নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে কালেমা পড়েন শাহেদ, এরপর সব শেষ



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ক্লান্তির ছাপ নিয়ে বসে আছেন সাজ্জাদ মিয়া/ছবি: বার্তা২৪.কম

ক্লান্তির ছাপ নিয়ে বসে আছেন সাজ্জাদ মিয়া/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতরের এক কোণায় চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছেন সাজ্জাদ মিয়া। ৩০ বছরের তরুণের মুখজুড়ে ক্লান্তির ছাপ। চোখ চিকচিক করছে স্বজন হারানোর কষ্টে। রিয়াজউদ্দিন বাজারের মোহাম্মদী প্লাজায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মধ্যরাতে ধরা আগুন এই ব্যবসায়ী যে হারিয়েছেন তারই দোকানের একনিষ্ঠ কর্মী ১৮ বছরের মোহাম্মদ শাহেদকে।

বেঁচে থাকার জন্য মুঠোফোনে শাহেদের আকুল করা অনুরোধ, দমবদ্ধ হয়ে পড়া এবং শেষে কোনো উপায় না দেখে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার আগে কালেমা পড়ে বিদায় নেওয়া-সেই সব ভয়ংকর মুহূর্ত এখন কানে বাজছে সাজ্জাদ মিয়ার। মনটা তাই বিষন্ন হয়ে আছে-শাহেদকে বাঁচাতে না পারার দুঃখে-ব্যথায়।

সাজ্জাদ মিয়া তুলে ধরেন শাহেদের সঙ্গে শেষবার কি কথা হয়েছিল তার পুরোটা। বলেন, ‘শুক্রবার মার্কেটে বন্ধ থাকায় আমি প্রতিবারের মতো বৃহস্পতিবার রাতে সাতকানিয়ার গ্রামের বাড়িতে যাই। সেখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত সাড়ে ১২টা বেজে যায়। শরীর ক্লান্ত থাকায়-দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়ি। এরই মধ্যে রাত পৌনে ২টায় শাহেদের ফোন পেয়ে জেগে ওঠি। ফোন দিয়েই সে ভয়ার্ত কণ্ঠে জানাতে থাকে-‘‘পাশের মোহাম্মদী মার্কেটে ধরা আগুন আমাদের রিজওয়ান কমপ্লেক্সেও ছড়িয়ে পড়েছে। আমি আমার বাসায় আটকা পড়েছি। আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।’’ এরপর আমি আশপাশের সবাইকে ফোন দিয়ে শাহেদকে উদ্ধারের চেষ্টা করতে বলি। পরে আমিও মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে শহরের উদ্দেশে রওনা দিই।’

শাহেদকে বের হয়ে আসার জন্য বারবার বলেছেন সাজ্জাদ মিয়া। কিন্তু একদিকে ধোয়ার কুণ্ডুলী, অন্যদিকে অন্ধকার-শাহেদ চেষ্টা করেও তাই বের হতে পারেননি বাসা থেকে। এক পর্যায়ে বাসার টয়লেটে ঢুকে ধোঁয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানেও ধোঁয়া তাকে ঘিরে ধরে। পরে দমবন্ধ হয়ে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।

আগুনে পুড়ে যায় রিয়াজউদ্দিন বাজারের মোহাম্মদী প্লাজা, ছবি/বার্তা২৪.কম

সাজ্জাদ মিয়া বলেন, ‘আমি শাহেদকে বারবার বলতে থাকি মুখে ভেজা কাপড় বেঁধে মার্কেটের ছয় তলায় ওঠে যেতে। সে আমাকে জানায়-চারদিকে অন্ধকার আর ধোঁয়ার কারণে সে বের হতে পারছে না। আমি বলতে থাকি তোর তো গলিপথ তো চেনা-যেকোনোভাবেই দৌড় দে। কিন্তু সে চেষ্টা করেও পারেনি। এক পর্যায়ে রাত ১টা ৫৮ মিনিটে আমার সঙ্গে শাহেদের সর্বশেষ কথা হয়। তখন সে বলে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপর সে কালেমা পড়তে পড়তে নিথর হয়ে যায়। পরে বারবার ফোন দিলেও তাই আর ফোন ধরতে পারেনি।’

রাত পৌনে তিনটার দিকে শহরে এসে পৌঁছান সাজ্জাদ মিয়া। এসেই শাহেদকে উদ্ধার করতে একাই উঠে পড়েন রিয়াজউদ্দিন বাজারের রিজওয়ান প্লাজার সেই পাঁচ তলার বাসায়। অন্ধকার আর ধোঁয়ার মধ্যেই শাহেদকে উদ্ধার করতে ঢুকে পড়েন বাসায়। পরে টয়লেটে গিয়ে দেখেন-সেখানে নিথর হয়ে পড়ে আছেন শাহেদ।

মোহাম্মদী প্লাজায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার চেষ্টা, ছবি/বার্তা২৪.কম

সাজ্জাদা মিয়া বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়েছি। কিন্তু সড়ক সরু হওয়ায় কথা জানিয়ে তারা জানান প্রবেশ করতে পারছেন না। এ কারণে তারা দ্রুত মার্কেটের উপরও উঠতে পারেননি। পরে আমি অন্যদের খবর দিলে পাশের ভবনের কয়েকজন রিজওয়ান কমপ্লেক্সের আটতলার ছাদ দিয়ে ঢুকে নিচে নেমে শাহেদকে উদ্ধার করেন। পরে আমরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন-শাহেদ আর বেঁচে নেই।’

রিজওয়ান কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় সাজ্জাদ মিয়ার মোবাইল ও মোবাইল যন্ত্রাংশের দোকান রয়েছে। আজওয়ার টেলিকম নামের সেই দোকানে দেড় বছর ধরে চাকরি করতেন শাহেদ। রিয়াজউদ্দিন বাজারের বেশিরভাগ মার্কেট ৭-৮ তলা হলেও দোকান এক থেকে তিন তলা পর্যন্ত। এর ওপরের ঘরগুলোতে দোকানের মালিক-কর্মচারীরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কিছু কিছু ঘর ব্যবহার হতো গোডাউন হিসেবে। সে অনুযায়ী রিজওয়ান প্লাজার পাঁচতলায় বাসা নিয়ে ভাড়া থাকতেন সাজ্জাদ মিয়া ও শাহেদ। প্রতিদিন দোকান বন্ধের পর এখানেই থাকতেন তারা। তবে শুক্রবার মার্কেট বন্ধ থাকায় তারা প্রায় সময়েই বৃহস্পতিবার রাতেই সাতকানিয়ার গ্রামের বাড়িতে চলে যেতেন। এবার দোকানের মালিক সাজ্জাদ মিয়া বাড়িতে গেলেও যাননি শাহেদ। তবে আজই হয়তো বাড়ি পৌঁছবেন শাহেদ! তবে বাড়ি ফেরার সেই হাসিমুখে নয়, বাড়ি যাবে তার কফিনবন্দী দেহ।

জুন মাসে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ৮ জনের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এক শিশু।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এক শিশু।

  • Font increase
  • Font Decrease

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জুন মাসে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ৮ জনের।

রোববার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৪ জন। এ নিয়ে চলতি মাসে মোট ভর্তি হয়েছেন ৭৯৮ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু হওয়ার জন্য এখন সিজন লাগে না, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এর প্রোকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।

;

বগুড়ায় বগি লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ার গাবতলীতে একটি ট্রেনের তিনটি বগী লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা, পঞ্চগড় ও লালমনিহাটের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

রোববার (৩০ জুন) রাত পৌনে ৯ টার দিকে গাবতলী রেল স্টেশনের প্রবেশ মুখে ট্রেনের বগী লাইনচ্যুত হয়।

বগুড়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সান্তাহার থেকে বোনারপাড়াগামী কলেজ ট্রেন নামের লোকাল ট্রেনটি বগুড়া রেল স্টেশন থেকে বোনারপাড়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় রোববার রাত সোয়া ৮ টায়। ট্রেনটি গাবতলী স্টেশনে প্রবেশ করার আগেই পিছনের তিনটি বগী লাইনচ্যুত হয়। গাবতলী রেল স্টেশনে ট্রেনটির যাত্রা বিরতি ছিল, একারণে গতি কম থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও জানান, ট্রেন লাইন চ্যুত হওয়ার কারণে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস, সান্তাহারগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ও সান্তাহারগামী লোকাল ট্রেন গুলো বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে আছে। লাইনচ্যুত হওয়া বগী তিনটি উদ্ধারের পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।

;

নওগাঁয় বজ্রপাতে নিহত ১, আহত ২



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর রাণীনগরে বজ্রপাতে আনোয়ার (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দু’জন গুরুত্বর আহত হয়েছেন।

রোববার (৩০ জুন) বিকালের দিকে উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত আনোয়ার বেলঘড়িয়া গ্রামের আনছারের ছেলে। আহত দু’জন একই গ্রামের রাজ্জাক (৩৭) ও ছানাউল্লা (৫৫)। আহত দু’জনকে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবু ওবায়েদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন- রোববার বিকালে আনোয়ার, রাজ্জাক ও ছানাউল্লাসহ বেশ কয়েকজন মিলে আনোয়ারের বাড়ির পাশে জায়গা-জমি মাপার করছিল। জমি মাপা শেষে বিকাল ৪টার দিকে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এমতাবস্থায় আনোয়ার, রাজ্জাক ও ছানাউল্লা তিনজন একসঙ্গে জায়গার পাশে একটি ঘরের নিচে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এ সময় বজ্রপাত হলে আনোয়ার, রাজ্জাক ও ছানাউল্লা তিনজন গুরুত্বর আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন। আর আহত রাজ্জাক ও ছানাউল্লাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে হস্তান্তর করেন।

;

গঙ্গাচড়ায় মিষ্টির দোকানে অভিযান, ৩ জনের কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা মিষ্টি।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা মিষ্টি।

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মিষ্টির দোকানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় দোকানের মালিকসহ তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রোববার (৩০ জুন) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্নার নেতৃত্বে উপজেলা সদরের অনামিকা সুইটসের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদরে অনামিকা সুইটসের কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী নীলফামারীর জলঢাকার নেক বকতো গ্রামের জাকিয়ার রহমানের ছেলে আইনুল মিয়াকে (৩৭) ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং কারখানার কর্মচারী নীলফামারীর জলঢাকার দিলিপ চন্দ্রের ছেলে দিবাস চন্দ্র রায় (২০) ও গঙ্গাচড়া উপজেলার পানাপুকুর ঠাকুরাদহ গ্রামের বিপিনের ছেলে নয়ন চন্দ্রকে (২২) ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। সেই সাথে তৈরি করা মিষ্টি ধ্বংস করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, নিরাপদ খাদ্য বিক্রি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আসছি। এরই অংশ হিসেবে আজ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হলো। আইনুল মিয়াকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং দোকান কর্মচারী দিবাস চন্দ্র রায় ও নয়ন চন্দ্রকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

;