশের নজরদারি ও ঢাকায় হত্যাকাণ্ডের পর হত্যার সব ক্লু পুলিশ বের করেছে বলেই হত্যাকারীরা কলকাতায় এমপিকে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামানের বাসা একটি গুলশানে বাসা আরেকটি বসুন্ধরায় বাসা। এই দুই বাসাতেই অনেকদিন ধরে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এই বাসার মালিক শাহীন নিজে। বাসায় মিনি মদের বার রয়েছে। আনারকে হত্যার নেপথ্যে রাজনীতি বা অর্থনৈতিক যে কারণেই থাকুক না কেন বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি হত্যাকারীরা। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা কলকাতায় গত ২৫ এপ্রিল একটি বাসা ভাড়া নেয়। তারা ৩০ এপ্রিল ওই বাসায় ওঠে। যিনি হত্যার পরিকল্পনা করেছেন তিনি ও আরেকজনসহ মোট তিনজন বিমানযোগে কলকাতার ভাড়া বাসায় ওঠে।

তারা দুই মাস ধরে খেয়াল রাখছে কখন আনারকে কলকাতায় আনা যাবে। গত ১২ মে আনার বন্ধু গোপালের বাসায় যায়। সেখানে আরও দুজনকে হায়ার করা হয়। তারা ওই বাসায় আসা যাওয়া করবে।

তারা হলেন, জিহাদ বা জাহিদ ও সিয়াম। মাস্টারমাইন্ড গাড়ি ঠিক করে। কাকে কত টাকা দিতে হবে। কারা কারা হত্যায় থাকবে, কার দায়িত্ব কি হবে। আমার কিছু কাজ আছে বলে ৫/৬ জন রেখে ১০ মে বাংলাদেশে চলে আসেন।

;

সাভারে মাদকসহ আটক ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
সাভারে মাদকসহ আটক ২

সাভারে মাদকসহ আটক ২

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা জেলার সাভারে মাদকসহ দু’জনকে আটক করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছে থেকে পাঁচশত পিচ ইয়াবা ও বিশ গ্রাম হিরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা গোয়েন্দা উত্তর পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব।

এর আগে বুধবার ( ২২ মে) সন্ধ্যায় সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করেন।

আটককৃতরা হলেন, সাভারের গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫২), মানিকগজ্ঞ জেলার মৃত তারা মোল্লার ছেলে মো. কাউছার মোল্লা (২৮)

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সাভার থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। দু’জনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

;

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২৫ ভাগের বেশি বনায়ন সৃষ্টি করবে: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ও ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় ২৫ শতাংশের বেশি বনায়ন সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবন প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত 'বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও চারা বিতরণ কার্যক্রম' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২৫ শতাংশ বনায়ন সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা সবার আগে অর্জন করবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বনায়ন ১০ ভাগের নিচে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্তমানে তা ১৭ ভাগে উপনীত হয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তিনি আমাদেরকে ১৭ ভাগ থেকে বনায়ন ২৫ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, আমাদের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ও গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনই প্রথম সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আমরা ২৫ ভাগের ঊর্ধ্বে বনায়ন সৃষ্টি করতে পারব।’

এ সময় মেয়র মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে ওসমানী উদ্যান ও পান্থকুঞ্জ উদ্যানে এবং আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল, শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও খালুনগর খালের দুই পাশে বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সেখানে বনায়ন করবেন। গাছ লাগাবেন। আমরা ঢাকা শহরকে সবুজে সবুজে ছেয়ে ফেলবো। আমরা এই নগরীকে একটি সুন্দর, সবুজ ও শ্যামল মহানগরীতে রূপান্তরিত করব।’

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করায় দক্ষিণ ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘স্বৈরাচারী খুনি জিয়াউর রহমান ছাত্র সমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। সেই ছাত্র সমাজের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলম ও খাতা তুলে দিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে ঢাদসিক মেয়র মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক এবং খিলগাঁও মডেল কলেজ ছাত্রলীগ ইউনিটের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ লক্ষ বৃক্ষরোপণ করবে বলে ঘোষণা দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে ৫ শতাধিক নিম, কৃষ্ণচূড়া, অর্জুন, পাতাবাহার ইত্যাদি গাছের চারা বিতরণ করে।

;

৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বগুড়া
৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 

৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 

  • Font increase
  • Font Decrease

৪০ বছর আগে কাজের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়েন নেপালী নাগরিক বীর কা বাহাদুর রায়। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের একটি চাতালে আশ্রয় মেলে তার। ৪০ বছরের বেশি সময় তিনি সেখানে থেকে কখনো চাতাল শ্রমিক, কখনো হোটেল শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এখন বয়স এতটাই বেড়েছে যে সব কাজ আর ঠিক মতো করতে পারেন না। ৭০ বছরের বৃদ্ধ বীর কা বাহাদুর অন্যের করুণায় দিন কাটান। এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয় স্থানীয় প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) নেপাল দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাবান্ধা সীমান্ত হয়ে নিজ দেশে ফিরে যান বীর কা বাহাদুর রায়।

দীর্ঘদিন দুপচাঁচিয়ায় অবস্থান করা বীর কা বাহাদুর যখন এলাকা ছাড়েন সেসময় এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একদিকে তাকে বিদায় দেওয়ার বেদনা, অন্যদিকে স্বজনদের কাছে তিনি ফিরতে পারছেন সেই আনন্দের মিশ্রন দেখা দেয় এলাকাবাসীর মধ্যে। এদিকে দীর্ঘদিন পর নিজ দেশে ফিরতে গিয়ে নিজেরও মন খারাপ বীর কা বাহাদুরের। তিনি আবার ফিরে আসবেন বলে জানান স্থানীয়দেরকে।

শুধু যে দেশেই ফিরলেন বীর কা বাহাদুর তা নয়, সাথে যেমন নিয়ে গেলেন এলাকাবাসীর ভালোবাসা; তেমনি যে চাতালে তিনি আশ্রয় নিয়ে ছিলেন সেই চাতাল মালিক অলোক কুমার বসাক ও পুলক কুমার বসাক এবং তাকে দেশে ফেরানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণকারী স্থানীয় ফার্মেসী ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান খান ফরেন এই তিনজন তার হাতে তুলে দেন নগদ ৭৫ হাজার টাকা। 

গত বুধবার সন্ধ্যায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গিয়ে বীর কা বাহাদুরকে দেশে ফেরানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন নেপাল দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি উজানা বামজান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন নেপাল দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ললিতা শিলওয়াল ও একই দূতাবাসের অ্যাম্বাসিডরের সেক্রেটারি রিয়া ছৈত্রী। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ছিলেন দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি ও দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ৯ টার দিকে বগুড়া সার্কিট হাউস থেকে বীর কা বাহাদুরকে নিয়ে দূতাবাস কর্মকর্তাগণ বাংলাবান্ধা সীমান্তের উদ্দেশে রওনা করেন।

দুপচাঁচিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে নেপাল দূতাবাসের অ্যাম্বাসেডরের সেক্রেটারি রিয়া ছৈত্রী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বীর কা বাহাদুরের আটকে পড়ার খবর নজরে এলে উপজেলা প্রশাসন থেকে দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়। ওই খবরে যে এলাকার কথা বলা হচ্ছিলো তা পূর্ণাঙ্গ ছিল না। তারপরও নেপাল সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। ওই জায়গার নামের সঙ্গে মিল খুঁজে বের করা হয় বীর কা বাহাদুরের নিজ জন্মস্থান। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত বাংলাবান্ধার কাছে নেপালের হিলাম নামক এক জেলা আছে; সেই জেলায় গোরখা বাঙ্গানা নামে একটি বাজারের সন্ধান মেলে। এরপর সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে (ভাবী)। তিনি ছবি দেখে নিশ্চিত করেন এই বীর কা বাহাদুর-ই তার দেবর। বহুদিন আগে যিনি কাজের সন্ধানে বেরিয়ে আর ফেরেননি। এরই মাঝে তার বড়ভাইও মারা গেছেন। বাড়ির অন্য সদস্যদের বীর কা বাহাদুরের কথা তেমন মনে নেই। পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন পাওয়ার পর তাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তাকে ফিরিয়ে নিতে আসা নেপাল দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি উজানা বামজান বলেন, ‘বীর কা বাহাদুর রায় বাংলাদেশে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আছেন। এখন তিনি নেপালে ফেরার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। নেপাল সরকারের উদ্যোগে তাকে বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীমান্তে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে গ্রহণ করবেন। তাকে দেশে ফেরার জন্য সহায়তা করায় আমি দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেইসঙ্গে নেপাল দূতাবাসের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ করার কারণে দুপচাঁচিয়ার বাসিন্দা মেহেদী হাসান খান ফরেনের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ।’

দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি বলেন, ‘বীর কা বাহাদুরের সংবাদ জানার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেসময় তিনি নেপালে ফেরার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। এবিষয়ে তিনি আবেদন করলে তা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নেপাল দূতাবাস থেকে সেকেণ্ড সেক্রেটারিসহ একটি প্রতিনিধি দল বীর কা বাহাদুরকে নেওয়ার জন্য আসেন। তারা বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন।’

এদিকে দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে বীর কা বাহাদুর বলেন, ‘ওরা বললো আমি নেপালে গিয়ে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করে আবার ফিরে আসব। এখান থেকে যেতে ভালো লাগছে না। নেপালে তো আমার কিছুই নেই। আমি আবার কয়দিন পর এখানে চলে আসব।’

বীর কা বাহাদুরের দেশে ফেরার কথা শুনে এলাকার অনেকেই ছুটে যান তার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ করতে। এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। দীর্ঘদিন এলাকায় থেকে স্থানীয়দের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন বীর কা বাহাদুর। 

;