আসামি পলায়ন, বগুড়া কারাগারের জেলারকে বদলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম বগুড়া
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেল থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জেলার ফরিদুল ইসলাম রুবেলকে বদলি করা হয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলি করা হয়।

এ এস এম আনিসুল হক স্বাক্ষরিত পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপনে রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেলার সৈয়দ শাহ শরীফকে বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ফরিদুর রহমান রুবেলকে খুলনা জেলা কারাগারের অনুকূলে সংযুক্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শকের দপ্তর, রাজশাহী বিভাগে উপ-তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। বদলির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক কারণে বদলিকরত সংযুক্ত করা হলো।

এ ঘটনায় এর আগে ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান ও প্রধান কারারক্ষীসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।

সাময়িক বরখাস্তরা হলেন-ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, সর্বপ্রধান কারারক্ষী ফরিদ উদ্দিন, প্রধান দুই কারারক্ষী দুলাল মিয়া ও আব্দুল মতিন এবং কারারক্ষী আরিফুল ইসলাম।

এ ছাড়া বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে প্রধান কারারক্ষী আমিনুল ইসলাম, সহকারী প্রধান কারারক্ষী সাইদুর রহমান ও কারারক্ষী রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে।

এদিকে ঘটনার পর বগুড়া কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকি মনে করে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং জেএমবি সদস্যদের অন্য কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন কারাগারে তাদের সরানোর কাজ চলে।

এদের মধ্যে প্রথম ধাপে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন কয়েদিসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ আসামিকে রাজশাহী বিভাগীয় কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরা হলেন-নাঈম মন্ডল, শিবলু ফকির ও আবদুর রাজ্জাক।

এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই কয়েদি রবিউল ইসলাম ও আবদুর রহিমকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান বগুড়া কারাগার চত্বর পরিদর্শন করে তদন্ত কাজ শুরু করেন।

নোয়াখালীতে চলন্ত ট্রেনে হামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা

উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার (৩ জুলাই) রাত ৯টা ৭ মিনিটের দিকে সোনাইমুড়ী রেলস্টেশনের আউটার সিগন্যালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক এই হামলার কোনো কারণ জানাতে পারেনি।  

সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল ৩টা ১০মিনিটে আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ট্রেনটি সোনাইমুড়ীর আউটার সিগন্যানে পৌঁছালে চলন্ত ট্রেনের একদল দুর্বৃত্ত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক বগির দুটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। তবে জানালার পাশে কোনো যাত্রী না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আবু ছায়েদ জানান, চলন্ত ট্রেনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের বিষয়টি শুনেছি। খবর পেয়ে চৌমুহনী রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।  

;

বরিশালের হাসপাতালগুলোতে ৬ মাসে ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

  • Font increase
  • Font Decrease

বছরের প্রথম ৬ মাসেই ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫৩ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।

অপরদিকে বর্ষার আসার সাথে ডেঙ্গুও হানা দিতে শুরু করেছে বরিশাল অঞ্চলে। গত একমাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই ১০৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তির খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে সরকারি হাসপাতালেই প্রায় ৩৯ হাজার ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার কথা জানিয়ে ২১৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। মে মাসেও প্রায় দেড়শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল হাসপাতালগুলোতে।

অপরদিকে গত এপ্রিলে ১২ হাজার এবং মে মাসে সাড়ে ৮ হাজারের পরে জুন মাসেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে।

তবে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সাধারণ চিকিৎসকদের মতে, বরিশালে যে সংখ্যক ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় বা চিকিৎসা গ্রহণ করে, তার কয়েকগুন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাড়ীতে চিকিৎসা গ্রহণ করছে। ফলে এ অঞ্চলে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব না। তবে সব চিকিৎসকরাই পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়ে অবিলম্বে ডেঙ্গুর বিষয়ে বিশেষ নজরদারি সহ সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তা না হলে পরিস্থিতি গতবছরের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।

গত বছরও বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য আসেন। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে আসায় বছর শেষে সংখ্যাটা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

এদিকে ফেব্রয়ারীর শেষ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তারা এ ব্যাপারে নজরদারিসহ জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন।

অপরদিকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যনিটেশন ব্যবস্থার অনেক উন্নতির পরেও ডায়রিয়া প্রবন বরিশাল অঞ্চলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তবে এর পেছনে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার চেয়ে এখন পথ খাবারের দোকানের নিম্নমানের মুখরোচক খাবারকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। বরিশাল মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত ও অননুমোদিত পথ খাবারের দোকানের সংখ্যাই এখন কয়েক হাজার। এসব দোকানের নিম্নমানের এবং বাসি ও মুখরোচক খাবার নগরবাসীর পেটের পীড়াকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চললেও তা নিয়ে জনসচেতনতার অভাবের সাথে এসব খাবার বিক্রি বন্ধে নগর ভবনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ সব ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় কার্যক্রমের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পথ খাবারের দোকানের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ডেঙ্গুর একমাত্র বাহন এডিস মশা নিধনেও তিনি অবিলম্বে ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে মাঠে নামার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুসহ যেকোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

ডায়রিয়া চিকিৎসায় বরিশালে ১ হাজার ও ৫শ এম এল-এর  প্রায় ৩০ হাজার ব্যাগ আইভি স্যালাইন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক এ্যন্টিবায়োটিক ক্যাপসুল ও মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট সহ সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর মজুদের কথাও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

;

জিয়া-খালেদা-এরশাদ দেশের জন্য কিছুই আনতে পারেননি: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়কার ভারত সফরে দেশের জন্য কোন কিছুই আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলগুলোর কূটনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিচুক্তি, ছিটমহল বিনিময় ও তিন বিঘা করিডোর উন্মুক্ত হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও জিয়াউর রহমান কেউ এ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, করেননি।

বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। 

প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি কিছু লোক আমার ভারত সফর নিয়ে নানান কথা তুলেছে। ১৯৮১ সালে ছয় বছর পরে দেশে ফিরে আসার পর তখন এই একই কথা শুনতে হয়েছে (ভারতের কাছে দেশ বিক্রি)। এখন জানি না কেন সেই ভাঙা রেকর্ড বাজাতে শুরু করলো।

২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি বলে ভোট বেশি পেলেও ২০০১ সালে সিট বেশি পাইনি। এজন্য সরকার গঠন করতে পারলাম না। কারণ আমি গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি। তো বিক্রিটা করে কে দেশকে? করে গেছে তো খালেদা জিয়া, করেছে এরশাদ সাহেব। করেছে জিয়াউর রহমান। এরাই করে গেছে, আওয়ামী লীগ করে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজারটাকে ভারতীয় পণ্যের বাজারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ৪০টি পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশ অধিকার দিয়ে দেয়। ১৯৮০ সালে গ্যাস বিক্রির চুক্তিও করে আসে। ১৯৯২ সালে ভারতে গেলো খালেদা জিয়া। সেখানে যৌথ ইশতেহার ঘোষণার ১১ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ থেকে ব্যাপক হারে ভারতে অনুপ্রবেশ করার কথা স্বীকার করে নেয়। তারপরে পুশইন শুরু হয়েছিল। সেখানে আমাদের বহু মানুষ কষ্ট পেয়েছিল। এ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের জন্য আমরা সংসদে দাবিও করেছিলাম, কিন্তু কর্ণপাত করা হয়নি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়কার ভারত সফরে দেশের জন্য কোনও কিছুই আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন সরকারপ্রধান। দলগুলোর কূটনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিচুক্তি, ছিটমহল বিনিময় ও তিন বিঘা করিডোর উন্মুক্ত হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও জিয়াউর রহমান কেউ এ সকল সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, করেননি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। এতদিন তো গণতন্ত্র সেনানিবাসে বন্দি ছিল। সারা রাত হতো কারফিউ। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরেই গণতান্ত্রিক অধিকার মানুষের হাতে ফিরে এসেছে। জনগণ আমাদের ভোট দিচ্ছে, আমরা জয়ী হচ্ছি। অত্যাচার-নির্যাতনের কথা শুনি। আমাদের কোন নেতা-কর্মী বাকি ছিল নির্যাতনের হাত থেকে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে? তিনি বলেন, সবাই কথা বলছে, জনসভা করছে, মিছিল করছে, বক্তৃতা করছে। আমরা রেডিও, টেলিভিশন উন্মুক্ত করে দিয়েছি বেসরকারিভাবে। ইচ্ছামতো টকশো করছি। আমরা তো কারও মুখ চেপে ধরছি না, গলা চিপেও ধরছি না। যে যা পারছে, বলতে পারে বলুক। আমরা রাষ্ট্র চালাচ্ছি, জনগণের কল্যাণে কাজ করছি।

আমলাদের নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকে অনেক দোষ দেয়। কিন্তু আমি দেখেছি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সময়ে যারা একেবারে তরুণ (কর্মকর্তা), তাদের ভেতরে যে আন্তরিকতা, তাদের কাজ করার যে আগ্রহ, সেটা সত্যিই আমাকে আশার আলো দেখায়। সবাই মন-প্রাণ ঢেলে দিয়ে কাজ করেছে। এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এ ধরনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী তো দরকার। এ ধরনের অফিসার তো আমাদের দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার হারানোর কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। আমার একটাই লক্ষ্য, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের অন্ন, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেশকে উন্নত করে দেওয়া। সেটাই আমি করতে চাই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আমরা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো। এজন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই। আমাদের নবযাত্রায় আরো সাফল্য আসুক। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বাংলাদেশের মানুষ আরো উন্নত সুন্দর জীবন পাবে।

;

আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছায় না বন্যার্তদের কাছে



কল্লোল রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর দক্ষিণ বালাডোবা চরের বাসিন্দা ইবাত আলী। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যে তার থাকার ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছে। একটি টিলায় ৪ টি গরু রাখলেও গত ৩ দিনের ধারাবাহিক পানি বৃদ্ধির ফলে সেই টিলাতেও পানি উঠেছে। গত দুই দিন ধর গরুগুলো অন্যত্র নেয়ার জন্য নৌকা খুঁজছিলেন তিনি। ৩ দিন গরুগুলো হাটু পানিতে থেকে পায়ে পচন ধরা শুরু হয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে নৌকা ভাড়া নিয়ে গরুগুলো পাশের বাজারের উঁচু ভিটায় রাখতে যাওয়ার পথে তিনি বলছিলেন, ‘ভাবছিলাম আগের বারের মতো পানি আর বেশি উঠবেনা। কিন্তু ৩ দিন ধরে যা পানি বাড়তেছে তাতে বাড়িতে থাকা সম্ভব না। কখন পানি বাড়বে কখন কমবে সেই খবর আমরা পাইনা। মাঝে মধ্যে বাজার গেলে শুনি।’ 

শুধু ইবাত আলী একাই নন। কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবারগুলোর অধিকাংশ পরিবারগুলোর কাছেই পৌঁছায় না বন্যার আগাম সতর্কবার্তা। চরাঞ্চল গুলোতে নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হলেই যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নৌকার অভাবে অধিকাংশ পরিবারগুলোকে নির্ভর করতে হয় অন্যের নৌকার উপর। অথবা বেশি ভাড়া দিয়ে নৌকা নিয়ে জরুরী কাজ সারতে হয়। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন থাকায় মোবাইল ফোন গুলোতেও চার্জ করা সম্ভব হয়না। জরুরী কোনো প্রয়োজনেও যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় বন্যা কবলিত লোকদের। চরের লোকজনদের স্থানীয় বাজারে প্রতিদিন যাওয়ার প্রবণতাও কম। সপ্তাহে দু'দিন হাটে গিয়ে কেনাকাটা করে দ্রুত দিনের আলোতে বাড়ি ফেরার তাগিদ থাকে সবার। তাই বাজারে থাকা টিভিতে চোখ বুলানোর সুযোগও হয়না অনেকের।

সংকটের পাশাপাশি রয়েছে বন্যার আগাম সতর্কবার্তা না পাওয়ার আক্ষেপ

বুধবার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি বন্য কবলিত চর ঘুরে দেখে বার্তা ২৪.কম। বিভিন্ন সংকটের পাশাপাশি বন্যার আগাম সতর্কবার্তা না পাওয়ারও আক্ষেপ করেন অনেকে। তারা জানিয়েছেন, বন্যার কয়েকদিন আগে পানি বৃদ্ধির খবর জানলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হতো। বিশেষ করে গবাদিপশু গুলোকে নিরাপদে উঁঁচু স্থানে রেখে আসা যেত। 

বতুয়াতুলি মুসার চরের মন্টু মিয়া বলেন, ‘সরকারের ঘোষণা তো পাইনা। বাজারে যাই, চায়ের দোকানে টিভিতে যা খবর পাই তা নিয়ে থাকি। প্রতিদিন তো বাজারে যাই না। সপ্তাহে দুই দিন হাটে যাই। টিভিতে খবর দেখেছি পানি বাড়তেছে। কিন্তু এতটা বাড়বে জানা ছিল না। কিছু জিনিসপত্র ভেসে গেছে। মুরগি মারা গেছে কয়েকটা। আগে জানলে আত্মীয়র বাড়িতে রেখে আসতাম।’

বন্যাকালীন পরিস্থিতে জরুরী ভিত্তিতে লোকজনের কাছে খবর পৌঁছে দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন। বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, ‘আমাদের ইউপি সদস্যদের কাছে নিয়মিত আপডেট পৌঁছে দেয়া হয়। এছাড়াও, দূর্যোগ মোকাবেলা কমিটি, গ্রামভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে আমরা খবর পৌঁছে দেই। কি কারণে চরাঞ্চলের লোকদের কাছে তথ্য পৌঁছায় না আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ 

কুড়িগ্রামের প্রায় ৩২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যাকবলিত লোকদের কাছে সময়মতো পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা না পৌঁছানোর দায় কোনোভাবেই স্থানীয় প্রশাসন (ইউনিয়ন পর্যায়ের) এড়াতে পারেনা। এটি একটি সম্মিলিত কাজ। তথ্যের কোনো ঘাটতি নেই। আরও কিভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছে দেয়া যায়, সে ব্যাপারে আমরা কাজ করব।’ 

ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় চিলমারী ও নুনখাওয়া পয়েন্টে এই নদের পানি বিপৎসীমার যথাক্রমে ৩৪ সেন্টিমিটার ও ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে এর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে কয়েকটি উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি। এ অবস্থায় জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। 

জেলার দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা জানিয়েছে, কুড়িগ্রামের প্রায় ৩২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৪০৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬১ মেট্রিকটন চাল, ২হাজার ৯৬৭ প্যাকেট শুকনা খাবার ও নগদ ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জরুরী স্বাস্থসেবার জন্য নিয়োজিত রয়েছে ৮৩ টি মেডিকেল টিম। 

;