বই মেলায় বই পড়ার স্বাদ পাচ্ছেন 'দৃষ্টিজয়ী' পাঠকরা
‘এসো মিলি প্রাণের মেলায়’-
-
|
![ছবি: বার্তা ২৪.কম](https://imaginary.barta24.com/resize?width=1280&quality=75&type=webp&path=uploads/news/2024/Feb/08/1707400451721.jpg)
ছবি: বার্তা ২৪.কম
চলছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪। গল্প, উপন্যাস, কাব্য, সায়েন্স ফিকশন, শিশুতোষ বইসহ নানা রকম বই নিয়ে লেখকগণ বিভিন্ন প্রকাশনীর মাধ্যমে তাদের বই নিয়ে হাজির হচ্ছেন পাঠকদের জন্যে। তবে বই তো সকলের জন্যে পড়া সম্ভব নয়। পৃথিবীতে বহু মানুষের নেই দৃষ্টি শক্তি। চোখের আলো তাদের নেই বলে কি তারা বই পড়ার স্বাদ পাবে না? একুশ শতকের এই সময়ে এসে অবশ্যই রয়েছে তাদের দৃষ্টি জয় করে বই পড়ার ব্যবস্থা। তাদের জন্য রয়েছে ব্রেইল বই পড়ার ব্যবস্থা। একুশে বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বের হওয়ার গেটের পাশেই তাদের স্টল।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সরেজমিনে দেখা যায়, স্পর্শ ফাউন্ডেশন এর স্টলে দৃষ্টিজয়ী পাঠকগণ আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে একের পর এক পাতা উল্টিয়ে বই পড়ে যাচ্ছেন। বই পড়ার মাঝে যে আনন্দ সে আনন্দ তারা দৃষ্টি জয় করে উপভোগ করছেন।
'স্পর্শ ফাউন্ডেশন’ ও ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’ এর স্টলে বই পড়ছিলেন মহিনী আক্তার। তিনি বার্তা ২৪.কমকে জানান, প্রতিদিনই এখানে ব্রেইল বই পড়তে আসি, আমি একা না বিথী, স্মৃতিসহ আরো অনেকেই নিয়মিত এখানে বই পড়তে আসেন। আমরা এখানে অনেক ধরনের বই ই পড়ি। আমার কাছে অডিও বই এর চেয়ে ব্রেইল বইটাই বেশি পছন্দের। এইখানে আসল স্বাদ পাওয়া যায় বইয়ের।
'স্পর্শ ফাউন্ডেশন’ ও ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’ এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি নাজিয়া জাবীন বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও আমরা বইমেলায় দৃষ্টিজয়ীদের ব্রেইল বই পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছি। তারা আনন্দের সাথে বই পড়ছে। আমাদের স্পর্শ ফাউন্ডেশন ২০০৮ সাল থেকে কাজ করছে। এ বছর এর ১৫ বছর পূর্ণ হবে। ব্রেইল তো নতুন নয়, এখন এটি পুরনো জিনিস। ওরা এখন পড়ার জন্যে বই পাচ্ছে। ’
তিনি আরো জানান, এবার জাহানারা ইমামের 'একাত্তরের দিনগুলি' সহ ১৯ টি বই নতুন যোগ করা হয়েছে। এটা অনেক বড় একটা কাজ। তাছাড়াও স্পর্শ নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল। যেমন গণগ্রন্থাগারে আমাদের একটা ব্রেইল কর্নার করার ইচ্ছা ছিল। এটা আমরা ইতোমধ্যেই করেছি। সেখানে শিশুরা যখনই আসে, তখনই ব্রেইল বই পড়তে পারে। এ ছাড়া শিশু একাডেমিতেও আমরা একটা ব্রেইল কর্নার করেছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল-কলেজেও আমরা ব্রেইল কর্নার করে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত অসংখ্য ব্রেইল বই দৃষ্টিজয়ী পাঠকদের কাছে আমরা বিনামূল্যে তুলে দিতে পেরেছি।
অডিও বুক ব্রেইল পদ্ধতির বই পড়ার চাহিদা কমিয়ে দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ই বুক আসার ফলে অনেকে বলেছিল বই এর গুরুত্ব কমে যাবে। তা কিন্তু হয় নি। দেখুন বইয়ের মেলা হচ্ছে। তেমনি বই পড়ার মাঝে যে আনন্দ আছে সেটা ই বুক দিতে পারছে না। তবে ই বুক ও প্রয়োজনীয়, অনেকেরই উপকার হচ্ছে। আর আমরা সামনের সপ্তাহের মধ্যেই আরো বই এনে তালিকা করে ফেলব আমাদের নতুন বইগুলোর।